সাব-সাহারান আফ্রিকার ৪৬টি দেশের অর্থনীতি ডলারের বিপরীতে স্থানীয় মুদ্রার পতনের কারণে ভুগছে। বেশিরভাগ সাব-সাহারান আফ্রিকান মুদ্রা বিশ্ব বাণিজ্য মুদ্রার বিপরীতে দুর্বল হয়ে পড়ছে। ফলে স্থানীয় মুদ্রার মান ও ক্রয়ক্ষমতা দিন দিন কমে যাচ্ছে।
নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম এত বেড়ে গেছে যে এসব দেশে পণ্য কেনা বেচা খুবই কঠিন হয়ে পড়েছে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ডলারের বিপরীতে স্থানীয় মুদ্রার অবমূল্যায়ন মূল্যস্ফীতির জন্য দায়ী।
নাইজেরিয়ার একটি হিমায়িত খাবারের দোকানের মালিক আরিনোলা ওমোলায়ো। তিনি তার দোকানে বেশিরভাগ আমদানি করা মুরগি, মাছ ও টার্কি বিক্রি করে থাকেন। তিনি বলেন, দোকানে এসে তিনি খুশি হতেন। কিন্তু এখন আসতে মন চায় না। কারণ খাদ্যের ঊর্ধ্বগতি। হিমায়িত মুরগির দাম এখন প্রায় ২৬ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে।
অক্টোবরে প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, আফ্রিকা মহাদেশের বৃহত্তম তেল উৎপাদনকারী দেশ নাইজেরিয়া এবং অ্যাঙ্গোলার মুদ্রার অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। নাইরা এবং কোয়ানজা ডলারের বিপরীতে প্রায় ৪০ শতাংশ হারিয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের মতে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বাণিজ্য প্রতিবন্ধকতা দূর করার সিদ্ধান্তের ফলে ন্যাড়ার অবমূল্যায়ন হয়েছে। অন্যদিকে, তেলের দাম পড়ে যাওয়া এবং ভারী ঋণ পরিশোধের কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাজারে কোয়ানজার মূল্য ছেড়ে দিয়েছে।
প্রতিবেদনে অন্যান্য আফ্রিকান মুদ্রার মূল্যও উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে দক্ষিণ সুদান (৩৩ শতাংশ), বুরুন্ডি (২৭ শতাংশ), গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কঙ্গো (১৮ শতাংশ), কেনিয়া (১৬ শতাংশ), জাম্বিয়া, ঘানা (১২ শতাংশ) এবং রুয়ান্ডা (১১ শতাংশ)।
আফ্রিকার তামার রাজধানী জাম্বিয়াতে, ভুট্টা, মাংস, মাছ এবং জনপ্রিয় শুকনো কুমড়া পাতা সহ প্রধান খাবারের দাম গত পাঁচ মাসে ১৪ শতাংশের বেশি বেড়েছে। কিছু ক্ষেত্রে দাম দ্বিগুণ হয়েছে।
নাইজেরিয়া, ঘানা, কেনিয়া এবং জাম্বিয়ার সরকার মুদ্রাস্ফীতি কমাতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে। বিশেষ করে, সরকারগুলো আফ্রিকান কন্টিনেন্টাল ফ্রি ট্রেড এগ্রিমেন্ট (AFCFTA) পুরোপুরি বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে। এটা করতে পারলে পরস্পরের সঙ্গে স্থানীয় মুদ্রায় লেনদেন করতে পারবে।