প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ তাদের জাতীয় পরিচয় পত্রের ভুল সংশোধনের জন্য কাউন্সিলের দোয়ারে লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। যার জন্য তাদের ভুগতে হয় বহুদিন, কোন কোন ক্ষেত্রে বিভিন্ন রকমের ভোগান্তি পোহাতে হয় তাদের। তবে সকল কাগজপত্র সঠিক দিয়েও যদি জাতীয় পরিচয় পত্রের নাম ঠিকানা ভুল হয়ে যায় সে ক্ষেত্রে ভুক্তভোগী হতে হয় পরিচয় পত্রের আসল মালিককে। যদিও ভুলটা করে থাকে দ্বায়ীত্বরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
সম্প্রতি মৌলভীবাজারে বড় অক্ষরে মহাবিপাকে পড়েছেন জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনকারীরা। সংশোধিত এনআইডি কার্ডের সব তথ্য সঠিক থাকলেও জন্মস্থান বাংলাদেশের বদলে ‘ভেনিজুয়েলা’ হয়ে গেছে! বিভিন্ন প্রয়োজনীয়তার কারণে এনআইডি সংশোধনকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। গত এক সপ্তাহ ধরে নির্বাচন কমিশনের সার্ভার থেকে ডাউনলোড করা কার্ডে জন্মস্থান ‘ভেনিজুয়েলা’ লেখা রয়েছে।
জানা গেছে, একাডেমিক সার্টিফিকেট, পাসপোর্ট, জন্মনিবন্ধন সনদ বা পিতা-মাতার নথির সঙ্গে তথ্যের অমিল থাকায় অনেকেই জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের জন্য স্থানীয় নির্বাচন অফিসে আবেদন করেন। দিনের পর দিন ধর্না দিয়ে অনেক ভোগান্তির পর সংশোধনী সম্পন্ন হওয়ার বার্তা পেয়ে নির্বাচন কমিশনের সার্ভার থেকে এনআইডি ডাউনলোড করে বিপাকে পড়েছেন তারা। জন্মস্থানের কলামে ‘ভেনিজুয়েলা’ লেখা দেখে নতুন করে বিপাকে পড়েছেন তারা।
পৌরসভার ভুক্তভোগী শিউলি বেগম জানান, সব কাগজপত্রসহ আবেদনপত্র জমা দিলেও অনেক দিন নির্বাচন অফিসে ঘুরতে হচ্ছে। অবশেষে সংশোধনের বার্তা পেয়ে ২৯শে জুলাই এনআইডি কার্ড ডাউনলোড করে দেখলাম আমার জন্ম ভেনেজুয়েলায়! এই কার্ডটি নিয়ে বড় সমস্যায় পড়ার ভয়ে, তিনি যে কাজটি সংশোধন করেছেন তার জন্য এটি ব্যবহার করছেন না।
উপজেলার বর্ণী ইউনিয়নের নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ভোক্তা অভিযোগ করে বলেন, প্রায় ২ মাস আগে সংশোধনীর আবেদন করতে তাকে দীর্ঘক্ষণ উপজেলা নির্বাচন অফিসে ঘুরতে হয়েছে। নানা হয়রানির শিকার হয়ে অবশেষে আবেদনপত্র অনুমোদনের বার্তা পেয়ে শনিবার বিকেলে এনআইডি ডাউনলোড করে দেখেন তিনিও ভেনিজুয়েলায় জন্মগ্রহণ করেছেন।
জরুরি পাসপোর্ট করতে এনআইডি সংশোধন করা হয়েছে। বড়লেখায় জন্ম, এনআইডিতে ভেনেজুয়েলা লেখা থাকায় দুশ্চিন্তায় আর পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে যাচ্ছেন না।
কম্পিউটার দোকানিরা জানান, গত এক সপ্তাহ ধরে যারা সংশোধিত জাতীয় পরিচয়পত্র ডাউনলোড করছেন, তাদের কার্ডে তাদের জন্মস্থান ভেনিজুয়েলা হিসেবে দেখানো হচ্ছে। এর সমাধান হলেও ক্ষতিগ্রস্তরা আর্থিক ও মানসিক ক্ষতির সম্মুখীন হবেন।
শনিবার বিকেলে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এসএম সাদিকুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, বিষয়টি অনেকেই তাকে জানিয়েছেন। বিষয়টি তিনি নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছেন। আশা করি শিগগিরই এর সমাধান হবে।
যেহেতু এ ঘটনায় সংবাদমাধ্যমে এসেছে তাই সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের টনক নড়েছে বলে দাবি জানিয়েছেন অনেকেই। অনেক ভুক্তভোগী আছে যারা কাউন্সিল এর পাশে দীর্ঘদিন ঘুরে বেড়িয়েও তাদের সমস্যার হাল হচ্ছে না। তাদের অভিযোগ যেহেতু ঘটনাটি গণমাধ্যমে এসেছে তাই তাদের এত পাঁয়তারা। গনমাধ্যমের আড়ালে অনেক ভুক্তভোগী আছে যারা এধরনের সমস্যায় ভুগছেন।