বাংলাদেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দলসহ অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর এখন একটি আলোচনার বিষয় হলো আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন। বিএনপি এ নির্বাচনকে ঘিরে নানা ধরনের বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছে। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে বিএনপি বেশ আগে থেকে জানিয়ে দিয়েছে, দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে সেটা হবে কারচুপি এবং প্রহসনের নির্বাচন, এ নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। যদি দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দেয়া হয় তাহলে সেটা প্রতিহত করা হবে বলেও জানান দলটির নেতারা। এবারে বিষয় নিয়ে জবাব দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেছেন, নির্বাচনী সরকার নিয়ে দেশে কোনো সংকট নেই, বিএনপি ও তাদের নেতৃত্ব ও সিদ্ধান্তে সংকট রয়েছে।
রোববার (২৪ জুলাই) সকালে রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়িতে ব্রিফিংকালে নির্বাচনকালীন সংকট নিয়ে কথা বলার প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি মহাসচিব এ কথা বলেন।
বিএনপি নেতাদের দাবি-দাওয়ার কোনো শেষ নেই- কখনো তারা নিরপেক্ষ সরকারের কথা বলেন, কখনো নির্বাচনী সরকার, কখনো তত্ত্বাবধায়ক সরকার আবার কখনো জাতীয় সরকারের কথা বলেন- এ প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, আসলে বিএনপি নেতারা কী চায় তা তারা নিজেরাও জানে না।
বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবারো বলেছেন, নির্বাচন হবে সরকারের অধীনে নয়, নির্বাচন কমিশনের অধীনে, সরকার শুধু রুটিন দায়িত্ব পালন করবে।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন একটি স্বাধীন ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। নির্বাচনের সময় স্বাধীন ও কর্তৃত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনে নির্বাচন কমিশনকে সরকার সব ধরনের সহায়তা দেবে।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নতুন করে তত্বাবধায়ক সরকারের যে কথা বলছেন সেটা একটা মীমাংসিত বিষয়, সুতরাং এ নিয়ে নতুন করে আলোচনার কোনো সুযোগ নেই বলে সাফ জানিয়ে দেন ওবায়দুল কাদের।
আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ গঠিত হয়েছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, আন্দোলন কীভাবে মোকাবিলা করতে হয় আওয়ামী লীগ ভালো করেই জানে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, রাজপথ কাউকে ইজারা দেওয়া হয়নি, রাজপথে আওয়ামী লীগ ছিল, আছে এবং থাকবে।
বিএনপির যেকোনো শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিকে স্বাগত জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আন্দোলনের নামে সহিং”/সতা বা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করলে জনগণের জানমাল রক্ষায় আওয়ামী লীগ জনগণকে সঙ্গে নিয়ে যোগ্য জবাব দিতে প্রস্তুত।
আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হবে- বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্যে দেশের মানুষ হেসে উঠেছে, উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, যে দল তাদের নেতার মুক্তির জন্য রাজপথে মি”ছিলও করতে পারে না। আবার আন্দোলন করে সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করবে- জনগণ তা বিশ্বাস করে না।
সরকার নয়, আন্দোলন ও নির্বাচনে ব্যর্থ হওয়ায় বিএনপি নেতাদের দল থেকে পদত্যাগ করা উচিত বলে আবারো সাফ জানিয়ে দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
ওবায়দুল কাদের তার বক্তব্যে বলেন, রাষ্ট্রপতির আমন্ত্রণ ও নির্বাচন কমিশনের আহ্বানে সংলাপে না গিয়ে বিএনপি ও তার সহযোগীরা এখন নিজেদের মধ্যে সংলাপ করছে।
তিনি বলেন, সা”ম্প্রদায়িক অপশক্তি নিয়ে বিএনপির এমন ষড়য”ন্ত্র দেশপ্রেমিক জনগণ মেনে নেবে না।
উল্লেখ্য, জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী বছরের শেষ দিকে অথবা ২০২৪ সালের প্রথম দিকে, এমনটাই জানায় নির্বাচন কমিশন। এদিকে নির্বাচন কমিশন নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। বিএনপি নির্বাচন কমিশনকেও সরকারের নিয়ন্ত্রিত কমিশন হিসেবে আখ্যা দিয়ে যাচ্ছে।