অন্যান্য বারের মতো এবারেও কালো সাদা করার সুযোগ দিয়ে বাংলাদেশের ৫১তম বাজেট পেশ করেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তবে এ নিয়ে গত বেশকিছু দিন ধরে সারা-দেশজুড়ে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। আর এরই প্রেক্ষিতে এবার এ নিয়ে মুখ খুললেন অর্থমন্ত্রী নিজেই।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, ঢাকা শহরে যাদের জমি বা ফ্ল্যাট আছে তারা সবাই ‘কালো টাকার মালিক’। এ অবস্থার জন্য তিনি সরকার ও ব্যবস্থাকে দায়ী করেন।
বুধবার (১৫ জুন) অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অর্থনৈতিক ও ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, যখন পাচারকৃত অর্থ দেশে ফেরত আসে, তখন আমরা মনে করি এর কিছু অংশ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করা হবে। বিভিন্ন শিল্প, ব্যবসা-বাণিজ্যে বিনিয়োগ থাকবে। এই প্রত্যাশায় আমরা সেদিকেই তাকিয়ে আছি।
কালো টাকা প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ঢাকায় যাদের জমি বা ফ্ল্যাট আছে তারা সবাই কালো টাকার মালিক। এর জন্য সরকার দায়ী, আমাদের সিস্টেম দায়ী। গুলশান এলাকায় কেনা জমির মূল্য নিবন্ধিত জমির প্রকৃত মূল্যের চেয়ে বেশি। কিন্তু আপনি বেশি দামে নিবন্ধন করতে পারবেন না। প্রতিটি মৌজার জন্য মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে, বেশি দামে নিবন্ধন করা যাবে না। সুতরাং যেটি পারা যাবে না, কালো টাকা তো সেখানেই হয়ে আছে। কে কালো টাকার বাইরে আছে?
“কিন্তু যখন আমি বিদেশে পাচার করা কালো টাকা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করি, তখন বলা হয় যে সরকার কালো টাকা পাচারে লিপ্ত হচ্ছে,” তিনি বলেছিলেন। বারবার বলছি অপ্রকাশিত টাকা। এতে লজ্জা পাওয়ার কিছু নেই। এর জন্য সরকার দায়ী। আমিও এক সময় দায়িত্বে ছিলাম। ঢাকা শহরে জমির দাম বাড়ানো সম্ভব কি না তা নিয়ে ভাবলেও শেষ পর্যন্ত দাম বাড়াতে পারিনি। দাম আগের মতোই আছে।
অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, বাস্তবতা হলো দুই কোটি টাকায় যে ফ্ল্যাটের রেজিস্ট্রেশন করা হচ্ছে তার প্রকৃত মূল্য ১০ কোটি টাকা। ফলে সরকার বাড়তি রেজিস্ট্রেশন ফি পাচ্ছে না। এখানেই কালো টাকা বাড়ছে। এই বিষয়গুলো সবাইকে বুঝতে হবে। শুধু ঢাকা শহরে জায়গার মালিক বা যিনি জায়গাটি কিনেছেন তিনিই বলতে পারবেন কত টাকা রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে এবং জায়গাটির প্রকৃত বাজারদর কত।
কালো টাকা ফেরত নিয়ে বিভিন্ন মহলের সমালোচনার জবাবে মন্ত্রী বলেন, বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে কোনো আলোচনা হলে তা বস্তুনিষ্ঠ হয়ে ওঠে।
বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেয়ার বিষয়টি কেন্দ্র করে গত কয়েকদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরকারের সমালোচনায় মেতেছেন নেটিজেনরা।