বিয়ে করলেও বেশিদিন একসঙ্গে থাকেননি তানিয়া আক্তার ও আজিজুর রহিম। তানিয়া থাকত ঢাকায় আর স্বামী থাকত কুমিল্লায়।
রোববার রাজধানীর হাজারীবাগে যে ফ্ল্যাট থেকে তানিয়ার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে বাড়ির মালিক মোস্তাকিম আহমেদ ইলাইম শাহিনকে আটক করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, বাড়ির মালিক তানিয়া ও শাহীনের মধ্যে সম্পর্ক ছিল। সেই সম্পর্কের ভিত্তিতে খুনিদের তালিকায় প্রথম সন্দেহভাজন হন শাহীন।
এ বিষয়ে তানিয়ার স্বামী আজিজুর যুগান্তরকে বলেন, তার (তানিয়া) বাবার বাড়ি ছেড়ে শাহীনের ফ্ল্যাটে যাওয়ার কথা আমাকে কেউ বলেনি। প্রেম করে বিয়ে করলেও আমাদের সম্পর্ক ভালো যাচ্ছিল না। শুরু থেকেই সন্তান নিতে চাননি তানিয়া। আমি তাকে একবার দুবাই নিয়ে গিয়েছিলাম। তিনি সেখানেও থাকেননি। আমি গত তিন বছর ধরে দেশে পাড়ি জমাচ্ছি। আমি কুমিল্লায় থাকি তবে তানিয়া বেশির ভাগ সময় ঢাকায় থাকত। সে আমার কাছ থেকে ডিভোর্স চেয়েছিল। আমাদের উভয় পরিবার বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিল।
তিনি আরও বলেন, গত বুধবার তানিয়ার সঙ্গে আমার শেষ কথা হয়েছিল। এক সপ্তাহের মধ্যে তিনি কুমিল্লায় আসবেন বলে জানান।
শাহীন সম্পর্কে তিনি বলেন, শাহীনের সঙ্গে মাঝে মাঝে কথা হতো তানিয়া। আমি জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, তিনি ব্যবসা ও রাজনীতি নিয়ে কথা বলেছেন। সরল মনে বিশ্বাস করতাম।
তানিয়ার চাচা আলমগীর হোসেন দাবি করেন, শাহিন হাজারীবাগ ১৪ নম্বর থানার আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী ও বর্তমান নেতা। তানিয়াও আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তারা একে অপরকে দীর্ঘদিন ধরে চেনেন, অতীতে বিভিন্ন নির্বাচনে একসঙ্গে প্রচারণাও করেছেন। তানিয়ার মা আওয়ামী লীগের একজন সক্রিয় রাজনীতিবিদ। শাহীন তানিয়ার বাসায় নিয়মিত যাতায়াত করতো। সম্প্রতি তানিয়ার জন্মদিনও পালন করেছেন শাহীন। স্বামী থাকা সত্ত্বেও শাহীন বাড়িতে আসায় তিনিও বিস্মিত।
আলমগীর হোসেন আরও জানান, রাজধানীর লালমাটিয়া কলেজে পড়ার সময় ফেসবুকে প্রবাসী আজিজুরের সঙ্গে তানিয়ার পরিচয় হয়। 31 মার্চ, 2017, আমি নিজেই তাদের বিয়ে দিয়েছিলাম। তানিয়া ছিল স্বাধীন টাইপের।
শাহীন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা বলে পুলিশের একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে। তবে তার অবস্থান সম্পর্কে জানাতে পারেনি সূত্রটি।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন (অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) যুগান্তরকে বলেন, সন্দেহভাজন খুনি হিসেবে বাড়ির মালিক শাহীনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে দুই দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আমরা তার কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছি।
তিনি আরও বলেন, ধারণা করা হচ্ছে তানিয়া ও শাহীনের মধ্যে অনেক আগে থেকেই সম্পর্ক ছিল। তবে শাহীনের রাজনৈতিক অবস্থান সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না বলে দাবি করেন।