সম্প্রতি বরখাস্ত হওয়া ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহমেদ ভূঁইয়া শুক্রবার ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসে সপরিবারে আশ্রয় নিয়েছিলেন। মার্কিন দূতাবাসে আশ্রয় নেওয়ার পর নিজেই গণমাধ্যমকে এসব কথা জানান তিনি।
শনিবার ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের মুখপাত্র ব্রায়ান শিলার সঙ্গে এমরান আহমেদ ভূঁইয়ার বিষয়ে যোগাযোগ করা হয়। তবে তিনি এ বিষয়ে তথ্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
এ সময় ব্রায়ান শিলার বলেন, এই মুহূর্তে দেওয়ার মতো কোনো তথ্য আমাদের কাছে নেই। এর বাইরে তিনি কিছু বলতে রাজি হননি।
এর আগে শুক্রবার বিকেলে নিরাপত্তাহীনতায় তিন মেয়ে ও স্ত্রীসহ মার্কিন দূতাবাসে আশ্রয় নেন এমরান আহমেদ ভূঁইয়া।
এ সময় তিনি বলেন- ‘আমি আজ আমার পুরো পরিবার নিয়ে মার্কিন দূতাবাসে বসে আছি আশ্রয়ের জন্য। বাইরে পুলিশ। আজ আমাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। আমি গত ৪-৫ দিন ধরে আমার ফেসবুক মেসেঞ্জার এবং হোয়াটসঅ্যাপে ক্রমাগত হু/মকি পাচ্ছি। এই সরকার জেল দিয়ে ভালোবাসার প্রতিদান দেয়। আমার কোনো মার্কিন ভিসা নেই। আমি আমার তিন মেয়েকে নিয়ে এখানে মাত্র ৩টি ব্যাগ ও একটি কাপড়ে বসে আ/ছি। আমাদের জন্য দোয়া করবেন।
প্রসঙ্গত, গত ২৮শে আগস্ট নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে চলমান বিচারিক কার্যক্রম স্থগিত ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটি চিঠিতে স্বাক্ষর করেন ১৬০ জনেরও বেশি বিশ্বনেতা, যার মধ্যে ১০০ জনেরও বেশি নোবেল বিজয়ী ছিল।
ওই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন সংগঠন, প্রতিষ্ঠান ও পেশাজীবীদের পক্ষ থেকে বিবৃতি দেওয়া হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় থেকে প্রতিবাদ বিবৃতি দেওয়ার কথা রয়েছে- এমনটাই দাবি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহমেদ।
এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি ১৬০ জন নোবেল বিজয়ী এবং সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এবং সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনের বক্তব্যের সঙ্গে একমত। আমি মনে করি, অধ্যাপক ড. ইউনূস একজন সম্মানিত মানুষ। তার মানহানি হচ্ছে এবং এটা বিচারিক হ/য়রানি। আমি এই বিবৃতিতে স্বাক্ষর না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
পরদিন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, চিঠিতে স্বাক্ষর না করে শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন ইমরান।
এর পরিপ্রেক্ষিতে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগ গত বৃহস্পতিবার এমরান আহমেদ ভূঁইয়াকে তার পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে।
রাষ্ট্রপতির আদেশে এ অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে বলে প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে।
এরপর এমরান আহমেদ ভূঁইয়া বিকেলে বাসা থেকে বের হয়ে ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসে পরিবারের সঙ্গে আশ্রয় নেন।