আইনের ফাঁদে পড়ে পুলিশের কাছে আটক হয় এক যুবক। এরপর তাকে আদালতে নেয়া হলে আদালত তাকে রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দেন। ঐদিন রাতে কারাগারেই তিনি প্রয়াত হন। যে ঘটনা সম্প্রতি বেশ আলোচনায় উঠে এসেছে। পরিবার দাবি করছে তার ছেলেকে হ/ ত্যা করা হয়েছে।
রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় ডাকাতি মামলায় গ্রেপ্তার আসামি সুমন শেখের মৃ’ত্যু নিয়ে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজ দেখার পর পুলিশ জানিয়েছে এটি আ’ত্মহত্যা, তবে পরিবারের দাবি নি’র্যাতনের কারণেই মৃ’ত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় দায়িত্বরত দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
রাজধানীর রামপুরায় পিওর-ইট ওয়াটার ফিল্টার কোম্পানিতে চাকরি করেন সুমন শেখ নামের এক যুবক। তার বিরুদ্ধে কোম্পানি অফিস থেকে ৫৩ লাখ টাকা চুরির অভিযোগে ১৫ আগস্ট হাতিরঝিল থানায় মামলা হয়।
পুলিশ জানায়, গত শুক্রবার যে রাতে তাকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়, সেই রাতেই সুমন আত্মহত্যা করে।
তার মৃ’ত্যুর খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন থানার বাইরে ভিড় জমায়। একপর্যায়ে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে থানার দরজা ভাঙার চেষ্টা করে। সুমনের রিকশাচালক বাবা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেছেন।
এদিকে পুলিশ বলছে, ডাকাতির মামলা হলে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে সুমনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার কাছ থেকে তিন লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে পুলিশ।
ডিএমপি এইচএম তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার আজিমুল হক জানান, সুমনের মরদেহ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে।
তিনি সাংবাদিকদের আরও বলেন, এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং দায়িত্বরত দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।
সুমন শেখের আত্মহত্যার বর্ণনা দিয়ে ডিসি বলেন, অভিযানের পর আসামিরা রাতভর হাতিরঝিল থানায় থাকে। শনিবার সকালে তাকে প্রাক-বিচার আটকে রেখে আদালতে হাজির করার কথা ছিল। কিন্তু শুক্রবার বিকেল ৩টা ৩২ মিনিটে সুমন তার পরনে থাকা প্যান্ট দিয়ে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। যা সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে। এই ভিডিওটি মৃতের স্ত্রী ও স্বজনদেরও দেখানো হয়েছে।
এদিকে শনিবার বিকেলে হাতিরঝিল থানার সামনে বিক্ষোভ করেন সুমন শেখের (২৫) স্বজনরা।
সুমন শেখের মৃত্যুর বিষয়ে তার স্বজন মো. সোহেল আহমেদ জানান, শুক্রবার বিকেলে একটি ডাকাতির মামলায় সুমন শেখকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সুমন তার পরিবারের সাথে রামপুরায় থাকে। আজ আমরা জানতে পারলাম থানার ভিতরেই তার মৃত্যু হয়েছে।
সুমন শেখের বাড়ি নবাবগঞ্জ থানার দক্ষিণকান্দি বলে জানা গেছে। তিনি ইউনিলিভার লিমিটেডে ডেলিভারি ম্যান হিসেবে কাজ করতেন। তার একটি ৬ বছরের ছেলে রয়েছে।
সিসি ক্যামেরায় ঘটনাটি স্পষ্ট ধরা পড়েছে ওই ছেলে নিজেই নিজেকে নিথর করেছে। পরিবারকে সিসিটিভির ভিডিও দেখানোর পরেও তারা কোনোভাবেই মানতে নারাজ। তবে এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন বসানো হয়েছে, তাদের রিপোর্ট আসার আগ পর্যন্ত ওই কারাগারে দায়িত্বরত অফিসারকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।