মায়ের ভালোবাসা হলো পৃথিবীর সবথেকে আসল ভালোবাসা। মায়ের ভালোবাসায় কোনো খুঁত নেই। একজন সন্তান তার মাকে যতটা ভালোবাসে ঠিক তেমনি একজন মা তার সন্তানকে ততটা ভালোবাসে। মায়ের চেয়ে আপন এই দুনিয়াতে আর কেউ হতে পারে না। তাই মায়ের এই ভালোবাসাকে আগলে রাখতে সন্তান যেকোনো ত্যাগ শিকার করতে পারে। সম্প্রতি আজান গেল এক সন্তান তার মায়ের জীবন বাঁচাতে নিজের কলিজা কেটে দিচ্ছেন।
মাকে বাঁচাতে লিভারের একটি অংশ দান করতে যাচ্ছেন কুমিল্লার ময়নামতি মেডিকেল কলেজের সাবেক এক শিক্ষার্থী মাসুদুল করিম। এই তরুণ চিকিৎসকের মায়ের লিভারে টিউমার ধরা পড়েছে। মা বর্তমানে ভারতের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সেখানে ৩০ শতাংশ রোগীকে লিভার প্রতিস্থাপনের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। আর নিজের লিভার থেকে কেটে মাকে দান করেন ডা. মাসুদ।
এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেন ড. মাসুদুল করিম বলেন, সবই আল্লাহর ইচ্ছা। মায়ের সুস্থতার জন্য সবার কাছে দোয়া চাই।
মাসুদের মায়ের অসুস্থতা নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন এফডিএসআরের ছাত্র সংগঠনের আহ্বায়ক ড. জোবায়ের রাফি।
তিনি লিখেছেন, “বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল টিম চাচির চিকিৎসার জন্য লিভার ট্রান্সপ্লান্ট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।” সবাই চিন্তিত কিভাবে কি করবেন। কে দেবে আন্টির লিভার (লিভার)। খুঁজতে লাগলো। কিন্তু কিভাবে সম্ভব?
যে দেশ মুমূর্ষ রোগীর জন্য রক্ত লাগলে হন্য হয়ে খুঁজতে হয়। একজন সুস্থ মানুষ রক্ত দিতে ভয় পায়! সে দেশে কলিজা ডোনেট! কল্পনার রাজ্যে বসবাস ছাড়া কিছুই নয়।
পরিবারের অন্য সবার পরীক্ষা নিরীক্ষা হলো। এতে তিনজনের তথা ওর ছোটবোন ছোটভাই আর মাসুদের সঙ্গে সবকিছু ম্যাচ করে, বাকি ভাই বোন দুজনের বয়স কম। এখনো সবকিছু বুঝার ক্ষমতা হয়ে উঠেনি। মাসুদ সিদ্ধান্ত নিল, ওর আম্মুকে বাচাঁতে হলে নিজেকেই কিছু একটা করতে হবে। মাসুদ সিদ্ধান্ত নিল, ওর কলিজা দিয়ে আম্মু বেঁচে থাকবে। এর থেকে ভালো কাজ জীবনে কী হয়? মাসুদের কলিজার ৩০% ওর আম্মুর জন্য ডোনেট করবেন। আমি তো বলি, ৩০ শতাংশ কলিজা তো কেটে দিবে মাত্র। ও তো পুরো কলিজাটাই মা-বাবার জন্য দিয়ে দিয়েছে।’
প্রসঙ্গত, মায়ের জন্য একজন সন্তানের এমন আত্মত্যাগ চিরকাল পৃথিবীর বুকে স্বরণীয় হয়ে থাকবে। মাকে একজন সন্তান কতটা ভালোবাসতে পারে তার জ্বলন্ত প্রমাণ দিলেন এই ডাক্টার ছেলে। মা হলো পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সম্পদ। যার মা নেই শুধুমাত্র সেই বোঝে মা না থাকার কষ্ট। তাই মাকে বাঁচাতে ছেলে তার নিজের কলিজা কেটে দিল।