বিএনপির ফরিদপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ বলেন, ‘আওয়ামী লীগের পায়ের তলায় মাটি নেই। তারা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কে ভিসা স্যাংশন খাইছে কে খাই নাই সেটা নিয়েই ব্যস্ত।
বুধবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ মোড়ে বিএনপির আঞ্চলিক কার্যালয়ে সরকার পতনের এক দফা দাবি আদায়ে ফরিদপুর জেলা ও মহানগর বিএনপি আয়োজিত ফরিদপুর বিভাগীয় রোডমার্চের প্রস্তুতি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শামা ওবায়েদ বলেন, আওয়ামী লীগের সংগঠন বলে কিছু নেই। আওয়ামী লীগ বলে একটা জিনিস আছে, সেখানে কিছু দুর্নীতিবাজ আছে। তাদের কাজ বাংলাদেশের মানুষের টাকা চুরি করে বিদেশে পাচার , দুর্নীতি, খুন, গুম, মামলা করা। এগুলো ছাড়া আওয়ামী লীগের এখন কোনো কাজ নেই।
তিনি আরও বলেন, ফরিদপুর বিভাগের পাঁচটি জেলা বিএনপি, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও শহীদ জিয়ার শক্ত ঘাঁটি। ৩ অক্টোবর ফরিদপুর বিভাগীয় রোডমার্চ হবে ইতিহাসের সেরা রোডমার্চ। ফরিদপুর বিভাগীয় রোডমার্চের মাধ্যমে এই দুর্নীতিবাজ ও ফ্যাসিবাদী সরকারকে উৎখাতের আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নুল আবদিন ফারুকের সভাপতিত্বে প্রস্তুতি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা, বীর মুক্তিযোদ্ধা জহরুল হক শাহজাদা মিয়া, ফরিদপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও বিএনপির জাতীয় কমিটির সদস্য সৈয়দ মোদাররেস আলী ইছা, ফরিদপুর বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম, খন্দকার মাশুকুর রহমান মাশুক প্রমুখ।
এছাড়া বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সহ-সভাপতি আসলাম মিয়া, রাজবাড়ী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট লিয়াকত আলী বাবু, সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, রাজবাড়ী জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক হারুন উর রশিদ প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু বলেন, এই রোডমার্চ ফ্যাসিবাদী সরকার উৎখাতের আন্দোলন। এই রোডমার্চের পরই চূড়ান্ত আন্দোলন হবে। সে আন্দোলন হবে সরকার উৎখাতের আন্দোলন। এই অবৈধ ও অনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী ১৯৯৫/৯৬ সালে আন্দোলন করেছিলেন। তখন তিনি (শেখ হাসিনা) বলেছিলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। তিনি বলতেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া কোনো নির্বাচন মেনে নেবেন না। শেখ হাসিনা এই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পক্ষে প্রচারণা চালান। আর এখন তিনি অবৈধভাবে ক্ষমতায় আছেন এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিচ্ছেন না। কারণ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে তারা ভোট চুরি ও ডাকাতি করতে পারবে না।
তিনি আরও বলেন, এই এক দফা আন্দোলন বিএনপি ক্ষমতায় আসার জন্য নয়, এই আন্দোলন জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার আন্দোলন। কিছুদিন আগেও এই অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলছিলেন আমার অপরাধ কি? সবাই আমাকে সরানোর ষড়যন্ত্র করছে। কিন্তু আমি বলি, যে প্রধানমন্ত্রী নিজের অপরাধ বোঝেন না, তিনি কি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার যোগ্য?
আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, এই অবৈধ সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিএনপির এক হাজার ৫০০ নেতা-কর্মীকে হত্যা করেছে। প্রায় ৭০০ নেতাকর্মী নিখোঁজ হয়েছেন। এ ছাড়া প্রায় লাখ লাখ নেতাকর্মীর নামে মামলা দেওয়া হয়েছে। এই অবৈধ প্রধানমন্ত্রীকে হত্যা, গুম, নির্যাতন, লাঞ্ছনা, মামলা, নির্যাতনের শাস্তি পেতে হবে। এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট ও বিদেশে পাচার হয়েছে। ফরিদপুর থেকে বিদেশে পাচার হয়েছে ২০০ কোটি টাকা, তাহলে সারা বাংলাদেশ থেকে কত টাকা পাচার হয়েছে?
প্রস্তুতি সভায় রাজবাড়ী জেলা বিএনপি, ফরিদপুর জেলা ও মহানগর বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল, স্বচ্ছাসেবক দল, কৃষক দলসহ বিএনপি অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।