Monday , December 23 2024
Breaking News
Home / opinion / ঢাকায় সমাবেশের অনুমতি দিয়ে সরকার বিএনপিকে ‘ফাঁদে’ ফেলেছে,আমি ২৬ টা শর্তই পড়ে দেখেছি:আসিফ নজরুল

ঢাকায় সমাবেশের অনুমতি দিয়ে সরকার বিএনপিকে ‘ফাঁদে’ ফেলেছে,আমি ২৬ টা শর্তই পড়ে দেখেছি:আসিফ নজরুল

সারা দেশে এখন একটাই আলোচনা আর তা হলো ঢাকায় বিএনপির সমাবেশ। বিএনপির সমাবেশ নিয়ে বেশ কিছু দিন ধরেই চলছিল নানা ধরনের জল্পনা কল্পনা। বিশেষ করে ঢাকায় তাদের সমাবেশের অনুমতি দেয়া হবে কি না তা নিয়ে ছিল না জল্পনার শেষ। তবে সেই সব জল্পনা কল্পনাকে উড়িয়ে দিয়ে সরকার বিএনপিকে ঢাকায় সমাবেশ করতে দিয়েছে অনুমতি। আর এই অনুমতিকে এবার অন্য চোখে দেখছেন আসিফ নজরুল।

ঢাকায় সমাবেশের অনুমতি ঘিরে সরকার বিএনপিকে ‘ফাঁদে’ ফেলতে চাচ্ছে বলে মনে করেন অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, ‘প্রথমত, পুলিশ সাধারণত শেষ মুহূর্তে অনুমতি দেয়। এবার ১১ দিন আগে নিজ থেকে অনুমতি দিলো। তারপর আবার সরকারের পক্ষ থেকে ছাত্রলীগের সম্মেলন ২ দিন এগিয়ে নেওয়া হয়েছে। আবার সরকারের নেতারাও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে করার পরামর্শ দিচ্ছে। আর পুলিশও ২৬টি শর্ত দিয়েছে। সবকিছু মিলিয়ে মনে হয় সরকার বিএনপিকে একটা ফাঁদে ফেলতে চাচ্ছে। বিএনপি যদি বিশ্বাস করে যে সরকার তাদের ফাঁদে ফেলার জন্য এগুলো করছে, তাহলে এখানে দোষের কিছু নেই। কারণ, প্রত্যেকটি ঘটনাই অস্বাভাবিক।’

শর্ত বিষয়ে আসিফ নজরুল বলেন, ‘শর্তে বলা হয়েছে, কোনো রকম গণ্ডগোল হলে বিএনপিকে দায়-দায়িত্ব বহন করতে হবে, অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা থাকতে হবে, আর্চওয়ে থাকতে হবে, সিসিটিভি থাকতে হবে— সবকিছু মিলিয়ে মনে হয় এটা বিএনপিকে ফাঁদে ফেলার একটা ষড়যন্ত্র। ২৬টি শর্ত আমি ভালো করে পড়ে দেখেছি। বিএনপি যদি ২৬টি শর্ত মানতে চায়, তাহলে তাদেরকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ১৫ থেকে ২০ জনের একটা গোলটেবিল বৈঠক ডাকতে হবে। গোলটেবিল বৈঠক করা ছাড়া এ শর্ত মেনে সমাবেশ করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। এ শর্ত দেওয়ার মানে হলো বিএনপি যাতে সমাবেশ না করে। আর সমাবেশ করলে যেন ফাঁদে পড়ে, সেরকম একটা সুযোগ রাখা। ফলে স্বাভাবিকভাবেই বিএনপি এটার প্রতিবাদ করছে।’

সরকার সৎ উদ্দেশ্যে এগুলো করছে বলে মনে করেন না ঢাবির এই অধ্যাপক। তিনি বলেন, ‘সরকার একদিকে বিদেশিসহ সবাইকে দেখাতে চাচ্ছে যে, তারা সভা-সমাবেশে বাধা দিচ্ছে না, করতে দিচ্ছে। আরেক দিকে শর্ত আরোপ করে বিএনপিকে সমাবেশ থেকে নিরুৎসাহিত করার কিংবা ফাঁদে পড়ার আশঙ্কার মধ্যে রাখতে চাচ্ছে। সরকারি দল যেসব সুযোগ-সুবিধা নিয়ে নির্বিঘ্নে সমাবেশ করে, সেই পরিমাণ সুবিধাসহ নির্বিঘ্নে যখন বিরোধী দলকেও সমাবেশ করতে দেওয়া হবে, তখন আমি মনে করব দেশে প্রকৃত গণতান্ত্রিক পরিবেশ আছে।’

সরকার ও পুলিশ বলছে, বিএনপির সমাবেশ পল্টনে হলে জনগণের ভোগান্তি হবে, যানজটের সৃষ্টি হবে। এ বিষয়ে আসিফ নজরুল বলেন, ‘জনসাধারণের ভোগান্তি আর যানজটের কথা যদি পুলিশ বলে, তাহলে তাদের কাছে সবিনয়ে জিজ্ঞাসা করতে চাই যে, কিছুদিন পরপর আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, মহিলা লীগ ও ছাত্রলীগ যে রাস্তা দখল করে সভা-সমাবেশ করে, গত ১০ বছরে যে শখানেক সভা-সমাবেশ করেছে, তখন তাদের এটা মনে ছিল না? তখন বাধা দেওয়া হয়েছিল? আমরা সবাই তো এগুলোর ভুক্তভোগী হয়েছি। মনোনয়নপত্র দাখিল করার জন্যও রাস্তা দিয়ে মিছিল নিয়ে গেছে, আমরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে ছিলাম। এরপরেও যখন তারা এ ধরনের কথা বলে, মনে হয় তারা জনগণের সঙ্গে তামাশা করছে। তারা সারাক্ষণ যানজট সৃষ্টি করবে, জনগণের চলাচলে বাধা দেবে, আর অন্যরা সমাবেশ করতে চাইলে বলবে, দেওয়া যাবে না, এগুলো তো হাস্যকর। নিজেরা আগে যদি এগুলো পালন করে দেখাত, তাহলে তাদের কথা বিশ্বাসযোগ্য হতো। তাদের এ ধরনের কথাবার্তা জনগণের বিচার-বিবেচনা বোধের প্রতি নিষ্ঠুর পরিহাস।’

প্রসঙ্গত, গেলো বেশ কিছু মাস ধরে রাজনীতির মাঠে আবারো সক্রিয় হয়ে উঠেছে বিএনপি। তারা বিভাগীয় জেলা গুলোতে শুরু করেছে সমাবেশ। আর এই সমাবেশে লোকে লোকারণ্য হচ্ছে প্রতিবারই। তবে এর মধ্যেও আসছে অনেক বাধা।তবে সরকার থেকে জানানো হয়েছে সুষ্ঠু সমাবেশ করলে তাদের কোনো কাজেই দেয়া হবে না কোনো বাধা।

About Rasel Khalifa

Check Also

আগামীকাল ঢাকায় বড় কিছু ঘটানোর পরিকল্পনা, আপাতত যানবাহন তল্লাসি করুন: ইলিয়াস হোসেন

আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করার উদ্দেশ্যে কিছু ব্যক্তি ও সংগঠন, যারা সংখ্যালঘু হিন্দুদের মধ্যে রয়েছে, পরিকল্পিতভাবে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *