একজন মানুষ যে দলের সমর্থন করুক না কেনো সেই দলের প্রতি সদা শ্রদ্ধাশীল থাকা প্রয়োজন। দলকে ভালোবেসে দলের অগ্রগতির জন্য কাজ করে যাওয়া একজন নেতা বা কর্মীর একান্ত দায়িত্ব ও কর্তব্য। এমন কোনো কাজ করা যাবেনা যার ফলে দলের সুনাম ও খ্যাতি নষ্ট হয়ে যায়। যারা দলকে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসে মনেপ্রাণে তারা কখনই অপরাধমূলক কোনো কাজ করতে পারে না। সম্প্রতি জানা গিয়েছে তরুণীকে খারাপ কাজের পর ভিডিও ভাইরাল, যুবলীগ নেতা বহিস্কার!
পঞ্চগড়ের এক যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে মোবাইল ফোনে ভুয়া বিয়ের কথা বলে এক তরুণীকে (২০) একাধিকবার খারাপের কাজ অভিযোগ উঠেছে। একইসঙ্গে খারাপ কাজের পর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত হলেন পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার চিলাহাটি ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মনোয়ার হোসেন মিন্টু। এদিকে সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে মিন্টুকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। সে দেবীগঞ্জ উপজেলার চিলাহাটি ইউনিয়নের পশ্চিম তিস্তাপাড়া গ্রামের গোলাম রব্বানীর ছেলে।
মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাতে মনোয়ার হোসেন মিন্টুকে সাময়িক বরখাস্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যুবলীগের দেবীগঞ্জ উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ মিঠু। গত শুক্রবার (৯ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় পঞ্চগড়ের বোদা থানায় ভিকটিম বাদী হয়ে একটি লিখিত অভিযোগ করেন এবং শনিবার (১০ সেপ্টেম্বর) মামলা করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, দুজনেই পঞ্চগড় জেলায় বসবাস করায় ওই তরুণী তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মনোয়ার হোসেন মিন্টুর সঙ্গে পরিচয় হয়। এরপর কথোপকথনের একপর্যায়ে মিন্টু সিঙ্গেল থাকার কথা বলে ভিকটিমকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। প্রথমে ওই তরুণী রাজি না হলেও এক পর্যায়ে দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরপর কয়েকবার মিন্টু তাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেয়। গত বছরের ১৭ এপ্রিল পরিবারের অন্য সদস্যদের অনুপস্থিতিতে মিন্টু প্রয়াতের বাসায় যান। এরপর মিন্টু অনিচ্ছা সত্ত্বেও মেয়েটির সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করে এবং মোবাইল ফোনে ভিডিও রেকর্ড করে। ওইদিনের পর ভিকটিম অভিযুক্ত মিন্টুকে বিয়ের জন্য কয়েকবার চাপ দিলে মিন্টু তার সঙ্গে যোগাযোগ প্রায় বিচ্ছিন্ন করে দেয়। এদিকে ভিকটিম পড়াশুনার জন্য ঢাকায় যায়। চলতি বছরের ২৫ জুন মিন্টু আবারও ঢাকায় গিয়ে ওই তরুণীকে বিয়ের জন্য কাজীর অফিসে নিয়ে যেতে বলে। মিন্টু ফোনটি নিয়ে যায় অপরিচিত এক ব্যক্তির বাসায় দেখা করতে। সেখানেও সে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে তাকে আবারও খারাপ কাজ করে। এরপর ভিকটিম তরুণী আবার বিয়ের জন্য চাপ দিলে গোপন ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ভয়ে মিন্টু আবার যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। পরে কিছু বুঝতে না পেরে নির্যাতিতা পরিবারের সদস্যদের বিষয়টি জানিয়ে বোদা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। এদিকে বহিষ্কৃত যুবলীগ নেতা মনোয়ার হোসেন মিন্টু সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, গত ৩০ জুলাই হলফনামায় ওই তরুণীকে বিয়ে করেছেন এবং তারা বিবাহিত স্বামী-স্ত্রী।
যুবলীগের দেবীগঞ্জ উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ মিঠু জানান, চিলাহাটি ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মনোয়ার হোসেন মিন্টুর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এতে সংগঠনের সাংগঠনিক কাঠামো ভেঙে পড়েছে। কেন তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হলো এবং কেন তাকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হবে না, তার জবাব চেয়ে গত ১১ সেপ্টেম্বর রাতে নোটিশ জারি করা হয়। আগামী তিন দিনের মধ্যে উপজেলা যুবলীগ কার্যালয়ে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। এরপর দুদিন কেটে গেছে। আগামীকাল বুধবার তার উত্তর দেওয়ার আরও একদিন আছে। এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া দাখিল করা হয়নি.
বোদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুজয় কুমার রায় জানান, মামলা দায়েরের পর থেকে সব ধরনের আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
প্রসঙ্গত, নারী হলো সম্মানের পাত্র। নারী হলো মায়ের জাত। তাই নারীকে সম্মান করা প্রত্যেকটি পুরুষেরই একান্ত দায়িত্ব ও কর্তব্য। তাদের সাথে এমন কোনো আকজ করা যাবে না যাতে নারীদের সম্মান হানি হয়। নারীদেরকে সুনজরে দেখলে সমাজে কোনো ধরণের অপকর্ম কখনই সংঘটিত হবে না।