সরকার কোমলমতি শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে মারধরের বিষয়টি নিষিদ্ধ করেছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীদের প্রতি শিক্ষকের এমন কোনো ধরনের আচারন করা উচিৎ নয়, যাতে করে শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের মাঝে দূরত্ব সৃষ্টি হয়। তাছাড়া শিক্ষার্থীদের মনে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে এমন কোনো আচারণ থেকে দূরে থাকার নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। তবে মাঝে মাঝে শিক্ষার্থীদেরকে শিক্ষকদের মারপিটের খবর মাঝে মাঝে সংবাদ মাধ্যমে উঠে আসতে দেখা যায়। এবার এক কোচিং সেন্টারে কোচিং শিক্ষকের হাতে বেদম প্রহারের শিকার হয়েছেন এক শিক্ষার্থী।
বরগুনার কোচিং সেন্টারে দরজা বন্ধ করে অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রকে শতাধিক বেত্রাঘাত করা হয়েছে। তাকে মারধর করার সময় এক এক করে সাতটি বেত ভেঙেছেন ওই শিক্ষক। বরগুনার তালতলীতে সাকসেস কোচিং সেন্টারের শিক্ষক ও পরিচালক মোহাম্মদ ছগির হোসেনের বিরুদ্ধে এমন অমানবিক আচরণের অভিযোগ উঠেছে। বেদম প্রহারের এ ঘটনা তিন মাস আগের হলেও দুদিন আগে ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।
এ ঘটনায় ওই শিক্ষকের বিচার দাবি করেছেন নির্যা”তিতার বাবা-মা ও সহপাঠীরা। কোচিং সেন্টার বন্ধের পাশাপাশি অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন। ভুক্তভোগী কিশোর লাউপাড়া সাগর-সৈকত মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর অভিযোগ, সহপাঠীর সঙ্গে ঝগড়ার জেরে শিক্ষক তার ওপর রেগে যান। এরপর কোচিং সেন্টারের দরজা বন্ধ করে বেধড়ক মা’রধর করে। অনুনয় বিনয় করেও রক্ষা পায়নি ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী আসাদ।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষকের বিচার দাবি করেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর অভিভাবক, সহপাঠী ও অন্যান্য শিক্ষকরা।
বরগুনা তালতলী লাউপাড়া সাগর-সৈকত মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ মোঃ গোলাম হায়দার বলেন, “আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না। এমনকি তার কোচিং সেন্টার কোথায় বা ওই ছাত্রটি কোথায় পড়ছে তাও জানি না। আমার মোবাইলে একটি ভিডিও দেখেছি। ৩-৪ দিন আগে। আমি দেখেই বিষয়টি জেনেছি। তিনি বলেন, এ ঘটনায় এখনো কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তবে শুনেছি অভিযুক্ত শিক্ষক ছেলেটির চিকিৎসার খরচ বহন করেছেন।
এদিকে খবর পেয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক ছগির হোসেন উপস্থিতি টের পেয়ে কোচিং সেন্টার থেকে পা’লিয়ে যায়। পরে তার মোবাইল ফোনে কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
তালতলী থানার সেকেন্ড অফিসার মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ভাই”রাল ভিডিওর কথা শুনেছি।
তিনি আরো বলেন, ওই নির্যাতিতা শিক্ষার্থীর পরিবার পক্ষ থেকে যদি কোন আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকে, তাহলে আমরা এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিব। জালাল উদ্দিন যিনি বরগুনার ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি বলেন, একজন শিক্ষার্থীকে বেদম ভাবে পিটুনি দেয়া হয়েছে, এই খবর শুনেছি। বিষয়টি প্রকৃতপক্ষে কি ঘটেছিল সে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় যারা দোষী তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।