এম এ মান্নান ছিলেন একজন সাবেক সরকারি কর্মকর্তা এবং সেই সাথে তিনি ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশনের চেয়ারম্যানও ছিলেন। সুনামগঞ্জ-৩ আসন থেকে তিনি সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। বর্তমানে এম এ মান্নান গণপ্রজাতন্ত্রী সরকারের মাননীয় পরিকল্পনামন্ত্রী। সমপ্রতি তিনি তার এক বক্তব্যে বলেছেন দুষ্টু আমলাদের চাতুরিতে বিরক্ত হচ্ছেন মন্ত্রী।
প্রশাসনের অনেক নিয়ম অপ্রয়োজনীয়। ব্রিটিশ, পাকিস্তানি ও সামরিক শাসকেরা এসব করেছে, যার কোনো বাস্তবতা এখন নেই। কিন্তু অনেক দুষ্টু আমলা চতুরতার সাথে এসব বিধান ব্যবহার করছে। প্রধানমন্ত্রী এগুলো পরিবর্তনের নির্দেশ দিলেও এসব পরিবর্তন হচ্ছে না। আইনকে আইন দ্বারা প্রতিস্থাপন করতে হবে। আমরা সেটা করার চেষ্টা করছি। আমলাতন্ত্র নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাবেক আমলা পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি বলেন, দুষ্টু আমলাদের চালাকির কারণে তারা ঔপনিবেশিক আমলের অপ্রয়োজনীয় নিয়ম পরিবর্তন করতে পারেনি।
প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় জায়গায় পাওয়া যাচ্ছে না বলে মন্ত্রী দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, তাদের জবাবদিহি করার নিয়ম কঠোর নয়। এখনই সময় আইন সংস্কারের। কিন্তু তারা পারছে না।
বুধবার রাজধানীর লেক শোর হোটেলে ‘সরকারি অবকাঠামো প্রকল্প বাস্তবায়ন’ শীর্ষক গণসংলাপে তিনি এ কথা বলেন।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ, সিপিডি এবং একটি বেসরকারি গবেষণা সংস্থা এশিয়া ফাউন্ডেশন এই সংলাপের আয়োজক।পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘প্রশাসনের অনেক নিয়ম অপ্রয়োজনীয়। ব্রিটিশ, পাকিস্তানি ও সামরিক শাসকেরা এসব করেছে, যার কোনো বাস্তবতা এখন নেই। কিন্তু অনেক দুষ্টু আমলা চতুরতার সাথে এসব বিধান ব্যবহার করছে।
“প্রধানমন্ত্রী আমাদেরকে এগুলো পরিবর্তনের নির্দেশ দিয়েছেন, কিন্তু এসব পরিবর্তন ঘটবে না। আইনের বদলে আইন করতে হবে। আমরা সেটা করার চেষ্টা করছি।” তিনি বলেন, জনগণকে খুশি রাখা সরকারের অন্যতম লক্ষ্য, কিন্তু আমলাতান্ত্রিক আইনের বিধানের কারণে অনেক ক্ষেত্রে তা সম্ভব হয় না।
প্রকল্প পরিচালকদের আচরণে ক্ষুব্ধ পরিকল্পনামন্ত্রীও। তিনি বলেন, প্রকল্পের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হচ্ছেন প্রকল্প পরিচালক। কিন্তু দেখা যায়, পঞ্চগড়ের একটি প্রকল্পের পরিচালক ঢাকায় অবস্থান করায় জাতীয় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেউ কাজের কাছাকাছি থাকতে চায় না। জেলা-উপজেলা পর্যায়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদাধিকারী পাওয়া যাচ্ছে না; তাদের সুতা ঢাকায় থাকলেও সুতা কাটা যাচ্ছে না। ‘
অবকাঠামোকে দেশের প্রাণ বলে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, অবকাঠামো আমাদের মূল লক্ষ্য। এসব দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা। তবে প্রকল্প বাস্তবায়নে পরিবেশবান্ধব হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এম এ মান্নান আরও বলেন, দেশের গ্রামাঞ্চলে রাস্তা আন্ডারপাস করার পরিকল্পনা রয়েছে। তিনি বলেন, খামারিরা যেন বিনা বাধায় গরু নিয়ে রাস্তা পার হয় সে লক্ষ্য।
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক মো. ফাহমিদা খাতুনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সংসদ সদস্য এনামুল হক।
প্যানেলিস্টরা ছিলেন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি রিজওয়ান রহমান এবং পলিসি এক্সচেঞ্জ অব বাংলাদেশের চেয়ারম্যান এম মাসরুর রিয়াজ।
প্রসঙ্গত, আমলারা কোনো জনপ্রতিনিধি নন এবং দেশের সরকার পরিবর্তন হলেও তাদের উপর কোনো রকম প্রভাব পরেনা। তবে তারা সরকারের সব ধরণের কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকেন। তারা রাজনৈতিকমূলক কোন ঝামেলার শিকার হন না।