কয়েকদিন আগে ছাত্রলীগের একটি সম্মেলেন বক্তব্য দিতে গিয়ে মঞ্চ ভেঙ্গে পড়ে, এই ঘটনার পর অনেকটা সতর্ক থাকছেন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এবার তিনি ফের নেতাকর্মীদের ওপর বিরক্তি প্রকাশ করে বক্তব্য দেওয়া বন্ধ করে দিলেন। এমন ঘটনা ঘটেছে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভায়। সেখানে তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের ভিড়ের কারণে তিন তিনবার বক্তব্য বণ্ধ করে দেন। এমনকি তিনি একবার ডায়াস থেকে দূরে সরে যান। পরে অবশ্য বক্তব্য শেষ করেন তিনি।
মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর ফার্মগেটে বাংলাদেশ কৃষি ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এ ঘটনা ঘটে। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন ওবায়দুল কাদের। মঞ্চের সামনে নেতাকর্মীদের ভিড়ে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। উৎসুক নেতাকর্মীদের মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ ও সামনে দাঁড়িয়ে সেলফি তোলায় ভিডিও করতে পারছিলেন না গণমাধ্যমকর্মীরা।
ওবায়দুল কাদের প্রধান অতিথির বক্তব্য দিতে মঞ্চে উঠে সামনে দাঁড়ানো নেতাকর্মীদের সরে যেতে বলেন। তিনি বলেন, আজকের এই আলোচনা সভায় এসে কিছু বলতে দাঁড়িয়ে আমি বিব্রত বোধ করছি। কারণ তিন-তিনবারের সাধারণ সম্পাদক আমাকে যখন বলা হয়, তখন আমি আমি লজ্জা পাই, লজ্জা পাই শৃঙ্খলার অভাব দেখে। কেন এখানে লোকজন দাঁড়িয়ে আছে?’
এ সময় মঞ্চের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা লোকজনকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা। এরপর ওবায়দুল কাদের আবার বক্তব্য শুরু করেন; কিন্তু বক্তব্য বন্ধ করে আবার বলেন- ‘তারপরও সবাই দাঁড়িয়ে আছে? এত কথা বলার পরও! আমি কিন্তু বক্তৃতা করব না।’
নেতাকর্মীদের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা মুখে বলি আমরা বঙ্গবন্ধুর সৈনিক, আমরা বলি শেখ হাসিনার কর্মী; কিন্তু আমরা সবাই নেতা হই, আমরা সবাই মঞ্চে উঠি। তখন তখন আদর্শের কথা মনে থাকে না।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এত নেতা! নেতাদের ভিড়ে কর্মীদের চেনা কঠিন। নেতাদের ভিড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্চ ভেঙে পড়ে। আমাদের এত নেতার দরকার নেই। একটি স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য একটি স্মার্ট জনবল প্রয়োজন। স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য সুশৃঙ্খল আওয়ামী লীগ চাই।
এ পর্যায়ে কয়েক মিনিট কথা বলার পর তৃতীয়বারের মতো বিরক্ত হন ওবায়দুল কাদের। মঞ্চের সামনে জড়ো হওয়া নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘কোথায় আজ শৃঙ্খলা? আবারো সরলা না এখান থেকে?’
একপর্যায়ে ওবায়দুল কাদের বক্তব্য বন্ধ করে দিয়ে মঞ্চ ত্যাগ করেন। এ সময় পুলিশ সদস্যরা এসে নেতাকর্মীদের সামনে থেকে সরিয়ে দেয়। এরপর আবারও বক্তব্য শুরু করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। এ সময় ওবায়দুল কাদের বলেন, নেতারা মঞ্চে বসেন। বক্তৃতা করতে না পারলে যাদের মুখের ওপর বর্ষার আকাশের মেঘ এসে যায়, মন খারাপ হয়ে যায়। সবার বক্তৃতা করতে হবে কেন? আওয়ামী লীগকে সুশৃঙ্খল ও কলঙ্কমুক্ত হতে হবে বলে উল্লেখ করেন ওবায়দুল কাদের।
তিনি ছাত্রলীগের সম্মেলনে বক্তব্য দিতে গিয়ে মঞ্চ ভেঙ্গে পড়ে যান। এই ঘটনার পর তিনি নেতাকর্মীদের অধিক উপস্থিতি দেখলে তাদেরকে সেখান থেকে সরিয়ে দেয়ার বিষয়টি দেখা যাচ্ছে। ‘ঘর পোড়া গরু সিঁদুরে মেঘ দেখলে যেমন ভয় পায়’ বিষয়টি অনেকটা তেমনই, এমনটি মনে করছেন অনেকে।