চলতি বছরের ডিসেম্বর বা তার কাছাকাছি সময়ে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হওয়া প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন যে, নির্বাচনের পূর্বে প্রয়োজনীয় সংস্কারগুলো সরকার সম্পন্ন করবে। আজ মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর মহাখালীতে রাওয়া কনভেনশন হলে পিলখানা হত্যাকাণ্ড স্মরণে আয়োজিত বিশেষ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, “আমরা একটি অবাধ, সুষ্ঠু এবং সকলের অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের দিকে এগোচ্ছি। এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করতে সরকার সহযোগিতা করবে বলে আমি বিশ্বাস করি। আমি যতবারই ড. ইউনূসের সঙ্গে কথা বলেছি, তিনি সম্পূর্ণভাবে একমত প্রকাশ করেছেন। আমাদের নির্বাচন অবশ্যই অবাধ ও সুষ্ঠু হতে হবে এবং তা ডিসেম্বরের মধ্যে কিংবা তার আশপাশে অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত।”
তিনি আরও বলেন, “প্রথম থেকেই আমি বলেছি যে, ১৮ মাসের মধ্যে একটি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সরকার সেই লক্ষ্যে অগ্রসর হচ্ছে বলে মনে করি। ড. ইউনূস নিরলসভাবে চেষ্টা করছেন দেশকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে এবং আমরা সবাইকে তার প্রচেষ্টায় সহায়তা করা উচিত। আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে, ইনশাল্লাহ।”
জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে। বিএনপিসহ বেশ কিছু রাজনৈতিক দল এবং গণ-অভ্যুত্থানের নেতৃত্বে থাকা সংগঠনগুলোর দাবি, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। অন্যদিকে, অপরপক্ষ চায় স্থানীয় নির্বাচন এবং প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করার পর জাতীয় নির্বাচন হোক।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম গতকাল জানিয়েছেন, জাতীয় নির্বাচন এই বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে অথবা সর্বোচ্চ আগামী বছরের মার্চের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে। তবে জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হবে কি না, সে বিষয়ে উপদেষ্টা পরিষদ এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি।
এদিকে, স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী জুনের মধ্যে স্থানীয় নির্বাচন সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। তিনি বলেছেন, নির্বাচন কমিশনের লক্ষ্য ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন সম্পন্ন করা এবং সে অনুযায়ী তারা এগোচ্ছেন।
সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে সেনাপ্রধান বলেন, “দিনের শেষে আমাদের দেশ ও জাতির স্বার্থের কথা ভাবতে হবে। নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব ও কাদা ছোড়াছুড়ি করলে দেশ ও জাতির সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়তে পারে। তাই আমাদের এক থাকতে হবে।”