টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে তানিয়া নামে এক কলেজ ছাত্রীর নগ্ন ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ায় ঐ কলেজ ছাত্রী সুইসাইড নোট লিখে আত্মহনন করেছে। বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) বিকালে ভাতগ্রাম ইউনিয়নের সিংজুরী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
তানিয়া সিংজুরী গ্রামের হারুন মিয়ার মেয়ে ও মির্জাপুর মহিলা কলেজের একাদশ শ্রেণির মানবিক বিভাগের ছাত্রী।
পুলিশ জানায়, একই ইউনিয়নের বুড়িহাটি গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে সুজন (২৪) তানিয়ার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করে গোপনে ভিডিও ধারণ করে। পরে ওই ভিডিও ফেসবুকে ছেড়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে বিভিন্ন সময় ভুক্তভোগীর কাছে থেকে প্রায় দেড় লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। এ ছাড়া কলেজে আসা-যাওয়ার পথে আরও টাকার জন্য তাকে মা/রধর করাসহ নানাভাবে হয়রানি করত।
১৫ দিন আগে ‘লোকাল সাফি’ নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে ওই ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা হয়। পরে ভিডিওটি ভাইরাল হলে তানিয়া মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। এক পর্যায়ে বুধবার বিকালে তিনি সুইসাইড নোট লিখে তাদের বসত ঘরে গলায় ওড়না দিয়ে ফাঁ/স লাগিয়ে আ/ত্মহনন করে। এদিকে তানিয়ার আ/ত্মহনন খবর প্রকাশ্যে আসার পর অভিযুক্ত সুজন গা ঢাকা দিয়েছে বলে জানা গেছে।
কলেজছাত্রী তানিয়ার বাবা হারুন মিয়া জানান, ১৫ দিন আগে কলেজ থেকে ফেরার পথে সিংজুরী ব্রিজের কাছে পথ আটকে সুজন তার মেয়েকে মা/রধর করে। পরে খবর পেয়ে আমরা সুজনকে আটকে রাখি। ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর আলম বাদশা এসে সুজনকে সতর্ক করে তার বাবা-মায়ের কাছে হস্তান্তর করেন। কিন্তু তারপরও সুজন তানিয়াকে নানাভাবে ভয়ভীতি ও হু/মকি দিত। বুধবার তানিয়া নোটবুকে সুইসাইড নোট লিখে আ/ত্মহনন করেছে।
তানিয়ার বড় ভাই ডিপ্লোমা প্রকৌশলী আবু তালেব অভিযোগ করে বলেন, ভিডিওটি প্রকাশের আগে সুজন তার ফুফাতো বোন হিলারির কাছে হুম/কিমূলক এসএমএস পাঠায়, যিনি দশম শ্রেণির ছাত্রী। তাতে সে লেখে ‘তানি এখন বেশি বুঝল, ওর ম/রণ আছে’। এরপর ‘লোকাল সাফি’ আইডি থেকে ওই ভিডিও ছেড়ে দিলে তানিয়া মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে এবং আ/ত্মহনন করে।
খবর পেয়ে মির্জাপুর থানার পুলিশ গিয়ে তানিয়ার ম/রদেহ থানায় নিয়ে আসে। এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছে তানিয়ার পরিবার।
তানিয়ার সুইসাইড হুবহু তুলে ধরা হলো- ‘আমারে তুমরা সবাই মাফ কইরা দিও, আমার জন্য তুমাগো অনেক মান সম্মান নষ্ট হইছে, আমি চাই না তুমাগো আরো মান সম্মান নষ্ট হক। তোমরা জানো না ঐতি কি কি করছে আমার সাথে। আমের জোর কইরা ধ/’র্ষণ করছে। তারপর আমার ছবি তুইলা সেই ছবি দিয়া আমার কাছে থাইক দেড় লাখ টাকার জিনিস নিছে।’
এ ব্যাপারে মির্জাপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. গিয়াস উদ্দিন জানান, তানিয়া নামে ওই কলেজ ছাত্রী ফাঁ/স দিয়ে আ/ত্মহনন করেছে। উদ্ধার হয়েছে একটি সুইসাইড নোট। তদন্ত সাপেক্ষে আ/ত্মহনন কারণ জানা যাবে।
প্রসঙ্গত, আত্ম-সন্মান হারিয়ে হতাশাগ্রস্থ হয়ে এক পর্যায়ে আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছেন। ভুক্তভোগীর পরিবার এর দৃষ্টান্তমূলক দাবি করেছেন এবং পুলিশের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া কথা বলা হয়েছে।