‘খুনি শেখ হাসিনার বিচার দাবি ও ক্যাম্পাসে দখলদারিত্বের রাজনীতি বন্ধের দাবিতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে তিন দফা দাবি তুলে ধরেছেন সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ।
সোমবার (১২ আগস্ট) বিকেলে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ উপদেষ্টাদের বক্তব্যের সমালোচনা করেন।
সমাবেশে শিক্ষার্থীরা শেখ হাসিনা ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা করে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানান। একই দাবিতে ১৫ আগস্ট রাজপথে নামার ঘোষণা দেন তিনি। এছাড়া তারা উপদেষ্টাদের বক্তব্য প্রদানে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন। গণমাধ্যমকেও জনগণের কাতারে থেকে সংবাদ প্রচারের আহ্বান জানান।
এদিকে, খুনিদের পুনর্বাসন ও বিপ্লব নস্যাৎ করার ষড়যন্ত্র চলছে বলে আশঙ্কা করে ১৫ আগস্ট রাজপথে অবস্থানসহ বেশ কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে শিক্ষার্থীদের।কর্মসূচির অংশ হিসেবে মঙ্গলবার সারা দেশে মুসলমানদের রোজা রাখা আর অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের প্রার্থনার আহ্বান জানানো হয়েছে।
প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্ট অ্যালায়েন্সের কর্মসূচি: সোমবার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী অ্যালায়েন্স একগুচ্ছ নির্দেশনাসহ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। নির্দেশনায় তারা সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দ্রুত ঢাকায় ফেরার আহ্বান জানিয়েছে। তারা উল্লেখ করেছে, মঙ্গলবার সৃষ্টিকর্তার কাছে দেশের মঙ্গল কামনায় সারা দেশে মুসলিমদের জন্য রোজা পালন কর্মসূচি ঘোষণা করা হলো এবং সারা দেশে হিন্দুদের জন্য মন্দিরে বিশেষ পূজা কর্মসূচি ঘোষণা করা হলো। একই সঙ্গে বৌদ্ধ এবং খ্রিষ্টানদের জন্য প্রার্থনা কর্মসূচি।
খুনি শেখ হাসিনার বিচারের দাবিতে ১৫ আগস্ট সারাদেশে রাজপথে অবস্থান নেব বলেও তারা উল্লেখ করেন। শাপাশি অ্যালামনাইরা বিদেশে বিশ্বের সব গুরুত্বপূর্ণ শহরে আন্তর্জাতিকভাবে বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবেন বলে জানানো হয়।
সমন্বয়কারী হাসনাত বলেন, উপদেষ্টাকে খুনিদের পুনর্বাসনের বক্তব্য দিতে দেখেছি। আপনাদের মনে করিয়ে দিতে চাই, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আপনারা উপদেষ্টা হয়েছেন। সুতরাং যখন কোনো বক্তব্য দেবেন আপনার সামনে যেন ৫ আগস্টের গণভবনের চিত্র মাথায় থাকে, পার্লামেন্টের চিত্র মাথায় থাকে।
হাসনাত উপদেষ্টাদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যারা স্বৈরাচার পুনর্বাসন করতে চায়, যারা খুনি হাসিনাকে পুনর্বাসনের মতো বক্তৃতা দিতে চায়- আমরা ছাত্ররা যেভাবে তাদের উপদেষ্টা বানিয়েছি, সেভাবে তাদের গদি থেকে সরাতেও দ্বিধা করব না।
যারা খুনিদের পুনর্বাসনের জন্য ব্যাকস্টেজে ম্যাকানিজম করছেন, আপনাদের বিষদাঁত ভেঙে দেব। বক্তব্য প্রদানে সময় সচেতন থাকতে হবে উপদেষ্টাদের। না হলে আপনাদের ছাত্রজনতা প্রতিহত করবে। খুনিদের পুনর্বাসনের কোনো ধরনের চিন্তা করবেন না, যোগ করেন হাসনাত।
গণমাধ্যমকে সতর্ক হওয়ার কথা জানিয়ে এ সমন্বয়ক আরও বলেন, কিছু গণমাধ্যম ফ্যাসিবাদকে পুনর্বাসনের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হচ্ছে। আমরা আপনাদের আহ্বান করি, আপনারা জনগণের কাতারে নেমে আসুন।
হাসনাত আবদুল্লাহ আরও বলেন, আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি, খুনি হাসিনা ও তার সহযোগীদেরকে প্রধান আসামি করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা করতে হবে। রক্তের দাগ এখনো শুকায়নি, আহতরা হাহাকার করছে। আপনাদের স্পর্ধা হয় কীভাবে জনগণকে অস্বীকার করে খুনিদের পুনর্বাসন করার।
আমাদের সংগ্রাম ছিল সন্ত্রাসী ছাত্রলীগের ক্যাম্পাস দখলের বিরুদ্ধে; দখলদারিত্বের রাজনীতি পুনর্বাসন হতে দেওয়া হবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।