প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা ৪ দিনের সফরে ভারতে গিয়েছিলেন এবং তিনি সেখানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাথে বৈঠক করেছিলেন এবং বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি সাক্ষর করে। এ বিষয়ে তিনি গতকাল সংবাদ সম্মেলন করেন এবং সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দে। তাছাড়া তিনি নির্বাচনে কি ধরণের প্রার্থী বাছাই করবেন সে বিষয়ে ও কথা বলে।
তিনি আগামী জাতীয় নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার জন্য দলীয় মনোনয়নে প্রার্থী পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়ে বলেছেন, “যেকোনো নির্বাচনে মনোনয়ন বদল খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার। ক্ষেত্রমতো আমরা অবশ্যই যাচাই করে দেখব, কার জেতার সম্ভাবনা আছে, কার নেই। কে ভোট পাবে, কে পাবে না। আর ভোট পেলে জিতবে কি না, সব কিছু বিবেচনা করে নির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হয়। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এখনও এক বছরেরও বেশি সময় বাকি।সময় গেলে বিষয়টি পরিষ্কার হবে।বুধবার বিকেলে গণভবনে ভারত সফর শেষে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। প্রায় দেড় ঘণ্টার ভারত সফরের অর্জন তুলে ধরার পাশাপাশি সিনিয়র সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দেন।
আগামী নির্বাচনে ১৪ দলীয় মহাজোট ভোট দেবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আসলে বিষয়টি আমি বলতে পারি। আমরা ১৪ দল করেছি। আমরা ১৪ দল করেছি। জোটবদ্ধভাবে নির্বাচন করেছ। গত জাতীয় নির্বাচনে জাতীয় পার্টি (জাপা) আলাদাভাবে নির্বাচন করেছে। কিন্তু তাদের সঙ্গে আমাদের সমঝোতা ছিল। ভবিষ্যৎ ফলাফল কে প্রশ্নবিদ্ধ করবে তা সময়ই বলে দেবে। তারা (১৪ দল) আমাদের সঙ্গে থাকবে। আমাদের কোনো আপত্তি নেই। আর আমাদের সঙ্গে কে থাকবে না থাকবে, নতুন জোট হবে বা কি হবে হোক—অসুবিধা তো নেই। আর আওয়ামী লীগ উদারভাবে কাজ করেছে, আওয়ামী লীগের দরজা খোলা।’ নির্বাচনে সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ প্রত্যাশা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সবাই ইলেকশনে পার্টিসিপেট করুক সেটাই আমরা চাই। তবে যদি কেউ না করে সেটা যার যার দলের সিদ্ধান্ত। সে জন্য আমরা সংবিধান তো বন্ধ করে রাখতে পারি না। আমরা চাই গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকবে। সংবিধান অনুযায়ী গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকবে। শান্তিপূর্ণ পরিবেশ থাকবে।’
জেলা পরিষদে নমিনেশন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘হয়তো বেশি দিন বাঁচবেন না। বয়োবৃদ্ধ হয়ে গেছে। আমি তাদের আরও কষ্ট দিতে চাইনি। তিনি বলেন, তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন একটানা আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে তো, গণতান্ত্রিক ধারাটা অব্যাহত আছে। আপনারা কিন্তু ভুলে গেছেন, পঁচাত্তরে জাতির পিতাকে হত্যার পর বারবার ক্যু হচ্ছিল। একজন ডিকটেটরের পর আরেকজন ডিকটেটর। একটা মিলিটারি ডিকটেটরের পর আরেকটা মিলিটারি ডিকটেটর। অথবা মিলিটারি ডিকটেটরের স্ত্রী ক্ষমতা নিয়ে গেল ক্যান্টনমেন্টের ভেতরে। জনগণের কি আদৌ কোনো অধিকার ছিল? সকাল-রাত পর্যন্ত কারফিউ, কথা বলার অধিকার নেই। কে কখন গায়েব হয়ে যাচ্ছে তার নিশ্চিযতা নেই। এই অবস্থা ছিল। আপনারা এখন টকশো করেন, যে যার মতো কথা বলেন। আওয়ামী লীগ সরকার আসার আগে কে এতো কথা বলার সুযোগ পেয়েছিলেন বলেন তো?
তার সফর বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা হেসে বলেন, “আমার মনে হয় না আমি শূন্য হাতে ফিরে এসেছি” বাংলাদেশের ইস্যুতে ভারতের সব দল এক মত পোষন করে থাকে। এটাই বড় কথা।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ভারত সফরের সময় দেশটির রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীসহ যাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছে সবাই খুব আন্তরিকতা দেখিয়েছেন। আপনি যদি নিজে ভালো বন্ধু হন তো সবাই ভালো থাকবে।’
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে দল গোছানোর কাজ করছে আওয়ামীলীগ। তবে দলীয় মনোনয়ন কাদেরকে দেয়া হবে সে বিষয়ে শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত চুড়ান্ত এটাই জানিয়েছেন দল অন্য সব নেতারা। তিনি দলের খোঁজ খবর সবসময় রাখেন এমনটি বলেন তারা।