বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে। তবে সেখানে রয়েছে বেশ কিছু শর্ত, যার মধ্যে প্রধান শর্ত হলো- নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। এদিকে নির্বাচনকে ঘিরে বিএনপি দল গোছানো ও নেতাকর্মীদের উজ্জিবিত করার পাশাপাশি আন্দোলনে যাওয়ার জন্য দেশের বিভাগীয় শহরগুলোটে সমাবেশ করছে। তবে রাজধানীতে সমাবেশ করা নিয়ে সমস্যার মুখে পড়েছে দলটি। ডিএমপি কমিশনার নয়াপল্টনের পরিবর্তে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অণুমতি দিয়েছে। তবে সেই সিদ্ধান্ত মানতে নারাজ বিএনপি।
দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নয়, নয়াপল্টনেই বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ হবে। তিনি বলেন, “ঢাকায় ১০ ডিসেম্বরের গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে পুলিশ রাজধানীতে বিভিন্ন নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে তল্লাশি চালাচ্ছে। তবে ১০ ডিসেম্বরের গণসমাবেশ মূলত একটি জনস্বার্থ সমাবেশ। এটি একটি জনসভা। এটি হারানো গণতন্ত্রকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার সমাবেশ।’
মঙ্গলবার নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে রিজভী এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, চলমান দুর্ভোগ সরকারের সৃষ্টি। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি, পানির দাম বৃদ্ধি, বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি; সব মিলিয়ে বাংলাদেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি হয়েছে। এর প্রতিবাদে মহাসমাবেশ করছে বিএনপি।
বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, ‘বিএনপি সরকারের গণবিরোধী নীতির প্রতিবাদ করছে। দেশের ১০টি বিভাগের মধ্যে ৮টিতে বিএনপির গণসমাবেশ হয়েছে। ৩ ডিসেম্বর রাজশাহীতে জনসভা হবে; এরপর ১০ ডিসেম্বর ঢাকা বিভাগে হবে।
তিনি বলেন, “বিএনপির জনসমাবেশকে ঘিরে বর্তমান গণবিরোধী সরকার ষড়যন্ত্র করছে। এটাই তাদের স্বাভাবিক অভ্যাস। সেই পুরোনো গায়েবি মামলা ও নিজেরাই ষড়”যন্ত্র করে কক”টেল বি’/স্ফো”রণ করে, গাড়ি ভাঙ”চুর করে। আবার ককটেল বি”/স্ফোরণও হয়নি, তারপরও মিথ্যা মামলা হচ্ছে। অনেক বিএনপি নেতাকর্মীর নামে মামলা করা হচ্ছে। এলাকায় যারা নেই তাদের নামে মিথ্যা মামলা দেয়া হচ্ছে। এই মিথ্যা মামলা দেওয়ার উদ্দেশ্য হচ্ছে আগের মতই জনগণকে বিভ্রান্ত করা। এই দূরভিসন্ধিমূলক চক্রান্ত এবং এই ঘৃণ্য মাস্টারপ্ল্যান।’
এর আগে ২৬ শর্তে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপিকে জনসভা করার অনুমতি দেয় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। গত ২০ নভেম্বর রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে গণসমাবেশ করতে ডিএমপিতে আবেদন করেন দলটির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নয়াপল্টনের পরিবর্তে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি দেয় ডিএমপি।
মঙ্গলবার ডিএমপির চিঠিতে বলা হয়েছে, নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না কারণ এতে যানজট ও জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হবে। ডিএমপির চিঠিতে ১০ ডিসেম্বর (শনিবার) দুপুর ১২টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত সমাবেশের কথা রয়েছে। সমাবেশ শুরুর দুই ঘণ্টা আগে জনগণ সভাস্থলে আসতে পারবেন।
এদিকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ঠিক কোন স্থানে গিয়ে দাঁড়াবে সে বিষয়ে এখনই কোনো মন্তব্য করতে পারছেন না রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা। তবে বিএনপি নির্বাচনে আসার চেষ্টা চালিয়ে যাবে বলে ধারনা পাওয়া যাচ্ছে। তবে ক্ষমতাসীন সরকারও বর্তমান সিদ্ধান্ত থেকে সরবে বলেো মনে হচ্ছে না। যার কারণে রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে পারে বলে মনে করচেন অনেকে।