মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা মহামারী আকার ধারণ করেছে। বিশেষ করে ফৌজদারি মামলা। সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে এমন প্রতিবেদন পাঠিয়েছে সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের আইন কমিশন। তবে আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখতিয়ারের বাইরে গিয়ে এমন মত দিয়েছে, আইন কমিশন।
সম্প্রতি দেশীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে গুম ও হয়রানির ঘটনা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। বলা হচ্ছে, এ ধরনের মামলার সংখ্যা লাখ লাখ।
এবারও প্রায় একই বক্তব্য এসেছে আইন কমিশনের চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের লিখিত প্রতিবেদনে। খায়রুল হকের নেতৃত্বাধীন আইন কমিশন গত ২৯ আগস্ট বিভিন্ন আদালতে বিচারাধীন মামলার বিষয়ে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে প্রতিবেদন জমা দেয়।
৪৬ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনের ৮ নম্বর পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে, আইনের অপব্যবহারের মাধ্যমে দেশের অধিকাংশ আদালতে মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও হয়রানিমূলক মামলা মহামারী আকার ধারণ করেছে। যাতে বহু নিরপরাধ মানুষ অহেতুক কারাবরণ, অহেতুক হয়রানি ও বহুমুখী ক্ষতির শিকার হয়।
ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পিপি আবদুল্লাহ আবু বলেন, মামলাটি মহামারীতে পরিণত হয়েছে বলা ঠিক হবে না। তিনি বলেন, এখন যেসব মিথ্যা মামলার কথা বলা হচ্ছে, এমন মিথ্যা মামলা এখন আর হচ্ছে না।
সাবেক আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ বলেন, আইন কমিশন কীভাবে এমন কথা বলতে পারে। এটা তাদের কাজ নয়। আর সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেছেন, আইন কমিশন তার এখতিয়ারের বাইরে গিয়ে এমন কথা বলেছে।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, যখনই কোনো পূর্ণাঙ্গ আদালত পর্যবেক্ষণ দেয় যে, এটি একটি হয়রানিমূলক মামলা, তখন আমাদের মেনে নিতে হবে যে এটি আদালতের রায়। কিন্তু আদালত ছাড়া এ কথা বলার কোনো এখতিয়ার নেই। সেটা আইন কমিশন হোক বা যেকোনো কমিশন। আমি মনে করি আইন কমিশনের এই সিদ্ধান্ত অবশ্যই তার আইনি ক্ষমতার এখতিয়ারের বাইরে এবং তাদের দ্বারা এটি সংশোধন করা উচিত।
সাবেক আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ বলেন, এই ধরণের ওপেনিয়ন পাস করা প্রয়োজন ছাড়া উচিত হয়নি। এটি একটি রিকমেন্ডেশন দিয়েছে, এমন না যে এটা মানতে হবে।
আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হয়রানিমূলক মামলা হলে এর প্রতিকার বিদ্যমান আইনেই রয়েছে। এটা আবার নতুন করে সংযোজনের প্রয়োজন নেই।