অ্যাড্রিয়েন আরশট-রকফেলার ফাউন্ডেশন রেজিলিয়েন্স সেন্টার বাংলাদেশের প্রধান তাপ কর্মকর্তা বুশরা আফরিন বলেন, উচ্চ তাপমাত্রার কারণে মানবদেহের কার্যক্ষমতা কমে যায়। আগামী বছরের গ্রীষ্ম এ বছরের চেয়ে বেশি গরম হতে পারে। জলবায়ু পরিবর্তন, বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির মতো এসব জটিল প্রাকৃতিক সমস্যা মোকাবেলার জন্য আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। সমন্বিত উদ্যোগ ঢাকা শহরের তাপমাত্রা কমাতে পারে।
প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি) সম্মেলনে সেন্টার ফর অ্যাটমোস্ফেরিক পলিউশন স্টাডিজ (সিএপিএস) এবং বাংলাদেশ রিসোর্স সেন্টার ফর ইনডিজেনাস নলেজ (বিআরসি) যৌথ আয়োজনে ‘শহরাঞ্চলে তাপমাত্রা বৃদ্ধি: কারণ ও করণীয়’ শীর্ষক একটি গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সহ-সভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এম. শহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় ড. এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট খোদেজা নাসরিন আক্তার হোসেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের ইমেরিটাস প্রফেসর ড. এম ফিরোজ আহমেদ। আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রের (ক্যাপস) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার। বৈঠকে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন বারসিকের সমন্বয়ক মো. জাহাঙ্গীর আলম।
বুশরা আফরিন বলেন, ‘আমরা একটি সিটি নেটওয়ার্ক তৈরির পরিকল্পনা করছি, জলবায়ু অভিবাসন নিয়ে কাজ করছি। যতটুকু সম্ভব অ্যাডাপটেশন করতে হবে এবং মিটিগেশনের উপায়গুলো খুঁজে বের করতে হবে। এছাড়া শহরের বিভিন্ন স্থানে গাছ লাগাতে হবে। বাড়ির ছাদে গাছ লাগানোর উদ্যোগ নিতে হবে। এটি উচ্চ তাপমাত্রার শেভিংয়ের নিয়ামক হিসাবে কাজ করবে।
কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, “তাপমাত্রা বৃদ্ধির অনেক বৈশ্বিক কারণ থাকলেও স্থানীয় কারণগুলো গুরুত্বপূর্ণ। তাই তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে স্থানীয় বিষয়গুলোকে প্রাধান্য দিতে হবে। ঢাকা শহরের ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে প্রতিটি জায়গায় গাছ লাগাতে হবে। শহরের ফাঁকা জায়গা ও ছাদের বাগান বাড়াতে হবে, রোড ডিভাইডারে সৌন্দর্যবর্ধনের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের উপকারী গাছ যেমন ফলদ, বনজ, ঔষধি গাছ মাটির ধরন অনুযায়ী রোপণ করতে হবে। পরিবেশ উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য গাছ নিধন নয় বরং গাছকে স্থানান্তরের ব্যবস্থা করতে হবে, যেমনটি উন্নত দেশগুলোতে হয়ে থাকে।তিনি পরিকল্পনার মাধ্যমে গাছ স্থানান্তরের ব্যবস্থাসহ ১০টি সুপারিশ করেছেন যেখানে উন্নয়ন বাধ্যতামূলক।
খোদেজা নাসরিন আক্তার হোসেন সময়োপযোগী গোলটেবিল বৈঠকের সংগঠনকে সাধুবাদ জানিয়ে বলেন, পরিবেশ রক্ষায় আমাদের সবাইকে কাজ করতে হবে। এ জন্য সরকারের পাশাপাশি জনগণকে এগিয়ে আসতে হবে। নগরের তাপমাত্রা কমাতে নীতিগতভাবে যে উদ্যোগ দরকার তার জন্য সংসদে কথা বলব।
বিএপির সহ-সভাপতি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এম শহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা যে প্রক্রিয়ায় বর্তমান অবস্থায় পৌঁছেছি তাতে আমাদের আগের অবস্থানে ফিরে যেতে হবে।
পিআইবির মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ বলেন, “বর্তমানে যেসব সৌন্দর্য বর্ধনকারী ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে সেগুলোর বেশিরভাগ দেয়ালই কাঁচের, যা শহরের তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখছে। এক্ষেত্রে আমরা প্রতিটি উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের আগে জনস্বাস্থ্যের কথা ভাবতে হবে।বৈঠকে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতরের (বিএমডি) আবহাওয়াবিদ এস এম কামরুল হাসানসহ বারসিকসহ পরিবেশবাদী সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।