বাংলাদেশ পুলিশ নিয়ে প্রিতিনিয়তই প্রকাশ পেয়ে থাকে নানা ধরনের আলোচনা সমলোচনা। বিশেষ করে গেল কয়েকদিন ধরেই সোশ্যাল মিডিয়াতে একজন পুলিশের একটি বিতর্কিত ঘটনা নিয়ে চলছে তুমুল সমালোচনা। জানা গেছে জমি ও ফ্ল্যাট কেনার নামে স্ত্রীর ছোট ভাই ও বোনের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে এক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।
শুধু তাই নয়, খাগড়াছড়ি পার্বত্য অঞ্চলের মানিকছড়ি এলাকায় একই পাহাড় দুই জনের কাছে বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। উপ-পরিদর্শক (এসআই) থেকে সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) পদে পদোন্নতি পাওয়া এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষ-দুর্নীতির বিভিন্ন অভিযোগে পুলিশ সদর দফতর তদন্ত করছে। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রয়েছে। শিগগিরই তাকে বরখাস্ত করা হতে পারে বলেও বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।
অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তার নাম এনামুল হক শোভা। তিনি সিলেটের লালবাজার এলাকায় বাংলাদেশ পুলিশের স্পেশাল ইউনিট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)-৭-এ এএসপি হিসেবে কর্মরত আছেন। যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী তাজুল ইসলাম মামুন ও তার বোন মর্জিনা বেগম এএসপি এনামুলের বিরুদ্ধে চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি আইজিপি কমপ্লেন্ট সেলে অভিযোগ করেন। অভিযোগটি তদন্ত করে ২০ জুলাই প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। অভিযোগকারী মর্জিনা আক্তার ও মামুন এএসপির স্ত্রীর ছোট বোন ও ভাই। এই দুই ব্যক্তি তাদের জমি, প্লট, ফ্ল্যাট, দোকান, নগদ টাকা ও ডলার আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন।
এনামুল হক শোভা খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি থানায় এসআই পদে কর্মরত ছিলেন। এদিকে এনামুল হক আমেরিকায় অবস্থানরত তার শ্যালক তাজুল ইসলাম মামুনকে জানান, মানিকছড়িতে একটি জায়গা বিক্রি হবে। মামুন সেখানে গিয়ে দেখেন এটি একটি পাহাড়। মামুন তাকে বলেন, পাহাড় বিক্রি করা আইনত নিষিদ্ধ। পাহাড় বিক্রি কিভাবে? তখন এনামুল হক মামুনকে বলেন, তুমি টাকা দাও, বাকিটা আমি দেখব। আমি একজন পুলিশ। আমাকে দিয়ে সবই সম্ভব।তুমি তোমার লাভ পেলেই যথেষ্ট।’
এরপর এনামুলকে আট লাখ টাকা দেন মামুন। মামুন জানান, ২০২০ সালে একই পাহাড় ৪০ লাখ টাকায় অন্য এক ব্যক্তির কাছে বিক্রি করেন এনামুল। তবে মামুন তার আট লাখ টাকা ফেরত দেননি। টাকা দিয়েও পাহাড় না পেয়ে ক্ষুব্ধ মামুন পুলিশের মহাপরিদর্শকের (আইজিপি) কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।
এএসপি এনামুল হকের গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের এখলাসপুর এলাকায়। অভিযোগকারীরা জানান, পুলিশে যোগদানের পর থেকে এনামুল ঢাকা, নোয়াখালী, সিলেট ও বান্দরবানে বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি গড়ে তুলেছেন। ঢাকায় তার প্লট, ফ্ল্যাট, নোয়াখালীতে একাধিক বাড়ি, বান্দরবানে পাহাড় ও বাগান রয়েছে।
প্রসঙ্গত, এ দিকে এই ঘটনা নিয়ে এখন চলছে বেশ হৈচৈ। বিশেষ করে একজন পুলিশ কর্মকর্তার এ ধরনের ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ মেনে নিতে পারছেন না কেউই। তার বিরুদ্ধে অনেকেই নিতে বলেছেন আইনগত ব্যবস্থ।