বাংলাদেশের জেলাগুলো পরিচালনা করার জন্য নিয়োগ দেয়া হয়ে থাকে জেলা প্রশাসক। আর তাদের কাজই যেন ভুলে যাচ্ছেন দায়িত্বরত জেলা প্রশাসকরা। আর এই কারনে তারা যে জনগনের সেবক সেটা নতুন করে মনে করিয়ে দিল হাইকোর্ট।
আদালত অবমাননার মামলায় কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক মো. হাইকোর্ট সাইদুল ইসলামকে সতর্ক করে বলেন, আমাদের অভিজ্ঞতা বলে আপনি কী ধরনের জীবনে অভ্যস্ত। জমকালো জীবন যাপন করুন। আমি শক্তি প্রয়োগ করতে জানি। দুর্ভাগ্যবশত, সাধারণ মানুষ সত্য ডিসি অফিসে প্রবেশ করতে পারে না। সাধারণ মানুষ তাদের সমস্যার কথা বলার সুযোগ পায় না। আপনার অফিসের দরজা-জানালাগুলো মোটা পর্দা দিয়ে ঢাকা। যার কারণে মানুষ আপনার ছবিও দেখতে পায় না। এখন থেকে ডিসি অফিসের দরজা-জানালা খোলা রাখুন যাতে মানুষ আপনার মুখ দেখতে পারে। আপনার জানালা এবং দরজায় ভারী পর্দা ব্যবহার করবেন না।
রোববার বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান ও বিচারপতি কে এম রবিউল হাসানের হাইকোর্ট বেঞ্চ ডিসিকে সতর্ক করে এসব কথা বলেন।
তাকে উদ্দেশ্য করে হাইকোর্ট আরও বলেন, ডিসি সরকারের হৃদয়। জনগণের জন্য সেভাবে কাজ করতে হবে।
আদালত বলেন, সাধারণ মানুষের ডিসি অফিসে প্রবেশাধিকার নেই। এমনকি আপনি একটি আবেদন গ্রহণ করবেন না. এখন থেকে কোনো ধরনের পাগলামী দেখাবেন না। নিজ নিজ অবস্থান থেকে ভালো কাজ করলে দেশ ও জনগণ উপকৃত হবে।
আদালত প্রশ্ন করে বলেন, কোথাও চুরি-ডাকাতি হচ্ছে, সরকারি সম্পত্তি বেদখল হচ্ছে, অভিযোগ না পেলে বসে থাকবেন? বসার সুযোগ নেই।
পরে আদালতে কুষ্টিয়ার ডিসি মো. আদালত অবমাননার মামলায় সাইদুল ইসলামকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে আদালত অবমাননার মামলায় রুলের শুনানির জন্য ২৪ অক্টোবর দিন ধার্য করেছেন। ওই দিন কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার, ব্র্যাক ব্যাংকের এমডি ও নিলামে তোলা সম্পত্তি নেওয়া ব্যবসায়ীকে আদালতে উপস্থিত থাকতে হবে।
তবে কুষ্টিয়া সদর থানার ওসি দেলোয়ার হোসেন খানকে করোনা ভাইরাসের কারণে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
ডিসি ও এসপির পক্ষে আইনজীবী মুন্সী মনিরুজ্জামান ও ইউসুফ খান এবং এমডির পক্ষে সৈয়দ মিনহাজুল হক এবং ব্যবসায়ী শফিকুলের পক্ষে রাগীব রউফ চৌধুরী শুনানি করেন। রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রাগীব রউফ চৌধুরী।
গত ১১ ই আগস্টের একটি ঘটনায় বেশ সাড়া পড়ে যায় সবখানে। হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ থাকার পরেও ২৩ কোটি টাকার সম্পত্তি ১৫ কোটি টাকায় নিলামে বিক্রি করার ঘটনা ঘটে। আর সেই ঘটনার জের ধরেই ব্র্যাক ব্যাংকের এমডি সেলিম আর এফ হোসাইন, কুষ্টিয়ার ডিসি মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম, এসপি মো. খায়রুল আলম, সদর থানার ওসি মো. সাব্বিরুল আলম ও নিলামে সম্পত্তি নেয়া ব্যবসায়ী আব্দুল রশিদকে তলব করেন হাইকোর্ট।এরপরেই দেয়া হয় এই সকল নির্দেশনা এবং তাদেরকে করা হয় সতর্ক।