রাজধানীর মোহাম্মদপুরে প্রাইভেটকারের ধাক্কায় আহত রিকশা যাত্রী ইমরান রেজা (৩৮) ও তার স্ত্রী আফরোজা আহমেদ (৩৪) ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আফরোজা আহমেদের অবস্থা আশঙ্কাজনক। বুধবার বিকেলে তাকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। অস্ত্রোপচারে ৬ থেকে ৭ ঘন্টা সময় লাগবে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইমরান রেজার বাবা রফিকুল ইসলাম সমকালকে এ তথ্য জানান। ওই দুর্ঘটনায় ইমরানের তিন বছর বয়সী মেয়ে এনায়া রেজা বাড়িতেই রয়েছে এবং আফরোজার মেরুদণ্ডের ৪-৫টি হাড় ভেঙে গেছে বলে জানান। পায়ের গোড়ালিও ভেঙে গেছে।
তিনি জানান, তার ছেলে ইমরান রাজার দুই হাত থেঁতলে গেছে এবং হাড় দেখা যাচ্ছে। বাম হাতের ত্বকে গভীর ক্ষত তৈরি হয়েছে। আর এনিয়ার দুই পাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত লেগেছে।
সোমবার রাতে দুর্ঘটনার পর মঙ্গলবার তাদের ইউনাইটেড হাসপাতালে নেওয়া হয়।
এদিকে দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত রিকশাচালক হাবিবুর রহমানকে (৪৫) গাজীপুরের বোর্ডবাজারের বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তার মাথা ফেটে যায়। ডান হাতসহ শরীরের বেশ কয়েকটি হাড় ভেঙে গেছে। ঢাকায় চিকিৎসা করানো সম্ভব না হওয়ায় তাকে সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়। হাবিবুর রহমানের স্ত্রী জানান, তারা তিন ছেলেসহ বোর্ডবাজারে থাকেন। মাঝে মাঝে স্বামী ভোরে ঢাকায় চলে আসে রিকশা চালাতে। তিনি মোহাম্মদপুর ও ধানমন্ডি এলাকায় রিকশা চালাতেন।
জানা গেছে, দুর্ঘটনার সময় প্রাইভেটকারটি চালাচ্ছিলেন এক কিশোর (১৫)। যাত্রীর আসনে ছিলেন সালমান হায়দার নামে এক যুবক। সে ঢাকার একজন কাউন্সিলরের ছেলে। দুর্ঘটনার পর স্থানীয়রা ওই কিশোরকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। পরে কিশোরকে সংশোধনাগারে এবং যুবককে কারাগারে পাঠানো হয়।
আফরোজার বোন আফসানা আহমেদ জানান, আফরোজা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করে একটি বেসরকারি ব্যাংকে চাকরি করছেন। তার স্বামী ইমরান পেশায় একজন প্রকৌশলী। তাদের সাত ও তিন বছরের দুটি সন্তান রয়েছে। তারা মোহাম্মদপুরে থাকেন। ঘটনার দিন রাতে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরছিলেন তারা।
মোহাম্মদপুরের ইকবাল রোডে পরিবারের সঙ্গে থাকেন সালমান। আর ওই কিশোরের বাড়ি মোহাম্মদপুরের শেরশাহ শুরী রোডে। প্রাইভেটকারটি সালমানের এক বন্ধুর। তাদের বাড়ি লালমাটিয়ায়। সালমানের বাড়ির গ্যারেজে গাড়ি রাখতেন তার বন্ধু। সালমান বিভিন্ন সময় নিজেই গাড়ি চালাতেন। ছেলেটির বাবা সৌদি প্রবাসী। সে অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। প্রাইভেট কার চালানো শেখার সময় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) মৃত্যুঞ্জয় দে সজল সমকালকে বলেন, দুর্ঘটনার পরপরই কিশোর ও যুবকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।