দলিত সম্প্রদায় আমাদের দেশের কিছু অবহেলিত সম্প্রদায়ের মধ্যে অন্যতম। তারা যেন আমাদের দেশের তথাকথিত সামাজিক বৈষম্য থেকে মুক্তি পেয়ে পুরোপুরি সামাজিক ভাবে নিজেদের স্থান গড়ে তুলতে পারে সেই বিষয়ে সরকারের এই সম্প্রদায়কে নিয়ে যে যুগান্তকারি পদক্ষেপের পরিকল্পনা রয়েছে সেইটা সবার সামনে তুলে ধরেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী। এই সম্প্রদায়ের সকল মানুষের মানসিক বিকাশের ব্যাপারেও সুন্দরভাবে পরামর্শ দেন তিনি।
সেলিনা হায়াত আইভী বলেন, “আমি ওরা (দলিতরা) যেখানে থাকে সেখানে বসে চাও খাই। তাদের তৈরি করা জিনিসও খাই। তিনি বলেন, “আমি মনে করি এটি শুধুমাত্র জাতিগত বৈষম্য দূর করার জন্য। জাত দেখি না। তাদের খাবার খাই না এই ধরনের নিচু মানসিকতা আমার ভালো লাগে না। তারা গলি পরিষ্কার না করলেও অত্যন্ত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন তাদের প্রতিটি কক্ষ, অগোছালো নয়।
মঙ্গলবার ডিআইটি এলাকা আলী আহমেদ চুনকা নগরীর লাইব্রেরি ও অডিটোরিয়ামে, ‘দলিত নারী সম্মেলনের’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, দলিতদের আবাসস্থল নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রী অর্থ বরাদ্দ দিয়েছেন। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন পেয়েছে ১০০ কোটি টাকা। এই অর্থ দিয়ে ১০ তলা বিশিষ্ট্য ছয়টা ভবন নির্মানের কাজ হাতে নিয়েছি। মেয়র বলেন, সিটি করপোরেশনের কর্মচারীরা যে মানসিকতা নিয়ে কাজ করবেন সেইটা আমি এখন পর্যন্ত গড়তে পারিনি। তাদের কাজের ভিতর কেমন যেন একটা ফাঁকিবাজি মনোভাব। আমার ২০০৩ সালের একটাই মাত্র শর্ত ছিল বাচ্চাদের লেখা পড়া সেটা নিয়ে তাদের ফাঁকিবাজির অন্ত নেই। একটা সরকারি স্কুল আছে। আমরা মধ্য-দিনের খাবার আমরা দেই।
তাদের ছেলেমেয়েদের জোর করেও স্কুলে পাঠাতে পারি নাই। এখন থাকার ব্যবস্থা, কোয়ার্টার দিচ্ছে, সব সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে। সরকার চায় না পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী থাকুক। নারীর ক্ষমতায়নের জন্য মন্ত্রী শেখ হাসিনা যতদূর জানি চেষ্টা করছে। আমার জানা মতে, আমি এমন নেতা, রাষ্ট্রনায়ক, দেখিনি। যারা নারীদের এত সুযোগ করে দেন। আইভী রহমান বলেন সমাজ থেকে উঠে এসে সরকারি চাকরি করে ভালো জায়গায় স্থান করে নিতে হবে। এই মানসিকতা মনে জাগ্রত করতে হবে।
আমি আপনাদের পাশে আছি। আমরা একটি স্কুল তৈরি করতে যাচ্ছি। তাদের জন্য কোটা থাকবে। আমি বৃত্তি দেব, ফ্রি পড়াবো। কোনো বৈষম্য থাকবে না। মেয়র বলেন, ‘তাদের এমন মানসিকতা তৈরি করতে হবে যে আমি কোনো বাধা সমাজের মেনে নেব না। আমি সমাজের সেই বাধা অতিক্রম করতে সক্ষম হব। একটি শক্তিশালী মনোভাব নিয়ে নিজেকে বিকশিত করে গড়ে তুলবো।
উল্লেখ্য: এই সম্প্রদায়ের প্রতি সেলিনা হায়াত আইভি যে সহানুভুতিশীল মনোভাব পোষন করলেন সেইটা সত্যিই দৃষ্টান্তমুলক। এমনই দৃষ্টান্তমুলক মনোভাব সমাজের সকল স্তর থেকে সবাইকে দেখানোর জন্য আহ্ববান জানিয়েছেন, এমনটাই উল্লেখ করে তিনি। তিনি আরো জানান এই সম্প্রদায়ের প্রতি সরকার কি কি পদক্ষেপ গ্রহন করেছে সেইটা তুলে ধরে এই সম্প্রদায়ের সবাইকে তাদের সামাজিক অবস্থান গড়ে তুলতে উৎসাহিত করা উচিৎ।