Thursday , November 14 2024
Breaking News
Home / Countrywide / তোমরা বসে বসে কি ঘোড়ার ঘাস কাটো: হুশিয়াঁরী মন্ত্রীর

তোমরা বসে বসে কি ঘোড়ার ঘাস কাটো: হুশিয়াঁরী মন্ত্রীর

রাইস মিল মালিকরা (মিল মালিক) শিয়ালের চেয়েও ধূর্ত বলে মন্তব্য করেছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। এ সময় তিনি খাদ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের দায়িত্বে অবহেলার জন্য ভর্ৎসনা করে বলেন, আপনারা কি ঘোড়ার ঘাস কাটছেন!

রোববার দুপুরে বগুড়া জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে করণীয় নির্ধারণে আয়োজিত বৈঠকে চালের দাম অনেক সময় অনিয়ন্ত্রিত হয়ে যাওয়ার পেছনে চাল ব্যবসায়ীদের হাত রয়েছে বলে মন্তব্য করেন মন্ত্রী।

এ সময় তিনি মিল মালিকদের উদ্দেশে বলেন, ভোক্তার কথা চিন্তা করে চালের বাজার স্বাভাবিক রাখুন। এজন্য নতুন আইন করা হয়েছে। দুই-এক সপ্তাহের মধ্যে মন্ত্রিসভায় পাস হলে আইনটি কার্যকর হবে। তাহলে শুধু জরিমানা নয়, জেলও হবে।

জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে এ সভায় বক্তব্য দেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব প্রদীপ কুমার দাস, খাদ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুন, বগুড়ার পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী, ডিসি ফুড কাজী সাইফুদ্দিন, শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমন জিহাদী, চাল ব্যবসায়ী আবুল কালাম আজাদ, আমিনুল হক, ফরিদ আহম্মেদ মোল্লা, গোলাম কিবরিয়া, ইঞ্জিনিয়ার কেতাউর রহমান প্রমুখ।

সবার কথা শোনার পর খাদ্যমন্ত্রী প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, এবারের নির্বাচনি ইশতেহারে খাদ্যদ্রব্যের মূল্য না বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। আর এটি বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই আমাদের নির্দেশনা দিয়ে মাঠে নামিয়েছে। শপথ নেওয়ার পর দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান শুরু করা হয়েছে। এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।

তিনি উপস্থিত ডিসি ফুডকে বলেন, পরিদর্শকসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা নিয়মিত বাজারে যান না। সরকারি নির্দেশ পাওয়ার আগে তিনি মাঠে নামেননি। তারা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করলে চালের বাজার অস্থিতিশীল হতো না। এ বিষয়ে আগামী সাত দিনের মধ্যে ডিসি ফুডকে জানানোর নির্দেশ দেন তিনি।

মিল মালিকদের উদ্দেশে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, খাদ্য মন্ত্রণালয় নতুন আইন করেছে। মিনিকেট বলে কোনো চাল নেই, মিনিকেট বলে কোনো চাল বিক্রি করা যাবে না। বস্তার ওপর ধানের জাত উলে­খ করতে হবে। মিল গেটে কত টাকায় চাল কেনা হয়েছে তা লিখতে হবে। থাকতে হবে উৎপাদনের তারিখও। আপনারা চাল সরু করার নামে পালিশ করে ১৬ থেকে ২০ লাখ টন চাল বাতাসে উড়িয়ে দেন। এতে ব্যবসায়ীদের ক্ষতি হয় না। তারা দাম বাড়িয়ে ভোক্তার কাছে আদায় করেন।

চাল মিল মালিকদের বিরুদ্ধে কর্পোরেট কোম্পানিকে আগ্রাসী ব্যবসার সুযোগ দেওয়ার অভিযোগ করে মন্ত্রী বলেন, “আপনারা চাল উৎপাদন করে কর্পোরেট কোম্পানির কাছে বিক্রি করেন এবং তাদের চাহিদা অনুযায়ী বস্তা প্রতি কেজিতে ১০-১৫ টাকা বেশি দাম দেন।

এ ছাড়া আড়তদার ও মিল মালিকরা নির্ধারিত গুদামের বাইরে বিভিন্ন এলাকায় গুদাম ভাড়া নিয়ে গোপনে ধান মজুত করছে বলে আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে। এসব এলাকায় অভিযান অব্যাহত থাকবে।

বৈঠকে কয়েকজন রাইস মিল মালিক দাবি করেন, এ ব্যবসা করতে গিয়ে তারা ক্ষতিগ্রস্ত ও নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হয়েছেন।

জবাবে মন্ত্রী বলেন, আপনার কোনো ক্ষতি হয়নি। পরিবর্তে ব্যাংক থেকে চাল ব্যবসার নামে মোটা অঙ্কের ঋণ নেন। সেই টাকা ব্যবসায় বিনিয়োগ না করে তিনি ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় বেশ কিছু গাড়ি ও বাড়ি কিনেছেন।

চালের খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ী, হাস্কিং, অটো রাইস মিল এবং কর্পোরেট গ্রুপের মালিক বা প্রতিনিধিরা তাদের বিবৃতিতে চালের দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য একে অপরকে দায়ী করেছেন। এদিকে রোববার রাজধানীর হাতিরপুল বাজারে অভিযান চালিয়ে ৭টি দোকানকে ৩৭ হাজার টাকা জরিমানা করেছে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের বাজার তদারকি দল।

About bisso Jit

Check Also

উপদেষ্টা পরিষদেই বৈষম্য

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে আঞ্চলিক বৈষম্যের অভিযোগ উঠেছে। ২৪ সদস্যের এই পরিষদে ১৩ জনই চট্টগ্রাম …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *