শনিবার বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে বিমানবন্দর সংলগ্ন কাওলা অংশে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি প্রথম টোলে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে পার হন। রবিবার সকাল ৬টায় জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত হয় এটি।
অনুমতি থাকা সত্ত্বেও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে বাস-মিনিবাস চলাচল করছে না। এই প্রশ্নটা অনেকের মনেই ঘুরপাক খাচ্ছে, কেন হাইস্পিড এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে বাস ও মিনিবাস উঠছে না?
একাধিক বাসের চালক ও ঠিকাদারদের সঙ্গে কথা বলে তারা জানান, ওভারে গেলে যাত্রী সংকটে পড়তে হবে।
আজিমপুর থেকে উত্তরা পর্যন্ত ‘বিকাশ’ বাস চলাচল করে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বাস চালক বলেন, আমাদের বাসের অনেক যাত্রীই বনানী, মহাখালীর। কিন্তু ওই যাত্রীরা আমাদের বাসে উঠতে পারবে না যদি তারা (এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে) চলে যায়। ফলে যাত্রী সংকটে পড়তে হবে।
গাজীপুর থেকে গুলিস্তান পর্যন্ত গাজীপুর পরিবহনের বাস চলাচল করে। এই বাসের কয়েকজন চালক ও ঠিকাদারের একই কথা। তারা বলছেন, এর ওপর দিয়ে গেলে দ্রুত যেতে পারলেও অনেক যাত্রী হারাবেন। আবার ৩ থেকে ৪ কিলোমিটারের জন্য ১৬০ টাকা টোল দিতে হয়। ফলে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া নিতে হবে। এ ছাড়া খিলক্ষেতসহ মাঝপথে যাত্রী ওঠানো যাচ্ছে না।
এছাড়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে পথচারীদের হাঁটা নিষেধ। এ কারণে বাস ও মিনিবাসগুলো ‘এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে’তে চলাচল করলে পর্যাপ্ত যাত্রী পাবে না।
বাস-মিনিবাস কোম্পানির মালিকরা বলছেন, এই মহাসড়ক দিয়ে চলাচল করলে পর্যাপ্ত যাত্রী না পাওয়ায় ‘এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে’তে বাস-মিনিবাস চলাচল করছে না।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশন (বিআরটিসি) চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম জানান, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে সোমবার থেকে বিআরটিসি’র বাস চালানোর যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তা আপাতত চলছে না। এ পথে বাস চালাতে আরও সময় নেবে সরকারি এই সংস্থাটি।
এই উচ্চ গতির ‘এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে’র মোট দৈর্ঘ্য ১৯.৭৩ কিমি। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে কাওলা থেকে তেজগাঁও পর্যন্ত চালু সেকশনের দূরত্ব ১১.৫ কিলোমিটার। তাদের মধ্যে ১৫ টিতে র্যাম্প রয়েছে। বিমানবন্দর এলাকায় দুটি, কুড়িলে তিনটি, বনানীতে চারটি, মহাখালীতে তিনটি, বিজয় সরণিতে দুটি ও ফার্মগেট এলাকায় একটি ফ্লাইওভার রয়েছে। তবে মহাখালী ও বনানীর ১১ নম্বর সড়ক পরে খোলা হবে।
আট ধরনের যানবাহন বর্তমানে অনুমোদিত। এর মধ্যে রয়েছে বাস, মিনিবাস, কার (সেডান), মাইক্রোবাস, স্পোর্টস ইউটিলিটি যানবাহন (এসইউভি, যা জিপ নামেও পরিচিত), কিছু ধরনের পণ্যবাহী ট্রাক এবং পিকআপ। মোটরসাইকেল, সিএনজি চালিত অটোরিকশা এবং সাইকেল সহ থ্রি-হুইলার নিষিদ্ধ। পথচারীদেরও চলাচল করতে দেওয়া হচ্ছে না।