Thursday , November 14 2024
Breaking News
Home / Countrywide / ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেননি ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল, উঠে এলো প্রকৃত কারন

ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেননি ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল, উঠে এলো প্রকৃত কারন

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহমেদ ভূঁইয়া মনে করেন শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস একজন সম্মানিত মানুষ, যার মানহানি হচ্ছে।

তিনি বলেন, তাকে বিচারিক হয়রানি করা হচ্ছে। সোমবার হাইকোর্টের বর্ধিত ভবনের সামনে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহমেদ ভূঁইয়া।

প্রসঙ্গত, মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘন ও দুর্নীতির মামলার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে বিশ্বের বিভিন্ন ক্ষেত্রের দেড় শতাধিক নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি একটি খোলা চিঠি (বিবৃতি) পাঠিয়েছেন। তাদের মধ্যে শতাধিক নোবেল বিজয়ী রয়েছেন। এই খোলা চিঠির প্রতিবাদে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীদের বক্তব্য লেখা কাগজে আইনজীবীদের স্বাক্ষর সংগ্রহ করা হচ্ছে। এতে আইনজীবীদের ‘নাম’ ও ‘স্বাক্ষর’-ঘর রয়েছে।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহমেদ ভূঁইয়া বলেন, ‘ড. ইউনুসের পক্ষে ১০৭ জনেরও বেশি নোবেল বিজয়ী, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রেসিডেন্টসহ অনেকেই বিবৃতি দিয়েছেন।

তারা বলেন, ড. ইউনূস বিচারিক হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এর বিপরীতে অ্যাটর্নি জেনারেল অফিস থেকে প্রতিবাদ জানিয়ে একটি বিবৃতি দেওয়ার কথা রয়েছে। সেখানে নোটিশ করা হয়েছে যে, অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসে কর্মরত সবাইকে এই বিবৃতিতে স্বাক্ষর করার জন্য। কিন্তু আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি এই বিবৃতিতে স্বাক্ষর করব না।’ তবে এ কার্যালয়ের অন্যরা বলছেন, এ বিষয়ে কোনো নোটিশ বা নির্দেশনা দেওয়া হয়নি।

কেন করবেন না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দেখেন ইসরাইলে বিচার সম্পর্কিত বিষয়ে আইন সংস্কার হচ্ছে, এর বিরুদ্ধে সে দেশের অ্যাটর্নি জেনারেল অবস্থান নিয়েছেন। তাই এটা আমার নিজস্ব চিন্তা সেই রকমই।’

তিনি বলেন, ‘যে বিবৃতিটা ড. ইউনূসকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এবং সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন দিয়েছেন এটার সঙ্গে আমি একমত। আমি মনে করি ড. ইউনূস একজন সম্মানিত ব্যক্তি, তাকে সম্মানহানি করা হচ্ছে, এটা বিচারিক হয়রানি।’

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহমেদ ভূঁইয়া বিবিসিকে বলেন, ডক্টর ইউনূস শুধু বাংলাদেশের নয়, বিশ্বের সম্পদ। মূল বিবৃতিতে বলা হয়েছে তাকে ‘বিচারিক হয়রানির’ শিকার করা হচ্ছে। আমি একই ভাবে মনে করি।

এ বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ আমিন উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিস্তারিত জানেন না বলে জানান। এ ধরনের বক্তব্যের পেছনে ভূঁইয়ার ‘অন্য উদ্দেশ্য থাকতে পারে’ বলে মন্তব্য করেন তিনি।

অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিসের আইন কর্মকর্তারা সরকার কর্তৃক নিযুক্ত হন। সরকারি আইন কর্মকর্তাদের ক্ষমতাসীন দলের বিরুদ্ধে বিবৃতি দেওয়ার ঘটনাও বিরল। যে কারণে ভূঁইয়ার বক্তব্য নিয়ে তুমুল আলোচনা হয়েছে।

এমরান আহমেদ ভূঁইয়াকে ২০১৯ সালে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছিল। আইন কর্মকর্তাদের একটি অংশ মনে করে যে ভূঁইয়া রাষ্ট্রীয় পদে থাকাকালীন এমন মন্তব্য করতে পারতেন না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, যেহেতু তারা রাষ্ট্রের আইনজীবী, তাই আইনজীবী হিসেবে তাদের দায়িত্ব রাষ্ট্রের স্বার্থ রক্ষা করা।

অধ্যাপক ইউনূসের বিরুদ্ধে নোবেল বিজয়ী ও প্রথিতযশা নেতাদের বক্তব্যের পর বাংলাদেশের অনেক সরকারপন্থী ও পেশাজীবী সংগঠন এ বক্তব্যের প্রতিবাদে বিবৃতি দিয়েছে।

যেসব সংগঠন বিবৃতি দিয়েছে তাদের মধ্যে এডিটর গিল্ড, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমিতির মতো সংগঠন রয়েছে।

অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা বর্তমানে আদালতে বিচারাধীন। বর্তমানে অধ্যাপক ইউনূসের বিরুদ্ধে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরে একটি মামলা রয়েছে এবং শুনানি চলছে। শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে মামলাটি দায়ের করা হয়।

গত মাসের শেষ দিকে শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে আরও ১৮টি মামলা দায়ের করা হয়। এছাড়া অধ্যাপক ইউনূসের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের একটি মামলা রয়েছে।

About bisso Jit

Check Also

উপদেষ্টা পরিষদেই বৈষম্য

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে আঞ্চলিক বৈষম্যের অভিযোগ উঠেছে। ২৪ সদস্যের এই পরিষদে ১৩ জনই চট্টগ্রাম …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *