টানা ১৫ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকার পর শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ কখনো কল্পনাও করেনি যে তাদের এমনভাবে ক্ষমতা ছেড়ে চলে যেতে হবে। তবে, সাম্প্রতিক ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সেই অপ্রত্যাশিত ঘটনাও ঘটে গেছে। ৫ আগস্টের পর থেকে দলটির উপস্থিতি অনেকটাই ক্ষীণ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু ধীরে ধীরে দলটির নেতারা আবারও সরব হয়ে উঠছেন। বিশেষত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে স্ট্যাটাস দিচ্ছেন এবং গণমাধ্যমেও বিবৃতি পাঠাচ্ছেন তারা।
গত কয়েকদিন ধরে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা নির্বাচনের প্রসঙ্গেই বেশি আলোচনা করছেন। বিশেষ করে, শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় সাম্প্রতিক এক বিবৃতিতে দলের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। তিনি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান, আওয়ামী লীগ ছাড়া দেশে প্রকৃত নির্বাচন এবং সংস্কার সম্ভব নয়। তার এই বক্তব্যে স্পষ্ট ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে, দলটি আবার নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। যদিও দলের অধিকাংশ শীর্ষ নেতা এখন জেলে বা দেশের বাইরে অবস্থান করছেন।
অন্যদিকে, আওয়ামী লীগকে রাজনীতি থেকে নিষিদ্ধ করার বা অন্তত ১০ বছর রাজনীতি থেকে দূরে রাখার বিষয়টি সামনে এসেছে। এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। এ ব্যাপারে প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ। তিনি তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, আওয়ামী লীগের মতো ঐতিহ্যবাহী বৃহৎ, শক্তিশালী রাজনৈতিক দল, যে দলের নেতৃত্বে দেশ স্বাধীন হয়েছে এবং উন্নয়ন, অগ্রযাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে সে দলকে বাইরে রেখে নির্বাচনের কথা বলাটা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য এবং অযৌক্তিক।.
সজীব ওয়াজেদ জয় আরও বলেন, আওয়ামী লীগ আগের চেয়ে আরও শক্তিশালী হয়ে ফিরবে। তার বক্তব্যের সাথে একমত পোষণ করে মাহবুবউল আলম হানিফও বলেন, “বর্তমান পরিস্থিতিতে দলের নেতাকর্মীরা কিছুটা সংকটে রয়েছে, তবে এটাও ভুলে গেলে চলবে না যে ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করার ষড়যন্ত্র হয়েছিল। সেসময়ও দলটি ঘুরে দাঁড়িয়েছিল। অতীতের মতো এবারও আওয়ামী লীগ ঘুরে দাঁড়াবে এবং আগামী সংসদ নির্বাচনে অংশ নেবে। আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন সম্ভব নয়।”
এমন পরিস্থিতিতে বোঝা যাচ্ছে, দলের অনেকেই তলে তলে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে।