ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ দাবি করেছেন, সরকার বিরোধী আন্দোলনে থাকা বিএনপি রাজধানীতে দিনমজুর নিয়োগ দিয়ে সর্বনাশ করছে। তিনি দাবি করেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণে আটটি দল গঠন করে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাদের তত্ত্বাবধানে নাশকতা চালানো হচ্ছে।
শনিবার (২ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবির নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব দাবি করেন।
হারুন বলেন, এই সন্ত্রাসী দলকে ম্যানেজ করতে কেন্দ্রীয় যুবদল, স্বচ্ছসেবক দল ও ছাত্রদলের নেতারা রয়েছেন। মহানগর যুবদল, থানা ও ওয়ার্ডভিত্তিক বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা রয়েছেন। তারা প্রতিদিনের ভাড়া চুক্তিতে ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য জেলা থেকে সমমনা দিনমজুরদের ঢাকা শহরে নিয়ে আসে এবং কখনো কোমল পানীয়ের বোতল, কখনো কেরোসিন, দেশলাই অন্যান্য পাত্রে সরবরাহ করে। তারা চলন্ত গাড়ির যাত্রীবাহী বগিতে উঠে পেছন থেকে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং দ্রুত নেমে পালিয়ে যায়। কখনো কখনো মোটরসাইকেলে ঘুরে যানবাহনে আগুন দেওয়ার ব্যবস্থা করে।
পুলিশের আলোচিত এই কর্মকর্তা বলেন, ‘গত ২৮ অক্টোবর বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা পুলিশকে হত্যা করে, প্রধান বিচারপতির বাসভবন ভাংচুর করে, পুলিশ হাসপাতালে আগুন দেয়, অ্যাম্বুলেন্স ও মোটরসাইকেলে আগুন দেয়। পুলিশ বক্সে অগ্নিসংযোগ, লাখ লাখ টাকার সিসিটিভি ক্যামেরাসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র ধ্বংস ও চুরি করে। ধ্বংসযজ্ঞের পর বিভিন্ন সময় হরতাল-অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করে আসছে। জনগণের সম্পৃক্ততা ছাড়াই এই হরতাল-অবরোধে জনগণের মনে ভীতি সৃষ্টি, জনসম্পদ ও জানমালের ক্ষতি সাধনের জন্য তারা ঢাকা মহানগর দক্ষিণে আটটি সন্ত্রাসী দল গঠন করেছে।
হারুন বলেন, “এসব দলের কাজ হচ্ছে মিছিল ও ভাঙচুর, গাড়িতে আগুন দেওয়া, ককটেল বিস্ফোরণ, ছবি ও ভিডিও পাঠানো এবং সিনিয়র নেতাদের নির্দেশে অন্য কোনো ধ্বংসাত্মক কাজ করা।”
ডিএমপির ডিবি প্রধান জানান, গত ২৯ অক্টোবর গুলিস্তান থেকে সদরঘাট যাওয়ার পথে তাঁতীবাজার মোড় এলাকায় বিহঙ্গ পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনায় রাজীব হোসেন বিল্লাল নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়। আদালতে দেওয়া ১৬৪ ধারায় তার জবানবন্দিতে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। এর মধ্যে সিসিটিভি ফুটেজের ভিত্তিতে গঠিত টিমের তথ্যের ভিত্তিতে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগীয় ছাত্রদল নেতা হাজী পারভেজ ও কেন্দ্রীয় যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক মাহফুজুর রহমানকে ৩০ নভেম্বর গ্রেপ্তার করে। বর্তমানে তারা চারজন রয়েছেন। দিনের পুলিশ রিমান্ড। হারুন দাবি করেন, দুই নেতা অকপটে তাদের অপকর্মের কথা স্বীকার করেছেন।