সাম্প্রতিক সময়ে দেশে-বিদেশে আলোচনায় রয়েছেন সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডাক্তার মুরাদ হাসান। বিএনপি সভানেত্রী বেগম জিয়া ও তার নাতনী জাইমা রহমানকে নিয়ে অশালীন বক্তব্য দেয়ার পর আলোচনায় আসেন ডাক্তার মুরাদ হাসান। এছাড়াও ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেত্রীর সাথে একটি অশালীন ও অশ্লী’ল ফোনালাপের অডিও ফাঁস হওয়ার পর তিনি আরো বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন। তাকে নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে তিনি পদত্যাগ করেন। পদত্যাগ করার পর তিনি নিজেকে আড়াল করার জন্য কানাডার উদ্দেশ্যে দেশ ত্যাগ করেন। কিন্তু তাকে কানাডায় প্রবেশে বাধা দেওয়ার জন্য তিনি ফের দেশে ফিরে আসেন। তিনি বিমানবন্দরে নামার পর সাংবাদিকরা তার সাথে কথা বলতে সেখানে অনেক আগে থেকে অবস্থান করে, কিন্তু তাদের চোখ ফাকি দিয়ে তিনি বিমানবন্দর ত্যাগ করেন।
সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী নিজের নির্বাচনী এলাকাতেও চরমভাবে নিন্দিত ও সমালোচিত হচ্ছেন। তার প্রতি দলের নেতাকর্মীরা পরামর্শ দিয়ে বলেছেন, আপাতত জনসমক্ষে তিনি যতটাই কম আসবেন ততই তার জন্য এবং দলের জন্য মঙ্গলজনক হবে। তিনি সামনে আসলে মানুষ তাকে নিয়ে নানা ধরনের নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানাবেন। এই সময় তার কোন বন্ধু বা স্বজন বলতে কেউই পাশে নেই।
এদিকে বিমানবন্দর থেকে চুপিসারে বের হওয়ার পর আর তার দেখা মিলছে না। তিনি কোথায় অবস্থান নিয়েছেন তাও স্পষ্ট নয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাধিক সূত্র বলছে, মুরাদ হাসান জটিলতা এড়াতে রোববার রাতেই তিনি ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম চলে যান।
গতকাল তার ধানমন্ডির বাসায় গেলে জানা যায় যে, তিনি বিদেশ থেকে দেশে এসে নিজ বাসায় ফিরেননি। বাসার নিরাপত্তারক্ষী ও কেয়ারটেকারসহ ওই বাসার লোকজন তার কোনো খোঁজ দিতে পারেননি। গতকাল তার অবস্থান কোথায় ছিল তা স্পষ্ট হওয়া যায়নি।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, তিনি বিমানবন্দর থেকে বের হয়ে উত্তরায় এক আত্মীয়ের বাসায় যান। সেখানে কিছুক্ষণ থেকে তিনি চট্টগ্রামের হালিশহরের উদ্দেশে রওনা হন।
ওই এলাকায় তার এক আত্মীয়ের বাড়ি রয়েছে। প্রতিমন্ত্রী থাকাকালেও তিনি চট্টগ্রামের হালিশহরে যেতেন। ধানমন্ডির বাসার নিরাপত্তারক্ষী সুমন জানান, স্যার (মুরাদ হাসান) বাসায় নেই। তিনি কেথায় আছেন প্রশ্ন করা হলে জানান, স্যার বিদেশ থেকে আসার পর বাসায় আর আসেননি। তিনি কোথায় আছেন তিনি তা জানেন না।
কানাডা ও আরব-আমিরাতে ঠাঁই না পেয়ে ঢাকায় ফেরা সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী ও সাংসদ ডা. মুরাদ হাসান নিরুদ্দেশ। রোববার রাত থেকেই তার হদিস মিলছে না। নিজের ধানমন্ডির বাসায়ও যাননি। পরিবারের সদস্যরাও এ বিষয়ে কথা বলছেন না। নিজের ফোনটিও বন্ধ রেখেছেন তিনি।
দলীয় নেতাকর্মীরা জানান, কদিন আগেও প্রতাপশালী ছিলেন ডা. মুরাদ হাসান। কর্মী-নেতা-শুভাকাঙ্ক্ষী-বন্ধুর অভাব ছিল না। প্রশাসনও ছিল তার প্রতি সহযোগিতামূলক। সেই মুরাদ এখন যেন রাতারাতি নক্ষত্রচ্যূত। তার নাম নিতেও লজ্জা পান ঘনিষ্টরা। যে কারণে কানাডা থেকে দেশে না ফেরার জন্য তার প্রকৃত শুভাকাঙ্ক্ষীরা ফোনে পরামর্শও দিয়েছিলেন।
এদিকে জানা গিয়েছে তার পরিবারের সদস্যরা তাকে এই পরিস্থিতিত বিদেশে অবস্থান করার জন্য পরামর্শ দেন। তাদের পরামর্শ অনুযায়ী তিনি কানাডার উদ্দেশ্যে দেশ ত্যাগ করেন। কিন্তু দেশটিতে প্রবেশ ব্যর্থ হওয়ার পর দুবাই ফিরে আসেন। তাকে সেই সময় তার পরিবারের পক্ষ থেকে পরামর্শ দেয়া হয় অন্তত দুবাই থাকে যাওয়ার জন্য। কিন্তু তিনি সেখানেও থাকেননি শেষ পর্যন্ত দেশে ফিরে এসেছেন। তবে বর্তমানে তিনি কোথায় আছেন সে বিষয়ে স্পষ্ট কোন তথ্য জানা যায়নি।