এমপি ও মন্ত্রীরা হলেন সমাজের উচ্চ পর্যায়ের সম্মানিত ব্যক্তিবর্গ। তারা হলেন জনগনের ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। জন গনের সার্বিক উন্নয়ন ও মঙ্গলের লক্ষে তারা কাজ করে থাকেন। সাংবাদিকরা বা সাধারণ মানুষেরা এমপি ও মন্ত্রীদের দেখলে ছবি তুলে থাকে। সম্প্রতি জানা গেল নতুন একটি খবর। গোয়েন্দা বিভাগ বলেছেন মন্ত্রী এমপি বিশিষ্ট ব্যক্তিদের ছবি তোলায় সতর্ক থাকতে হবে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) প্রধান ও অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ মন্ত্রী, সংসদ সদস্য এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিদের অপরিচিত বা স্বল্প পরিচিত ব্যক্তিদের সঙ্গে ছবি তোলার ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্ক থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন। দেখাদেখি লেনদেন না করার অনুরোধ জানান তিনি।
হারুন মঙ্গলবার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ অনুরোধ জানান।
এর আগে প্রতারণার অভিযোগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অতিরিক্ত ব্যক্তিগত কর্মকর্তা পরিচয়ে (এপিও) মো. রাসেল মিয়া নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সাইবার ও বিশেষ অপরাধ বিভাগ। গ্রেফতারকৃত রাসেলের কাছ থেকে দুটি প্রতারণামূলক মোবাইল ফোন, দুটি সিম কার্ড, ১৬টি ভিজিটিং কার্ড (স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এপিও পরিচয়সহ) এবং একটি সিল (স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এপিও পরিচয়সহ) জব্দ করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত রাসেল রংপুরের পীরগঞ্জের বাসিন্দা।
গ্রেফতারের পর বিস্তারিত তুলে ধরতে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ডিএমপি ডিবি প্রধান হারুন।
তিনি বলেন, রাজ বিন রাসেল তালুকদার নামে এক ব্যক্তি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ বেশ কয়েকজন মন্ত্রীসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ছবি ফেসবুকে ব্যবহার করেন। নিজেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এপিও পরিচয় দিয়ে একটি ভিজিটিং কার্ডও তৈরি করেন তিনি। এই পরিচয় দিয়ে সে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় চাকরির প্রলোভন, বিভিন্ন রাজনৈতিক সমস্যা সমাধান, পুলিশে লোক নিয়োগ, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স, বদলি, এলাকায় মামলা নিষ্পত্তিসহ অনেক টাকা আত্মসাৎ করে। ১৮ জুলাই তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় একটি প্রতারণার মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী।
পুলিশ জানায়, গ্রেফতারকৃত রাসেল ফেসবুকে আইডি খোলেন। রাজ বিন রাসেল তালুকদার নামে। তার কাজ ছিল মন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে ছবি তোলা এবং ওই আইডিতে পোস্ট করা।
এছাড়া আওয়ামী লীগের ধানমন্ডি কার্যালয়ে নিয়মিত যাতায়াত করেন রাসেল। ফলে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতাকর্মীদের সঙ্গে তার সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। আওয়ামী লীগের ধানমন্ডি কার্যালয়ে তোলা ছবিও তিনি নিয়মিত ফেসবুকে পোস্ট করতেন। এভাবে তিনি নিজেকে রংপুরের একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেন। এ ছাড়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এপিও পরিচয় দিয়ে ভুয়া ভিজিটিং কার্ড তৈরি করে সবাইকে দেন।
প্রসঙ্গত, এমপি ও মন্ত্রীরা দেশের উন্নয়নেও বেশ ভূমিকা পালন করে থাকে। জনগনের ভোটে নির্বাচিত হয়ে তারা সাধারণ মানুষের পাশে এসে দাঁড়ান। মানুষের সকল ধরণের দুঃখ-কষ্ট দূরী করণে তাদের অবদান অপরিসীম। এমপি ও মন্ত্রীরা সাধারণ মানুষের থেকে আলাদা হবার কারণে তাদের প্রতি মানুষের অত্যন্ত কৌতহল থাকে। তাই তাদের দেখার সঙ্গে সঙ্গে মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়ে ছবি তোলার জন্য।