Thursday , November 14 2024
Breaking News
Home / Countrywide / ডিভোর্সের পর পুনরায় একই স্বামীকে বিয়ে, বিপুল অর্থ নিয়ে লাপাত্তা স্ত্রী

ডিভোর্সের পর পুনরায় একই স্বামীকে বিয়ে, বিপুল অর্থ নিয়ে লাপাত্তা স্ত্রী

সরকার নারীদের নিরাপত্তার বিষয় নিয়ে আইন জোরদার করেছে, কিন্তু নারী সংশ্লিষ্ট আইন ব্যবহার করে কিছু কিছু নারী প্রতারণার আশ্রয় নিচ্ছে। এমন একটি ঘটনা ঘটেছে, লালমনিরহাট আদিতমারী উপজেলার একটি এলাকায়। ওই এলাকায় এক প্রবাসী ব্যক্তিকে দ্বিতীয়বার বিয়ে করে এক নারী হাতিয়ে নিয়েছে বিপুল পরিমাণ টাকা। শেষ অবধি তার সন্তানকেও তার কাছে রেখে অন্য ব্যক্তির সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন ওই নারী।

এই ঘটনায় উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নে মাদ্রাসা শিক্ষকসহ তিনজনের বিরুদ্ধে বিয়ের নামে পাঁচ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে মামলা করেছেন ঐ প্রবাসী।

মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) বিকেলে লালমনিরহাটের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালত-২ এ মামলাটি করেন তিনি। পরে বিচারক আহসান হাবিব অভিযোগটি আমলে নিয়ে আদিতমারী থানা পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দেন।

আসামি আলেমা খাতুন সারপুকুর উপজেলার মসুর দৈলজোর গ্রামের আব্দুর রউফের মেয়ে। কামরুজ্জামান বদি উপজেলার মহিশাখোচা ইউনিয়নের বারঘড়িয়া গ্রামের মনির উদ্দিনের ছেলে। তিনি বর্তমানে আদিতমারী শহরের টিএন্ডটি পাড়ায় থাকেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়, কামরুজ্জামান দীর্ঘদিন ধরে লিবিয়ায় একটি বেসরকারি কারখানায় কাজ করেন। প্রায় পাঁচ বছর আগে দেশে ফেরেন তিনি। আবদুর রউফের মেয়ে কলেজ ছাত্রী আলেমা খাতুনকে ১ জানুয়ারী, ২০১৫ তারিখে বিয়ে করেন। স্বপ্ন পূরণে স্ত্রীকে স্নাতক, স্নাতকোত্তর ও বিএড শেষ করান। এরই মধ্যে তাদের সংসারে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। পরে স্ত্রীকে লালমনিরহাট নেছারিয়া মাদ্রাসার ইবতেদায়ি শাখায় সহকারী শিক্ষকের চাকরিও নিয়ে দেন। কিন্তু চাকরির পর তার স্ত্রীর আচরণ দিন দিন বদলে যেতে থাকে। আলেমা খাতুন তার নামে বাড়ি, গাড়ি ও জমির রেজিস্ট্রি দাবি করেন। এসময় বৃদ্ধা শাশুড়িকে ঘর থেকে সরাতে বলেন। কামরুজ্জামান এতে রাজি হননি।

২০২০ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি আলেমা কামরুজ্জামানকে ডিভোর্স দেন। দেড় বছর পর তিনি আবার কামরুজ্জামানের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং তাকে বিয়ে করতে প্রলুব্ধ করেন। এ সময় পাঁচ বছরের শি”শুর মুখের দিকে তাকিয়ে আলেমার প্রতা”রণার ফাঁদে পা দেন প্রবাসী কামরুজ্জামান। পরে ১৬ আগস্ট, ২০২১ তারিখে আলেমা খাতুন কামরুজ্জামানকে তার মাদ্রাসা শিক্ষক ও নিকটাত্মীয় সাপ্টিবাড়ি ইউনিয়নের নিকাহ রেজিস্ট্রার কাজী ফয়সাল আহমেদের বাসায় ডেকে নেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী তারা সেখানে একটি নতুন বিয়ের রেজিস্ট্রি বইয়ে এবং একটি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করেন। পরে মাসিক দুই হাজার টাকা ভাড়ায় ছেলেকে নিয়ে নিকাহ রেজিস্ট্রারের বাসায় থাকতে শুরু করেন। অন্যদিকে আলেমা খাতুন স্বামীর কাছ থেকে টাকা দিয়ে গয়না কেনেন। স্বামী কামরুজ্জামানকে ব্যাংকে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে পাঁচ লাখ টাকাও নেন তিনি। কিন্তু তিন মাস পর আলেমা তার ছেলেকে কামরুজ্জামানের কাছে গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে ভাড়া বাড়ির সব আসবাবপত্র নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে মাদরাসায় দেখা করতে গেলে তাকে গালমন্দ করে তাড়িয়ে দেন তিনি।

অপরদিকে কামরুজ্জামান জানতে পারেন তার স্ত্রী আলেমা খাতুন তাকে তালাক না দিয়েই পুনরায় বিয়ে করে লালমনিরহাট পূবালী ব্যাংকের কর্মচারী রেজাউল ইসলামকে এবং সংসার শুরু করেন। পরে দ্বিতীয় বিয়ের কাবিন নামা ওঠাতে গেলে নিকাহ রেজিস্ট্রার কাজী ফয়সাল এফিডেভিটের ফটোকপি দিয়ে বিদায় করেন। এরপর কামরুজ্জামান বুঝতে পারেন, নিকাহ রেজিস্ট্রার ফয়সাল, ব্যাংক কর্মচারী রেজাউল তার স্ত্রী আলেমাকে সঙ্গে নিয়ে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করে প্রতা”রণা করেছেন।

এ ঘটনায় কামরুজ্জামান বাদী হয়ে আলেমা খাতুন, সাপ্টিবাড়ি ইউনিয়নের নিকাহ রেজিস্ট্রার ফয়সাল আহমেদ ও পূবালী ব্যাংকের কর্মচারী রেজাউলের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার লালমনিরহাট অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালত-২ এ মামলা করেন।

প্রতারণার আশ্রয় নেয়া ঐ সহকারি শিক্ষিকা আলেমা খাতুনের সাথে কথা বলার জন্য যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। রফিকুল ইসলাম যিনি আদিতমারী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, তিনি ঘটনার বিষয়ে বলেন, মামলা দায়ের হয়েছে এবং এরপর আদালত থেকে আদেশ দিয়েছেন বিচারক। তবে থানায় এ বিষয়ে কোনো কাগজপত্র আসেনি। তাই আমি এই মুহূর্তে কিছু বলতে পারছিনা। তবে কাগজপত্র এলে আপনাদের এ বিষয়ে জানাতে পারব।

About bisso Jit

Check Also

উপদেষ্টা পরিষদেই বৈষম্য

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে আঞ্চলিক বৈষম্যের অভিযোগ উঠেছে। ২৪ সদস্যের এই পরিষদে ১৩ জনই চট্টগ্রাম …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *