সম্প্রতি ইভ্যালি ইস্যুতে অনেকেরই নাম জড়িয়েছে। হেনস্তার শিকার হয়েছেন অনেকেই। অভিনেতা এবং শিল্পীঃ তাহসান খান জড়ানোর পর থেকে আরও বেশি ঘোলাটে হয়ে গেছে ইভ্যালি ইস্যুটা। এবার তাসানের মুখ থেকেই বেরিয়ে আসলো চাঞ্চল্যকর কিছু তথ্য। সম্প্রতি ইভ্যালি ইস্যুতে তার নামে মামলা হওয়ার পরে তিনি মুখ খুললেন।
‘যাঁদের নাম দেখে ইভ্যালিতে যুক্ত হয়েছিলাম, তাঁদের নাম বলতে পারব না। তাঁদের নাম বললে তো বাংলাদেশেই থাকতে পারব না।’ ই–কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির এক গ্রাহকের করা মামলার বিষয়টি নিয়ে কথা বলার একপর্যায়ে এমনটাই বললেন জনপ্রিয় গায়ক ও অভিনয়শিল্পী তাহসান খান।
মামলা প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ডালাসে থাকা সংগীতশিল্পী তাহসান খানের সঙ্গে শুক্রবার স্থানীয় সময় ভোর পাঁচটায় প্রথম আলোর কথা হয়। ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির এক গ্রাহকের করা প্রতারণার মামলায় যেকোনো সময় গ্রেপ্তার হতে পারেন অভিনয়শিল্পী তাহসান রহমান খান, রাফিয়াত রশিদ মিথিলা ও শবনম ফারিয়া। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) সাজ্জাদুর রহমান শুক্রবার সাংবাদিকদের বিষয়টি জানিয়েছেন। রাজধানীর ধানমন্ডি থানায় ৪ ডিসেম্বর প্রতারণার এই মামলাটি করেন ইভ্যালির গ্রাহক সাদ স্যাম রহমান। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে বিষয়টি জানাজানি হয়। শুক্রবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সাজ্জাদুর রহমান এ কথা বলেন।
কথায় কথায় তাহসান বললেন, ‘আমি শুনেছি ইভ্যালির ৪০ লাখ গ্রাহক, যে কোম্পানিতে আমি যুক্ত হওয়ার আগেই ৪০ লাখ মানুষ যুক্ত, যে কোম্পানির সঙ্গে দেশের বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান যুক্ত, দেশের প্রভাবশালী ব্যক্তিরা জড়িত, সেখানে আমি শুভেচ্ছাদূত হয়ে মাত্র দুটি ফেসবুক লাইভ করেছি। আমি কিন্তু বিজ্ঞাপনও করিনি। আর আমি বিজ্ঞাপনচিত্রে কাজ করলে যেকোনো প্রতিষ্ঠানের করতেই পারি। কারণ, তখন তো লিগ্যাল কোম্পানি। আমি আবারও বলছি, আমাকে স্পষ্ট বলা হয়েছিল, আপনারা কেন আমাদের সঙ্গে যুক্ত হবেন না?
আমরা এই দুটি প্রতিষ্ঠানের স্পনসর হয়েছি। জাতীয় ক্রিকেট দলের সঙ্গে আছি। আমি তো কোনো বিশেষজ্ঞ না যে বুঝে ফেলব, এই কোম্পানি ব্যাংক্রাপ্ট হবে। তারা আরও তিনটা নাম বলেছে, যা আমি আপানাকে বলতে পারব না, তাহলে হয়তো আমি বাংলাদেশেই থাকতে পারব না।’
বলতে নানা পারার কারণ কী জানতে চাইলে তাহসান বললেন, ‘বলতে পারব না। কারণ, তাঁরা এতটাই প্রভাবশালী যে তাঁদের নাম বলা সম্ভব নয়। তাঁদের অ্যাডভার্টাইজিং ফার্মের নামও বলতে পারব না। যখন দেখছি এই কোম্পানি তাদের অ্যাডভার্টাইজিং ফার্ম, এই মানুষগুলো তাদের সঙ্গে আছেন, এই প্রতিষ্ঠানে তো আমার আস্থা পাওয়া স্বাভাবিক। যে মানুষগুলোর নাম বলে আমাকে জয়েন করানো হয়েছে, তাঁদের নাম বলা তো সম্ভব না। কারণ, তাঁরা অসম্ভব ক্ষমতাধর মানুষ।’
মামলার কারণে আপনি যখন বিচারের কাঠগড়ায়—এই নামগুলো তো আজ হোক আর কাল হোক সামনে আসবেই। এ প্রসঙ্গে তাহসান বলেন, ‘তাঁদের নাম সামনে এনে আরও বিপদে পড়ব কেন। তাঁদের নাম বললে তো আমি বাংলাদেশেই থাকতে পারব না।’ তাহসানের কথা শুনে মনে হচ্ছিল তিনি আতঙ্কিতও। আতঙ্কিত কি না, জানতে চাইতেই বললেন, ‘যেকোনো দেশে এটাই নিয়ম। ক্ষমতার বলয়ের ভেতরে যাঁরা আছেন, তাঁদের ক্ষমতা বেশি। আমি ক্ষমতার বলয়ের বাইরের মানুষ। আমি একজন সংস্কৃতিকর্মী। আমি বেশি কিছু বলতে পারব না। মামলা যেহেতু হয়েছে, এখন আমাকে আমার মতো আইনি লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।’
মামলার খবরে যুক্তরাষ্ট্রে থাকা তাহসান খান বিব্রত বলেও জানালেন। তিনি বললেন, ‘এমন ঘটনা আমার জন্য অনেক বিব্রতকর। ভক্তদের ভালোবাসাই জাস্ট আমার ক্ষমতা। ভক্তদের ক্ষমতা ছাড়া তো আর কোনো ক্ষমতা নেই। ভক্তরা যেন আমাকে ভুল না বোঝেন। একদিন হয়তো পুরো ঘটনা নিয়ে আমি কোনো বইয়ে লিখব। যতটুকু পারি, ততটুকু গল্পটা বলব আরকি।’
অনেকটা বিব্রত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন। কথার দ্বারাই তিনি প্রকাশ করেছেন অনেকটা আদর কেউ আছেন তিনি।তবে আসলেই কি তাহসান এর সঙ্গে জড়িত কি না সে ব্যাপারে এখনও পরিষ্কার ভাবে কিছু বলা যাচ্ছে না। কি হতে যাচ্ছে এর পরবর্তীতে হয়তো সেটা জানার জন্য আমাদের আরও অপেক্ষা করতে হবে।