ডলারের দাম বৃদ্ধিতে বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। বিগত কিছুদিন আগে ডলারের দাম নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলেও বর্তমানে কিছুটা কমে গেছে বলেও জানিয়েছেন বিভিন্ন মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠান। বৈদেশিক মুদ্রার দাম বিভিন্ন সময়ে বৃদ্ধি পওয়া ও কমে যাওয়া এটি একটি স্বাভাবিক বিষয়, তবে কয়েক যুগ ধরে ডলারের দাম বৃদ্ধি পায়নি বলেও জানিয়েছেন তারা।
এবার ডলার সংকট কাটাতে বিলাস দ্রব্যসহ সব ধরনের আমদানির ওপর নানা শর্ত আরোপ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সুফল আসতে শুরু করেছে। আমদানির জন্য এলসি (লেটার অব ক্রেডিট) খোলার সংখ্যা কমেছে। এ কারণে ডলারের দাম কমতে শুরু করেছে। আজ, ১৪ আগস্ট রবিবার নগদ ডলারের দাম কার্ব মার্কেট বা খোলা বাজারে ১১২ টাকা থেকে ১১৪ টাকায় নেমে এসেছে। গত বৃহস্পতিবারও এক ডলার কিনতে গ্রাহকদের দিতে হয়েছে ১১৮ থেকে ১২০ টাকা। অর্থাৎ তিন দিনের ব্যবধানে খোলা বাজারে ডলারের দাম কমেছে ৬ থেকে ৮ টাকা।
এদিকে মতিঝিলের খুচরা ডলার বিক্রেতা মোহাম্মদ আলী জানান, আজ ডলারের বাজার কমছে। সকালের শুরুতে বিক্রি করেছি ১১৫ টাকায়। এখন বিক্রি হচ্ছে ১১৩ টাকা, কিনছেন ১১১ টাকায়।
এ সময় মানি এক্সচেঞ্জের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আজ ডলারের দর অনেক কমেছে। কেউ বিক্রি করতে চাইলে আমি ১১০ টাকা ৫০ পয়সায় কিনছি। আর বিক্রি করছি ১১২ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ১১৩ টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হঠাৎ করে বাজারে অভিযান চালাচ্ছে। এই ভয়ে যারা খুচরা ডলার বিক্রি করেন তারা আগের মতো সরাসরি ডলার বিক্রি করছেন না। এ ছাড়া কিছু সরবরাহ বেড়েছে, যার কারণে ডলারের মূল্য কমছে। তবে আগামীকাল দাম বাড়বে না কমবে তা অনিশ্চিত।
এদিকে আমদানি ব্যয় অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পাওয়ায় বাংলাদেশ বড় ধরনের বাণিজ্য ঘাটতির মধ্যে পড়েছে। ডলারের তীব্র সংকট রয়েছে। কমেছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। এমতাবস্থায় আমদানি রোধে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নানা শর্ত আরোপ করে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ১১ আগস্ট দেশে মোট ১ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলারের আমদানি ঋণ খোলা হয়েছে। যা জুলাই মাসের তুলনায় ৯৪ মিলিয়ন ডলার বা ৩৬ শতাংশ কম। জুলাই মাসে আমদানি ছিল $2.55 বিলিয়ন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, জুলাই মাসে দেশে ৫ দশমিক ৫৫ বিলিয়ন ডলারের আমদানি ক্রেডিট কার্ড খোলা হয়েছে, যা জুন মাসের তুলনায় ৩০ দশমিক ২০ শতাংশ কম। জুন মাসে, আমদানি ঋণ খোলা হয়েছিল $7.96 বিলিয়ন ডলারে। জুনে আমদানি ঋণ মে মাসের তুলনায় ৭ শতাংশ বেশি খোলা হয়েছে। মে মাসে 7.44 বিলিয়ন ডলারের ঋণ খোলা হয়েছিল।
বাংলাদেশ ব্যাংক এক গন মাধ্যমকে বলছে, গত দুই বছর ধরে ডলারের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। এমনকি আগস্টের শুরুতেও দাম ছিল প্রতি ডলার ৮৪.৮০ টাকা। কিন্তু চলতি বছরের ৫ আগস্ট থেকে ডলারের দাম বাড়তে শুরু করে। এ বিষয় নিয়ে ব্যাসায়ীদের মাধ্যে নানা ধরনের মিশ্র পতিক্রীয়া দেখা দিয়েছে। আমদানিকারক পন্য কিনতে গুনতে হচ্ছে বেশি টাকা, যার জন্য বাংলাদেশে বেড়ে চলেছে আমদানি কারা পন্যের দাম।