বরিশালের বানারীপাড়ায় পুলিশ ডিউটি শেষে বাসায় ফেরার পথে চোর সন্দেহে আ. ছালাম বেপারী (৬০) নামে এক ইজিবাইক চালককে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। নিহত আ. ছালাম বেপারী উপজেলার চাখার ইউনিয়নের বলহার গ্রামের আ. কাদের বেপারীর ছেলে।
জানা যায়, থানার ডিউটি শেষ করে আ. ছালাম রোববার দিবাগত রাত ৩টার দিকে বানারীপাড়া-বরিশাল সড়কের চৌয়ারীপাড়া নামক স্থান দিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় আলমগীর, আ. রবসহ ১০-১৫ জনের একদল ইজিবাইকের সামনে গাছ ফেলে তা থামানোর চেষ্টা করে। . ভীত আ. ছালাম দ্রুত গতিতে সরে যাওয়ার চেষ্টা করলে গাড়ির সামনের কাঁচে ধাক্কা লাগে।
কাচ ভেঙে গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে একটি গাছের সঙ্গে ধাক্কা খায়।
এ সময় ওই এলাকার আলমগীর আ. রব, নাঈমসহ আরও কয়েকজন তাকে ঘুষি ও মোটা গজারী লাঠি দিয়ে নির্মমভাবে মারতে থাকে। খবর পেয়ে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে বানারীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মারধরের সময় ওই বৃদ্ধা আ. ছালাম হামলাকারীদের কাছে প্রাণ ভিক্ষা করে বলেন, ‘ওরে তোরা আমারে মারিস না, আমি চোর না, আমি পুলিশ ডিউটি করে আসছি।
কিন্তু লাথি, ঘুষি ও গজারির ডাল দিয়ে তাকে আঘাত করতেই থাকলো। এ সময় তিনি সবার কাছে একটু পানিও চাননি। তিনি সবাইকে বলতে থাকেন, ‘তোমরা থানায় খবর নেও, তবু আমাকে মেরো না, আমার বুকে ব্যথা।’ এ কথা বলতে বলতে এক পর্যায়ে তিনি ভেঙে পড়েন।
এ ঘটনায় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মো. রব, এমরান ও আল-আমিনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে আল-আমিনের স্ত্রীর দাবি তার স্বামী নির্দোষ। তিনি বলেন, আল-আমিন ইজিবাইক চালককে বাঁচানোর চেষ্টা করেন।
বানারীপাড়া থানার ওসিএসএম মাসুদ আলম চৌধুরী বলেন, ‘এ. পুলিশ তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসার পর ছালাম মারা যায়। সোমবার সকালে তার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য বরিশাল শেবাচিম হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে। আটক তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
অন্যদিকে এত গভীর নির্জন রাতে কোনো নিরাপত্তা ছাড়াই প্রশ্ন উঠেছে সচেতন মহল থেকে। থানা থেকে ছালামকে বাড়ি যেতে দেওয়া হলো কেন?