বিগত কিছুদিন আগে ইডেন কলেজের এক ছাত্র লীগের সভানেত্রী এক ছাত্রীকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে বেশ আলোচনায় আসে। শুধু একজনকেই হেনস্তা করে ছাড়ে নি সে, ঘটনা জানাজানি হলে প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়ে প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য দ্বিতীয়বার 4 জন ছাত্রীকে আটকে রেখে অনাকাঙ্খিত কাণ্ড ঘটায়। তার রেশ না কাটতেই ইভি কলেজের এক শিক্ষিকা এক ছাত্রীকে গালিগালাজ ও হুমকি দেয়ার ঘটনা ঘটিয়েছে। যে ঘটনা বর্তমানে গণমাধ্যমে তুমুল সমালোচনার সৃষ্টি করেছে।
ভুক্তভোগি ওই ছাত্রীকে ওই শিক্ষিকা বলেন, আমি রোকেয়া হল ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক ছিলাম। তুমি কি আমাকে চেন? আমার কতো পাওয়ার ছিলো জানস? তুই কি তোর এলাকার মেয়র টিটু ভাইকে চিনিস? বয়লা (বলে) ওখানে পুতে ফালামু।
ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সম্পাদক পরিচয় দিয়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক শিক্ষার্থীকে হুমকি দিয়েছেন এক শিক্ষক। অভিযুক্ত শিক্ষিকার নাম মাহবুবা সিদ্দিকা। তিনি ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এবং খালেদা জিয়া হলের আবাসিক শিক্ষক।
গত বুধবার তার হলের এক ছাত্রীকে হুমকি দিয়ে আলোচনায় আসেন মাহবুবা সিদ্দিকা। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে সমালোচনা। শিক্ষকের এমন আচরণে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ ও লজ্জিত।
অন্যদিকে এ ঘটনায় নিরাপত্তা শঙ্কার বিষয়ে শনিবার ছাত্র উপদেষ্টা ও প্রক্টরের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী। একই সঙ্গে ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।
অন্যদিকে ময়মনসিংহের মেয়রের নাম ব্যবহার করে ছাত্রকে হুমকি দেওয়া হয়। তবে মেয়র এ বিষয়ে কিছু জানেন না বলে ওই শিক্ষককে চেনেন বলে জানান।
ময়মনসিংহ সিটি মেয়র ইকরামুল হক টিটু বলেন, ‘আমি ওই শিক্ষককে চিনি না। এমন কথা বলে সে অপরাধ করেছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২৩ আগস্ট ভিকটিম বোরকা পরে হলের সিট বরাদ্দের সাক্ষাৎকারে হাজির হন। এ সময় ওই বোর্ডে তাকে নানাভাবে হয়রানি করা হয়। সংশ্লিষ্টতা না থাকা সত্ত্বেও তাকে শিবির বলা হয়। এ ঘটনা তার পরিচিত ছাত্রলীগের এক বড় ভাইকে জানালে তাকে প্রভোস্টের কক্ষে ডেকে নিয়ে বিভিন্নভাবে হুমকি দেওয়া হয়। এ ঘটনায় তিনি ও তার পরিবার তাদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন।
লিখিত অভিযোগের বিষয়ে ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা.শেলিনা নাসরীন বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। আগামীকাল বিষয়টি নিয়ে বসব। বিভিন্ন সংবাদপত্রে উল্লেখিত ভাষা সত্য হলে তা বলা ঠিক হবে না।
এদিকে ঘটনা তদন্তে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আবাসিক শিক্ষক নাজমুল হুদাকে আহ্বায়ক, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নাহিদা আক্তার এবং আইন ও ভূমি ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রভাষক মেহেদী হাসানকে সদস্য করে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে। কমিটিকে যত দ্রুত সম্ভব ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
প্রভোস্ট কাউন্সিলের সভাপতি ও খালেদা জিয়ার প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. ইয়াসমিন আরা সাথী এক সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, হল প্রশাসনের পক্ষ থেকে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টির বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রশাসনকেও জানিয়েছি। তারা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।
লিখিত অভিযোগের বিষয়ে সহকারী অধ্যাপক মাহবুবা সিদ্দিকা বলেন, ছাত্র উপদেষ্টা, প্রক্টর ডাকলে কথা বলব। ছাত্রকে হুমকির বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, আমি এখনো সরকারি অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ঘটনার প্রতিবাদে অনেক ছাত্রছাত্রীরা একত্রিত হয়েছে। ওই শিক্ষিকার দৃষ্টান্ত শাস্তির দাবি জানিয়েছে তারা। একজন শিক্ষিকা মুখে এই ধরনের ভাষা বেমানান বলে দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।