Thursday , September 19 2024
Breaking News
Home / Countrywide / দলীয় সরকারের পতনের জন্য তাদেরকে পরামর্শ দিয়েছি: জাফরুল্লাহ চৌধুরী

দলীয় সরকারের পতনের জন্য তাদেরকে পরামর্শ দিয়েছি: জাফরুল্লাহ চৌধুরী

নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে বিভিন্ন নেতাদের মধ্যে বেশ কয়েকদিন ধরে নানা ধরনের আলোচনা সমালোচনা চলার পর শেষাবধি গঠিত হলো নির্বাচন কমিশন। কিছু দলের নেতারা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতির সিদ্ধান্তে তাদের কোন আপত্তি নেই। তবে কিছু সংখ্যক নেতৃবৃ্ন্দ বা কয়েকটি দলের সহযোগী সংগঠনগুলো এই সিদ্ধান্ত মানতে নারাজি প্রকাশ করেন। তবে ডা. জাফরুল্লাহ বিএনপিকে( BNP ) এ সিদ্ধান্ত মেনে নিতে আহ্বান জানালে মির্জা ফখরুল ( Mirza Fakhrul ) ইসলাম আলমগীর ( Fakhrul Islam Alamgir ) তার এক বক্তব্যে বলেন, তার কথা আমাদের শেষ কথা নয়, তিনি আমাদের কেউ নন, আমরা এই নির্বাচন কমিশন মানি না। তবে সাম্প্রতিক সময়ে এক সংবাদ মাধ্যমকে জানান পরামর্শ কেউ আমলে নিলো বা না নিলো সেটা বিবেচ্য বিষয় নয়। আমি সর্বদা পরামর্শ দিয়েই যাব।

ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরী একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি। তিনি কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত না থাকলেও গত( Past ) নির্বাচনের আগে বিএনপির নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনে ভূমিকা রেখেছিলেন। ড. কামালকে( Dr. Kamal ) ওই ফ্রন্টের নেতা হিসেবে মেনে নিতে বিএনপিকে( BNP ) পরামর্শ দেন।

খালেদা জিয়ার মুক্তি ও নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা, বিএনপির আন্দোলনের কৌশলনিয়ে বিভিন্ন সময়ে প্রকাশ্যে সমালোচনা করেছেন ড. জাফরুল্লাহ ( Dr. Jafrullah ) চৌধুরী।

ত্রয়োদশ নির্বাচন কমিশন গঠনের পর নবগঠিত নির্বাচন কমিশনকে সমর্থন দিতে বিরোধী দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানান তিনি। আর এতেই নতুন করে সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে আসেন ড. জাফরুল্লাহ( Dr. Jafrullah )।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর( Fakhrul Islam Alamgir ) বলেছেন, নির্বাচন কমিশন যাই হোক বিএনপি তাতে বিশ্বাস করে না। মির্জা ফখরুল আরো বলেন, জাফরুল্লাহ চৌধুরী বিএনপির সদস্য নন এবং তার কোনো মন্তব্য বিএনপির বক্তব্য নয়।

এ মন্তব্যের জবাবে জাফর উল্লাহ বলেন, বিষয়টি আমলে না নিলেও তিনি পরামর্শ দিয়েই চলবেন।

জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, আমি তাদের রাজনৈতিক কর্মী নই। আমি তাদের মঙ্গল কামনা করি। দলীয় সরকার পতনের জন্য আমি তাদের জাতীয় সরকার গঠনের পরামর্শ দিয়েছি।

নির্বাচন কমিশনের সমর্থনে জাতীয় সরকারের ( government ) অধীনে নির্বাচনের দাবিতে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনেরও আহ্বান ও জানান তিনি।

জাফরুল্লাহ চৌধুরী নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল ( Kazi Habibul ) আউয়ালকে ভালো মানুষ হিসেবে সমর্থন দিতে বিএনপিকে( BNP ) যে পরামর্শ দিয়েছেন, তাতে কর্ণপাত করছে না দলটি।

জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মূল্যায়নকে কটাক্ষ করেছেন বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরামের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি বলেন, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতার কথায় তারা ট্রাকের নিচে মাথা রাখবে কেন।

গত ১৪ ফেব্রুয়ারি কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হওয়ার ১৩ দিন পর শপথ নিয়েছে নতুন কমিশন। নতুন কমিশনের নেতৃত্বে রয়েছেন কাজী হাবিবুল আউয়াল, যাকে সিইসি হওয়ার প্রস্তাব করেছিলেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী, যিনি গত জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।

হাবিবুল আউয়ালকে সিইসির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতার প্রতিক্রিয়া: নির্বাচন কমিশনার হিসেবে সঠিক লোক পেয়েছে। সরকার সহযোগিতা করলে তার দ্বারা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সুষ্ঠু ভোট দেওয়া সম্ভব হবে।

জাফরুল্লাহ চৌধুরী একজন ঘরানার লোক। তিনি চীনপন্থী হিসেবে পরিচিত। তবে গত এক দশকে তিনি বিএনপির কাছাকাছি চলে এসেছেন। বিভিন্ন সময়ে বেগম খালেদা জিয়ার কাছে খোলা চিঠি লিখে পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। দেখা করে ও নিজের কথা বলতে এসেছেন।

২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে গণফোরাম নেতা ড. কামাল হোসেন, জেএসডি নেতা আ স ম আবদুর রব, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ নেতা আবদুল কাদের সিদ্দিকী, নাগরিক ঐক্যের নেতা মাহমুদুর রহমানও বিএনপি জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনে নেপথ্যে ভূমিকা পালন করেন।

ভোটের পরও জাফরুল্লাহ-বিএনপি সম্পর্ক বেশ ভালোই ছিল। তবে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে রাজনীতি থেকে দূরে থাকতে এবং পড়াশোনায় মনোযোগ দেওয়ার পরামর্শ দেওয়ার পর সম্পর্ক খারাপের দিকে মোড় নেয়। একপর্যায়ে জাফরুল্লাহর সঙ্গে যোগাযোগ না রাখতে দলের নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দেয় বিএনপি।

এ অবস্থায় প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে নিয়ে জাফরুল্লাহর ক্ষোভের ভিন্ন প্রতিক্রিয়া রয়েছে বিএনপিতে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, জাফরুল্লাহ চৌধুরী সাহেব তাকে (নতুন সিইসি) ভালো মানুষ জানেন। তিনি এই বিষয়ে মন্তব্য করতে পারেন, সে কারণে বিশ্বাস করে ট্রাকের নিচে আমাদের মাথা দিতে হবে এমন তো কোনো কথা নেই।

বিএনপির প্রধান দাবি এখন নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকার। নির্বাচন কমিশন সেই সরকার গঠন করবে বলে নেতারা বলে আসছেন।

গয়েশ্বর বলেন, আমরা তাকে (সিইসি) মানি কি না সেটা পরের বিষয়। আগে নির্বাচনকালীন সরকারটা ডিসাইড হোক। এরপর নির্বাচন কমিশন কী করবে সেটা পরের কথা।

জাফরুল্লাহ চৌধুরীর ভাষায়, নতুন সিইসি ভালো, দক্ষ ও শক্ত মেরুদণ্ডের মানুষ হলে তিনি সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারবেন- এমনটা মনে করেন না গয়েশ্বর। তিনি বলেন, হাজী মানুষ হলেই যে ভালো মানুষ হবেন, তার কোনো নিশ্চয়তা আছে কি? সব হাজি যদি সৎলোক হয় তাহলে অনেকের বিরুদ্ধেই তো আপনারা অপকর্মের নিউজ লেখেন। এটা কেন?

তিনি (সিইসি) নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন কি না তা নিয়ে আমাদের সন্দেহ রয়েছে। আমরা এটাও বলছি যে মির্জা ফখরুল, মোশাররফ হোসেন ও গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে নির্বাচন কমিশনের প্রধান করা হলেও এই সরকার ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় আরো বলেন, ‘সরকারের সদিচ্ছা ছাড়া সুষ্ঠ নির্বাচন কখনোই সম্ভব না। নির্বাচন কমিশনারের যতই সুষ্ঠু নির্বাচন করার ইচ্ছা থাকুক না কেন উনি কখনোই সুষ্ঠ নির্বাচন করতে পারবেন না। সরকারের যদি সদিচ্ছা থাকে তহলেই সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব। যেখানে নির্বাচনকে ঘিরে সরকারের লাভ ও ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে, সেখানে সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না বলে মন্তব্য করেন গায়েশ্বর চন্দ্র।

 

About bisso Jit

Check Also

আ.লীগ ও তৃণমূল থেকে বিএনপিতে যোগদানের হিড়িক

নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ ও তৃণমূল বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে বিএনপিতে যোগদানের প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফ্যাসিবাদী আওয়ামী …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *