দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর উপজেলা ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দিকে নজর দিয়েছে সরকার। উপজেলা নির্বাচনসহ বেশ কয়েকটি স্থানীয় সরকার নির্বাচনের ভোটের তফসিলও ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন।
আওয়ামী লীগ দলীয় প্রতীক নিয়ে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ নেবে না। নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক করতে তাদের এই সিদ্ধান্ত।
অন্যদিকে বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্তে অটল বিএনপি। তাই ময়মনসিংহ সিটি নির্বাচন এবং কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র উপনির্বাচন ও উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে ভাবছে না দলটি।
তাদের নজর সরকারের পদত্যাগের একদলীয় আন্দোলনের দিকে। তবে প্রতীক ছাড়া দলের কেউ নির্বাচনে অংশ নিলে তাদের বিরুদ্ধে নমনীয় বা কঠোর হবেন কিনা সে বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
তৃণমূলের অনেকেই নীতিনির্ধারকদের বলেছেন যে তারা নির্বাচনে যেতে আগ্রহী। সে ক্ষেত্রে কেউ ব্যক্তিগতভাবে অংশ নিলে তাদের বিরুদ্ধে দল নমনীয় হতে পারে। বিএনপির নীতিনির্ধারণী সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করেছে বিএনপিসহ নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত ৬৩টি রাজনৈতিক দল। দলীয় সরকার ও বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হচ্ছে না বলে দাবি করে আসছেন তারা।
তবে এর মধ্যে ইসলামী আন্দোলনসহ কয়েকটি দল আবার স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। বিএনপি নেতারা জানান, তারা বর্তমান সরকারকে অবৈধ বলছেন, নির্বাচন কমিশনের কাছে সুষ্ঠু ভোট আশা করেন না। সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর থেকে স্থানীয় সরকারের কোনো নির্বাচনে অংশ নেননি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনও বর্জন করেছেন। এমন অবস্থায় কোনো নির্বাচনেই যাওয়ার সুযোগ নেই। সরকারের পদত্যাগসহ ভোটের অধিকার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় তারা আন্দোলন করছেন। যা অব্যাহত থাকবে।
তবে নেতারা এও স্বীকার করেন, তৃণমূলের একটি অংশ উপজেলা নির্বাচনসহ স্থানীয় নির্বাচনে যাওয়ার পক্ষে। এখন প্রতীক ছাড়া কেউ নির্বাচনে গেলে কি ধরনের পদক্ষেপ নেবে, তা নীতিনির্ধারকরা ঠিক করবেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেছেন, ৭ জানুয়ারির পর সোমবার আওয়ামী লীগের দ্বিতীয় পরাজয় ঘটেছে। আওয়ামী লীগ নিজেই পরাজয় স্বীকার করে নৌকা ডুবিয়েছে। তারা এখন নৌকায় নির্বাচন করবে না। এটা তাদের স্বীকৃত পরাজয়। যত হুমকিই আসুক না কেন, আওয়ামী লীগ বুঝে গেছে দেশের মানুষ নৌকাকে প্রত্যাখ্যান করেছে। আওয়ামী লীগের বাড়াবাড়ি এখন টেকসই নয়।
গণতন্ত্র মঞ্চের শীর্ষ নেতা নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘সামনে উপজেলা নির্বাচন। মার্কার ভোট হবে বলে আইন করেছিল আওয়ামী লীগ সরকার। কিন্তু এখন প্রধানমন্ত্রী নিজেই বলছেন, উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মার্কা দেবে না। কেন? আওয়ামী লীগ এখন রাজনৈতিক দল নয়। আওয়ামী লীগ দল এখন একজনের ইচ্ছা পূরণের হাতিয়ার।