দেশের একশ্রেণীর ঊশৃংখল ধনী ব্যক্তিরা রয়েছেন, যারা রাত হলেই মোজেজায় মেতে ওঠেন। জীবন মেতে ওঠে বর্নিল আমেজে। টাকা ওড়াতে কোনো দিকবিদ্বিক ভাবেও না সেই সময়ে। তাদের চারিদিকে থাকে বিভিন্ন ধরনের মাংসের আয়োজন। নানা রঙের বিদেশি পানীয়ের বোতল সাজানো থাকে। চলে জীবনের আনন্দঘন মুহুর্ত। এর থেকে বাদ যান না, ভদ্র সমাজের ব্যক্তিরাও। এবার কিছু এহেন ব্যক্তিদের সামনে আনলেন সমালোচক লেখিকা মিলি সুলতানা। তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কয়েকজন এই ধরনের ব্যক্তিকে নিয়ে একটি পোস্ট দিয়েছেন। তার সেই পোস্টটি হুবুহু তুলে ধরা হলো-
আমাদের দেশের সমাজরত্নরা একটুকরো মাংসের জন্য কত সুন্দর ভূমিকা পালন করে থকেন। এক পেগ হুইস্কির জন্য চোর চোট্টা ধান্ধাবাজদের পক্ষে মধুবচন দিয়ে যাচ্ছেন। শিমুল মুস্তাফা, ডা. আবদুন নূর তুষারকে দেখা গেছে জোনাকির ডাইনিং টেবিলে হাত ডুবিয়ে পোলাও কোর্মা খাসির রেজালা খেতে। বোঝাই যাচ্ছে খাবারের দিক দিয়ে রাজকীয়তা মেনটেইন করেন উক্ত দুই সমাজরত্ন। অপূর্ব- জোনাকির ঘরে ধুমায়ে মদ হুইস্কি কাজুবাদামের জম্পেশ কম্বিনেশনে মধ্যরাতের রহস্যময় আড্ডা চলে। শিমুল মুস্তাফাকে আমি কিছুটা ভিন্ন চরিত্রের ভাবতাম। শিল্প সাহিত্যে জগতের মানুষ, অন্তত নৈতিক চরিত্র বিসর্জন দেবেন না। কিন্তু আমাদের ভাবনায় শিমুল মুস্তাফাদের কি যায় আসে? তারা তো মাফিয়াদের ঠিকাদারি নিয়ে বসে আছেন।
শুনেছি শিমুল মুস্তাফা নাকি তার আদর্শের সাথে মেলে না, এমন কবিতা তিনি পড়েনই না। শুনেছি পেশা নয়, নেশা থেকেই নাকি গান ও আবৃত্তি চর্চা করেন । শিল্প তার কাছে আরাধনা। সিরিয়াসলি? নিজেকে দুর্নিবার নির্ভীক বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর বলে পরিচয় দেয়া শিমুল মুস্তাফা কিভাবে যেন গুন্ডা অথবা আন্ডারওয়ার্ল্ডের সদস্য হয়ে উঠলেন? স্পষ্টই দেখলাম শিমুল মুস্তাফার কাব্যিক এবং শৈল্পিক চরিত্রের সাথে ব্যক্তিচরিত্র সংঘর্ষপূর্ণ। সদ্য শেষ হওয়া এবং বিতর্কিত মিসেস ইউনিভার্স বাংলাদেশ ২০২২ এর কেলেংকারিতে শিমুল মুস্তাফা জড়িত এটা হজম করতে খানিকক্ষণ সময় লেগেছিল বৈকি। প্রতারক দম্পতি অপূর্ব -আফসানার বিরুদ্ধে অভিযোগকারী রাহার সাথে শিমুলের ফোনালাপ শুনে তব্দা খেয়ে গেলাম। শিমুল মুস্তাফার নোংরা মুখের অরুচিকর সংলাপগুলো খেয়াল করুন– “অন্তু (অন্তু করিম) তোমাকে কল দিবে, অন্তু বুঝাবে যে,সে ই তোমার টাকা তুলে দিবে, তুমি তার থেকে সাবধান, সে তোমাকে নিয়া লাগাই দিতে পারে, সে একটা মা***বাজ ছেলে। তুমি কি আমাদের সাথে পারবা? অপূর্ব বিপদে পড়লে আমরা তাকে তো বাঁচাবোই। সে আমাদের ফাউন্ডেশনের লোক। তুমি (রাহা) বেশি সটাং সটাং করবানা। তোমারে একঘন্টার ভিতর গুম করে ফেলবে। এই ঢাকা শহরে তোমারে কেউ পুইছাও দেখবেনা। তার টাকা আছে, থানা ১০ মিনিটে কিনে ফেলবে। কোর্ট কিনে ফেলবে। তোমাকে কি আমরা পায়েল বানাবো? এটা কি উচিত হবে??”
মানুষকে অনুপ্রাণিত ও উদ্দীপ্ত করা শিমুল মুস্তাফা টেলিফোনে রাহাকে প্রচ্ছন্ন হুমকি দিলেন। মাস্তানের মত ভাষা ব্যবহার করে রাহাকে শাসালেন। অপূর্ব’র পক্ষ নিয়ে শক্তপোক্ত দালালি করলেন। একজন স্মাগলার জুয়াড়ি পক্ষ নিয়ে শিমুল মুস্তাফা তার নৈতিকতাকে জলাঞ্জলি দিলেন এভাবে?? দেশের মানুষগুলো সরল আর বিশ্বাসপ্রবণ বলে শিমুল মুস্তাফাদের ভন্ডামি ভাঁওতাবাজি বুঝতে পারেনা। শিল্পের দোহাই দিয়ে শিমুল মুস্তাফার মত গম্ভীর অপরাধীরা পার পেয়ে যান। শিমুল মুস্তাফার শৈল্পিক চরিত্রের অপমৃত্যু হয়েছে। তাকে ঘন্টায় খেপ মারা দালাল ছাড়া আর কিইবা বলা যায় !! এই শিমুল মুস্তাফারা অপূর্ব’দের পালিশ করা চকচকে জুতোর গায়ে জমাট বাঁধা ধুলোবালি নিজেদের পরনের জামা দিয়ে মুছে সাফ করে দেন। শিমুল মুস্তাফারা আজীবন অপূর্বদের ক্রীতদাস হয়ে থাকতে ভালোবাসেন।
উল্লেখ্য, শিমুল মোস্তফা একজন নন্দিত কবিতা আবৃত্তিকার। তার কবিতা কণ্ঠের মাধ্যমে শ্রোতাদেরকে আকর্ষিত করেন। তিনি সাধারণত স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে নানা ধরনের কবিতা আবৃত্তি এবং থিয়েটার করে থাকেন। তিনি অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদের ভাষা সৃষ্টি করেছেন। এভাবেই শিমুল মোস্তফা একজন জনপ্রিয় মানুষ হয়ে ওঠেন। তার কবিতার মাধ্যমে তিনি নতুন প্রজন্মকে সৃজনশীল ও প্রগতিশীল করতে উদ্বুদ্ধ করে থাকেন।