রাজনৈতিক মতবিরোধ ও কোন্দলের মধ্যে বুধবার তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে, এবারের জাতীয় নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক করতে রাজনৈতিক দলগুলোর বাইরে বিশ্বের অনেক নামকরা দেশ ও সংগঠন সোচ্চার। বিশেষ করে বাংলাদেশের পরিস্থিতির ওপর কড়া নজর রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র।
এরই অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু এবং ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাসও বাংলাদেশের রাজনীতিতে বেশ আলোচিত।
আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত সাবেক সংসদ সদস্য এবং বর্তমানে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত গোলাম মাওলা রনি তার নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে দেশের রাজনীতির বর্তমান গতিপথ নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন।
রনি বলেন, এ অঞ্চলের রাজনীতিতে ডোনাল্ড লু খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি একজন সফল আলোচিত ব্যক্তি। ফলে আশার সঞ্চার হয়েছে অনেকের। অনেকের সত্যিকারের ভয় আছে।
গোলাম মাওলা রনি বলেন, সম্প্রতি তিনি (লু) বাংলাদেশের তিনটি রাজনৈতিক দলকে (বিএনপি, আ.লীগ ও জাতীয় পার্টি) চিঠি দিয়েছেন। চিঠিটি মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাসও হস্তান্তর করেন। বলা যায়, এই দুই ব্যক্তি বর্তমানে অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং আওয়ামী লীগের জন্য অত্যন্ত বিরক্তিকর। ফলে আগামীতে আওয়ামী লীগ বিজয়ী হলে তারা এই দুইজনকে ব্যঙ্গ করে গান ও কার্টুন বানাবে।
লিখিত ডকুমেন্ট হিসেবে আমেরিকা বাংলাদেশকে চিঠি দিয়েছে বলে মনে করেন সাবেক এই সংসদ সদস্য। এই চিঠির মাধ্যমে আমেরিকাসহ পশ্চিমা বিশ্ব প্রমাণ করেছে আওয়ামী লীগের পক্ষে সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব নয়। তারা অংশগ্রহণমূলক বা নিরপেক্ষ নির্বাচন পরিচালনা করবে না। অথবা তারা পারে না।
তিনি বলেন, বিষয়টি আগে যেমন ইশারায় বোঝা যেত, এখন চিঠির মাধ্যমে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে। এটা আওয়ামী লীগের জন্য খুবই অপমানজনক। একটি অত্যন্ত অস্বস্তিকর এবং কূটনৈতিক বিপর্যয়। যদি তারা এটি অর্জন করতে পারে!
আমি মনে করি, আওয়ামী লীগ যত তাড়াতাড়ি এটা বুঝবে, ততই তারা অস্বস্তিকর ও অপমানজনক পরিস্থিতিতে পড়বে। কিন্তু তারা যদি এখনও রঙ তামাশা হিসেবে নেয়, তবে তারা এখনও বুঝতে পারে না কিভাবে পশ্চিমা দেশগুলো চারদিক থেকে ঘিরে ধরেছে।
সম্প্রতি সুইজারল্যান্ডে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের বৈঠক তার উদাহরণ। বাংলাদেশের মানবাধিকার বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। সেখানে বাংলাদেশের মানবাধিকার পর্যালোচনার জন্য জাতিসংঘ কয়েকটি দেশকে দায়িত্ব দিয়েছে।
তাদের মধ্যে পাকিস্তান প্রথম, রোমানিয়া দ্বিতীয়। বাংলাদেশ সম্পর্কে পাকিস্তান কী রিপোর্ট দেবে তা বোঝার বাকি নেই। জাতিসংঘ তাদের পর্যালোচনার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে চলতি মাসের ২৪ তারিখে। হয়তো দেখা যাবে আওয়ামী লীগের দুধে ভাত নাকি ভালো স্বপ্ন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ডোনাল্ড লুর চিঠি আওয়ামী লীগকে চরম অস্বস্তিতে ফেলেছে। অন্যদিকে বিএনপির নৈতিক বিজয় হয়েছে বলা যায়। যেহেতু পশ্চিমারা তাতে সিলমোহর দিয়েছে, তাতে প্রমাণ হলো বিএনপির দাবি সঠিক। এই দাবিকে পশ্চিমা বিশ্ব নৈতিক সমর্থন দিয়েছিল।