জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আর প্রায় বছর খানেক বাকি এরমধ্যে হঠাৎ করে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত সচিব মোঃ মকবুল হোসেনকে এবং এর দুদিন পর তিনজন এসপিকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর বিষয় নিয়ে শুরু হয়েছে আলোচনা এবং সেই সাথে দেখা দিয়েছে প্রশ্ন। তবে হঠাৎ করে তাদের এভাবে অবসরে পাঠানো হয়েছে কেন- এমন প্রশ্নের স্পষ্ট কোনো কারণ কোনো মন্ত্রনালয় থেকে উল্লেখ করা হয়নি। তবে কিছু কিছু বিষয় সামনে এসেছে এবং এই বিষয়গুলো মন্ত্রীরা জানিয়েছেন। প্রশাসনের তিনজন পুলিশ সুপার (এস পি) পদমর্যাদাসম্পন্ন কর্মকর্তাকে হঠাৎ করে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠিয়ে দেয়া প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, অন্য একদিন এ বিষয়ে কথা বলবো।
গত ১৯ অক্টোবর সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন। এতে সভাপতিত্ব করেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী ড. আ ক ম মোজাম্মেল হক। বৈঠকে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন উপস্থিত ছিলেন।
সাংবাদিকরা মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের কাছে তিন পুলিশ সুপারের বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা রুটিন ওয়ার্ক। আইন অনুযায়ী সরকার ২৫ বছর পর যেকোনো কর্মকর্তাকে অবসরে পাঠাতে পারে। সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যারা আছেন, তাদের কাছে হয়তো মনে হয়েছে তাদের (পুলিশ কর্মকর্তা) কাছে কোনো তথ্য আছে। যে কারণে তাদের সার্ভিস সন্তোষজনক নাও হতে পারে।
এ সময় পাশে থাকা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে অন্য একদিন কথা বলব।
যদিও পুলিশ সদর দফতর তাদের অবসরের নথিতে বলেছে, তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেস”বুকে সরকারবিরোধী বিভিন্ন তথ্য আদান প্রদান করতেন। আর অবসরের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮-এর ৪৫ ধারার বিধান অনুযায়ী সরকারি চাকরি থেকে অবসর দেওয়ার বিষয়টি জনস্বার্থে করা হয়েছে।
এদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান তাদের অবসর দেওয়ার বিষয় নিয়ে একটি গণমাধ্যমকে বলেছেন, তারা কোনো কাজ করেন না। উপস্থিতি দিয়ে চলে যান। ৮-১০ জন কনস্টেবল তাদের পিছনে থাকে। তাদের বিরুদ্ধে ফে”সবুকে ভুয়া খবর আদান প্রদান করার অভিযোগ রয়েছে। পুলিশ সদর দপ্তর আমাদের কাছে তাদের অবসরের প্রস্তাব পাঠালে আমরা তা বাস্তবায়ন করি।
সিআইডির অবসরপ্রাপ্ত এসপি আবদুল্লাহেল বাকী তার বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে গণমাধ্যমকে বলেন, আমি ফেসবুক ব্যবহার করি না। এখন তারা (সরকার) অনেক কিছু বলতে পারে । কিন্তু আমি কাজ না করলে কয়েকদিন আগেও তারা আমাকে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে যোগ দিতে দুবাই পাঠাতেন না। অনেকদিন আমার পদোন্নতি হয়নি। কেন দেওয়া হয়নি জানি না।
গত ১৬ ই অক্টোবর তথ্যসচিব মকবুল হোসেনকে অবসরে পাঠানো হয। স্বাভাবিক নিয়মে তার চাকরির মেয়াদ শেষ হওয়ার আরো প্রায় বছর খানেক বাকি রয়েচে। আর এর আগেই তাঁকে অবসর নেওয়ার আদেশ প্রদান করে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর একদিন পর সোমবার অর্থাৎ ১৭ ই অক্টোবর তিনি কোন কিছু টের পেয়ে বলেন, বিরোধী দলের সাথে আমার কোন ধরনের কোনো সম্পর্ক নেই। তাছাড়া ঠিক কি অপরাধে এক বছর চাকরির মেয়াদ বাকি থাকতেই তাকে অবসরে পাঠানো হয়েছে, সে বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। তাছাড়া তিনি আরো উল্লেখ করেন , তারেক রহমানকে আমি কখনো সরাসরি কাছ থেকে দেখিনি এবং কখনো দেখার ইচ্ছাও নেই।