অধ্যাপক মিজানুর রহমান বাংলাদেশের মানুষের কাছে খুব পরিচিত একটি মুখ। মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান হিসেবে তিনি বেশি পরিচিতিলাভ করেছেন। মিজানুর রহমান ঢাকা ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক ও অধ্যাপক হিসেবেও কর্মরত ছিলেন। সম্প্রতি তিনি তার এক বক্তব্যে বলেছেন বঙ্গবন্ধুর চামড়া দিয়ে ডুগডুগি বানাতে চেয়েছে, তারাই মন্ত্রী।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক মিজানুর রহমান বলেছেন, যারা বলেছেন বঙ্গবন্ধুর চামড়া নিয়ে ডুগডুগি খেলবেন, তাদের মন্ত্রী করা হয়েছে। তারা আবার জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু বলে এদেশের বাতাস কাঁপিয়ে দিচ্ছে।
গতকাল বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ‘ইন্ডিয়ান মিডিয়া করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন (আইএমসিএবি)’ আয়োজিত ‘১৫ আগস্ট: আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। সেক্টর কমান্ডার ফোরামের মহাসচিব বীরমুক্তিযোদ্ধা সাংবাদিক হারুন হাবিবের সভাপতিত্বে আইএমসিএবি সভাপতি বাসুদেব দার, বিএফইউর সাবেক সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, ডিইউজের সাবেক সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ ও বিএফইউর মহাসচিব দীপ আজাদ প্রমুখ বক্তব্য দেন। অধ্যাপক মিজানুর রহমান বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশে জাতির পিতাকে অস্বীকার করলে, মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করলে ফৌজদারি মামলায় অনেক শাস্তি ভোগ করতে হয়। কিন্তু এদেশে উল্টো পুরস্কৃত করা হচ্ছে। তারা রাজনীতি করছে।
তিনি বলেন, ১৫ আগস্টের প্রাণনাশকারীরা বিপথগামী নয়, ষড়যন্ত্রকারী। অনেক ভেবেচিন্তে তারা এ প্রাণনাশকাণ্ড ঘটিয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছিল মূলত অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে ধ্বংস করতে। মানবাধিকার কমিশনের সাবেক এই চেয়ারম্যান বলেন, এ ধরনের ঘটনা ঘটবে জেনেও তৎকালীন সামরিক বাহিনীর সদস্যরা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। একই কথা খালেদ মোশাররফের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য যাকে আমরা আমাদের মনে করি। প্রতিবাদে সেদিন একটি গুলিও চালানো হয়নি। বরং প্রাণনাশের পর প্রাণনাশকারীদের পুরস্কৃত ও পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে প্রাণনাশের পেছনের কুশীলবদের ইতিহাসে অন্তর্ভুক্ত করতে কমিশন গঠনের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, এ তথ্য ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ও জাতির সামনে তুলে ধরতে হবে।
মিজানুর রহমান বলেন, ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ ছিল মানবসৃষ্ট ও কৃত্রিম। কিউবার সঙ্গে বাণিজ্যের কারণে চট্টগ্রাম বন্দরে চাল খালাস না করেই জাহাজ ফিরিয়ে নেয় আমেরিকা। কারণ কিউবার সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর বাণিজ্য যুক্তরাষ্ট্রের মুখের ওপর উঠেছিল। এমনকি তারা সেদিন বঙ্গবন্ধুকে হুমকি দিয়েছিল যে তাকে শাস্তি দেওয়া হবে। এরই ধারাবাহিকতায় দেশি-বিদেশি শক্তির হাতে বঙ্গবন্ধুকে প্রাণনাশ করা হয়। মিজানুর রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধু এদেশকে দুর্নীতিমুক্ত, দারিদ্রমুক্ত, অসাম্প্রদায়িক ও প্রশাসনে বিকেন্দ্রীকরণের সূচনা করেন। কিন্তু শত্রুরা তা সহ্য করেনি। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন কতদূর বাস্তবায়িত হয়েছে তা এদেশের এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হওয়া উচিত।
প্রসঙ্গত, বঙ্গবন্ধু ছিলেন সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী। তিনি বাংলাদেশের জাতির পিতা। তিনি হলেন বাংলার কৃতি সন্তান। বঙ্গবন্ধু ছিল বলেই বাংলাদেশ আজ একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে পৃতিবীর বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে রয়েছে। বঙ্গবন্ধুর মত এমন শ্রেষ্ঠ সন্তান আর আসবে কিনা বাংলার মাটিতে সন্দেহ আছে।