রোহি”ঙ্গা সংকট ও মিয়ানমারে চলমান অস্থিরতায় নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করবে। ফলে প্রতিবেশী দেশগুলোতে এর প্রভাব অব্যাহত থাকবে বলে ঢাকা ও দিল্লিকে সতর্ক করেছেন দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু।
শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) ওয়াশিংটনের থিঙ্কট্যাঙ্ক ইউএস ইনস্টিটিউট অব পিস (ইউএসআইপি)—এ মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসনের ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলের দুই বছর পূর্তি উপলক্ষে স্টেট ডিপার্টমেন্ট, ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিল এবং পেন্টাগনের অন্যান্য প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সাথে একটি শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠকে কথা বলেছেন।
তিনি বলেন, মিয়ানমারের পরিস্থিতি শীঘ্রই কোনো উন্নতি হচ্ছে না এবং বাংলাদেশ ও “সম্ভবত ভারতের জন্য” উদ্বাস্তু সংকট ও নিরাপত্তা সমস্যা আরও গভীর হতে পারে।
ডোনাল্ড লিউ ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলের উদাহরণ হিসেবে শ্রীলঙ্কার সাফল্যকে স্বাগত জানিয়েছেন। এ ক্ষেত্রে ভারতের মতো অন্যান্য অংশীদারদের সহযোগিতার কথাও উল্লেখ করেন তিনি। ভারতের প্রতিবেশীদের সম্পর্কে ওয়াশিংটনের চিন্তাভাবনা সম্পর্কে তিনি বলেন, সাম্প্রতিক মালদ্বীপ সফরের সময় তিনি কর্তৃপক্ষকে বলেছিলেন যে, বেইজিং যদি অন্য দেশের সাথে ‘সত্যিকারের প্রতিযোগিতার’ সম্মুখীন হয়, তাহলেই চীন তাদের ভালো অংশীদার হতে পারে।
আফ্রিকার উপকূলীয় রাষ্ট্রগুলোতে একসাথে কী করা যেতে পারে সে সম্পর্কে ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চলমান আলোচনার উল্লেখ করে, ডোনাল্ড লু ভারত মহাসাগরে ভারতীয় নেতৃত্ব এবং এই অঞ্চলে কাজ করার প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করেন।
ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের মতানৈক্যের বিষয়ে জানতে চাইলে ভারত-চীন সীমান্ত সংঘাত এবং ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ‘ঐতিহাসিক ও গভীর সংঘাতের’ কথা উল্লেখ করে তিনি জানান, মিয়ানমার পরিস্থিতি দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে কীভাবে প্রভাব ফেলতে পারে তা নিয়ে আলোচনার জন্য তিনি যথেষ্ট সময় ব্যয় করেছিলেন।
লু বলেন, ‘আমি বাংলাদেশ, সেখানে থাকা রোহিঙ্গা শরণার্থী ও বার্মার অস্থিরতা এই অঞ্চলের জন্য কীভাবে প্রভাব ফেলতে পারে, তা নিয়ে অনেক সময় ব্যয় করেছি। এক মিলিয়নেরও বেশি লোকের জন্য ঢাকা যে উদারতা দেখিয়েছে তা সমর্থনে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে উল্লেখযোগ্যভাবে কাজ করেছে। অনন্য এই উদারতা দেখার জন্য বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থী শিবির কক্সবাজার পরিদর্শনের সুযোগ হয়েছিল আমার। এসব শরণার্থীকে ঘরে ফেরানোর জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়গুলোর একসঙ্গে কাজ করার ইচ্ছাও প্রত্যক্ষ করেছি।’
“আমাদের সতর্ক থাকতে হবে এবং এই অঞ্চলে আমাদের অংশীদারদের সমর্থন করতে হবে, বিশেষ করে বাংলাদেশ এবং ভারত, যাতে তারা তাদের নিজেদের দেশের মধ্যে অস্থিতিশীলতা না বাড়িয়ে এই চ্যালেঞ্জগুলি মোকাবেলা করতে পারে,” এমনটাই বলেন দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
বেইজিংয়ের বিরুদ্ধে মার্কিন প্রশাসনের ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে এই নতুন বিশ্বকে পরিচালনা করছে সে সম্পর্কে প্রশ্নের জবাবে মালদ্বীপের উদাহরণ তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘এটি এমন একটি জায়গা যেখানে চীন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ভারতসহ অন্যান্য দেশ নিজেদের প্রভাব বিস্তারের প্রতিযোগিতা করছে। আমরা আরও প্রস্তাব দেওয়ার মাধ্যমে জয়লাভ করব। আমি মনে করি চীন তখনই ভালো অংশীদার হবে যখন সেখানে ন্যায্য ও সত্যিকারের প্রতিযোগিতা থাকবে।’