বাংলাদেশ থেকে হাজারো মানুষ একটু ভালো জীবন জীবিকার তাগিদে প্রতিনিয়ত পারি জমিয়ে থাকে বিদেশে। আর এই সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। তবে সম্প্রতি সময়ে বেড়েছে একটা উদ্বেগও। জানা গেছে উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে প্রবাসীদের মৃত্যু।
বেশিরভাগ কারণ দুর্ঘটনা এবং ব্রেন স্ট্রোক। কিন্তু সম্প্রতি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যাও উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। এ জন্য পরিবার থেকে দূরে থাকার কারণে সৃষ্ট মানসিক অবসাদকে দায়ী করছেন সংশ্লিষ্টরা। প্রবাসীদের মানব স্বাস্থ্য নিয়ে সরকারের ভাবা উচিত বলে মনে করেন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার।
সোমবার (১০ অক্টোবর) রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারের সম্মেলন কক্ষে প্রবাসী শ্রমিকদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স আমাদের অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রাখে। মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য এক ডলার ব্যয় করা হলে, পাঁচ ডলার উত্পাদনশীলতায় ফিরে আসবে। এমনকি জিডিপি বৃদ্ধির জন্যও আমাদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে ভাবতে হবে।
ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের প্রধান শরিফুল হাসান বলেন, প্রতি বছর গড়ে ১০ হাজার মানুষ আত্মহত্যা করে। বাংলাদেশে মানসিক স্বাস্থ্য সেবার প্রয়োজন হলে প্রথমেই প্রবাসী কর্মীদের প্রয়োজন। কারণ পরিবারের কাউকে বলতে পারলেও এই মানুষগুলোর বলার কেউ নেই।
তিনি আরও বলেন, এক কোটি মানুষ দেশের বাইরে থাকে, সারাদিন কাজ করে, ঘুমাতে গেলে একা লাগে। একা ঘুমের চাপে গত ১৪ বছরে বিদেশে ৪০,০০০ মানুষ মারা গেছে। বেশিরভাগই ব্রেন স্ট্রোকে মারা গেছেন। আমরা জানি না মানুষটি একা, নিঃস্ব, এই জিনিসটি তার ঘুমের মধ্যে স্ট্রোকের কারণ।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের অর্থনীতির সব থেকে বড় অংশ আসে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স থেকে। আর এই কারনে দেশের প্রবাসী নাগরিকরা বছরের পর বছর পারি জমিয়ে থাকে বিদেশের মাটিতে। তবে প্রবাসীদের যে পরিমান মৃত্যুর খবর শোনা যাচ্ছে তাতে অনেক প্রবাসীকে এখন রয়েছে বেশ চিন্তায়।