দেশে ব্যাঙ্কাসুরেন্স চালু হয়েছে। এখন থেকে দেশে কর্মরত সব তফসিলি ব্যাংক বীমা কোম্পানির এজেন্ট হিসেবে কাজ করতে পারবে। একই সময়ে, ব্যাংকগুলি বীমা পণ্য বিপণন এবং বিক্রয়ের ব্যবসা করতে পারে। ফলে একজন গ্রাহকও ব্যাংকের বীমা করতে পারেন।
মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধান ও নীতি বিভাগ এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, দেশে কর্মরত তফসিলি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ব্যাঙ্কাসুরেন্স চালু করা হয়েছে। ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ এর ৭(১)(ল) ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে বাংলাদেশ সরকারের অনুমোদনক্রমে সব তফশিলি ব্যাংক বিমা কোম্পানির ‘করপোরেট এজেন্ট’ হিসাবে বিমা পণ্য বিপণন ও বিক্রয় ব্যবসা ১২ ডিসেম্বর থেকে করতে পারবে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ব্যাঙ্কাসুরেন্স একটি ফরাসি শব্দ। ফ্রান্স এবং স্পেন ১৯৮০ এর দশকে এটি প্রথম চালু করে। বেশিরভাগ ইউরোপীয় দেশে, জীবন বীমা পলিসি ব্যাংকের মাধ্যমে বিক্রি করা হয়। এশিয়ার বিভিন্ন দেশেও এটি জনপ্রিয়তা পেয়েছে। প্রায় তিন শতাব্দী আগে ভারতে এটি চালু হয়েছিল। পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কাও ব্যাঙ্কাসুরেন্সে সফল হয়েছে।
নীতিমালায় যা আছে: অনুমোদিত নীতিমালা ও নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যাংকাসুরেন্স মূলত দেশের ব্যাংকগুলোর শাখার মাধ্যমে বাস্তবায়িত হবে। সহজ কথায়, ব্যাংক কর্পোরেট এজেন্ট বা বীমা কোম্পানির প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করবে। বীমা খাতে সাধারণ মানুষের আস্থা তুলনামূলকভাবে কম বলে দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করা হচ্ছে। তাই ব্যাঙ্কাসুরেন্স হতে পারে মানুষের আস্থার জায়গা।
ধারণাটি এমন যে বিমাপণ্যের জন্য গ্রাহকদের বিমা কোম্পানিতে যেতে হবে না, ব্যাংকের শাখায় গেলেই চলবে। অর্থাৎ ব্যাংক তার নিজস্ব গ্রাহকদের কাছে বীমা পণ্যের পাশাপাশি ব্যাংকিং পণ্য বিক্রি করবে। পণ্যের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো পেনশন, স্বাস্থ্য, দুর্ঘটনা, যৌতুক, শিক্ষা, ওমরাহ হজ ইত্যাদি।
বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণাধীন ব্যাংকগুলো ব্যাংকাসুরেন্সের এজেন্ট হতে পারে। এ জন্য বীমা কোম্পানিগুলোর সঙ্গে চুক্তি করতে হবে। যাইহোক, কোনো ব্যাঙ্কাসুরেন্স এজেন্ট তিনটির বেশি বীমা কোম্পানির সাথে যুক্ত থাকবে না। এ জন্য বীমা কোম্পানিকে আইডিআরএ এবং বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ব্যাংকাসুরেন্স এজেন্টের অনুমোদন নিতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, দেশে মোট ব্যাংকের শাখা রয়েছে ১১ হাজার ২৩৯টি। এর মধ্যে গ্রামে শাখা রয়েছে ৫ হাজার ২৮৭টি।