খোলা বাজারে ডলারের দাম নতুন রেকর্ড গড়ল। আজ প্রতি ডলার বিক্রি হচ্ছে প্রায় ১১৮ টাকায়। হঠাৎ কার্ব মার্কেটে ডলারের চাহিদা বেড়ে যায়। কিন্তু উল্টো সরবরাহ বাড়েনি। ফলে বাজারে মার্কিন ডলারের স্পষ্ট সংকট দেখা দিয়েছে। বাণিজ্যিক ব্যাংকেও নগদ ডলারের দাম বেড়েছে। ব্যাংকগুলো গড়ে ১১০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১১২ টাকা হারে ডলার বিক্রি করছে।
কিন্তু বেশির ভাগ ব্যাংকই নগদ ডলারের সংকটে পড়েছে। যে কারণে তারা নগদ ডলার বিক্রি করতে পারছে না। এতে কার্বোহাইড্রেটের বাজারে চাপ বেড়েছে। খোলা ডলারের বাজার সম্পূর্ণ অবৈধভাবে পরিচালিত হচ্ছে।
রাজধানীর মতিজিল, দিলকুশা, পল্টন, গুলশান, চট্টগ্রাম, রাজধানী ঢাকার বিমানবন্দরে খোলা ডলারের বাজার গড়ে উঠেছে। ব্যাংক থেকে ডলার না পেয়ে অনেকেই এখন থেকে কিনছেন। আবার অনেকে ব্যাংকের চেয়ে বেশি দাম পেয়ে খোলা বাজারে ডলার বিক্রি করে।
সূত্র জানায়, এক মাস আগেও কার্ব মার্কেটে প্রতি ডলার সর্বোচ্চ ১১৪ টাকা দামে বিক্রি হয়েছিল। এরপর থেকে দাম বেড়েই চলেছে। এ মাসের শুরুতে কখনো কখনো বিক্রি হতো ১১৬ টাকায়। গত সপ্তাহ থেকে দাম বেড়েছে ১১৭ টাকার বেশি। গত বুধবার প্রতি ডলার সর্বোচ্চ ১১৭ টাকা ৮০ পয়সা দরে বিক্রি হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সেই দাম ঠিক থাকলেও কোথাও কোথাও বিক্রি হয়েছে ১১৮ টাকার কাছাকাছি। রবিবার দিলকুশা বাণিজ্যিক এলাকার কার্ব মার্কেটে প্রতি ডলার বিক্রি হয়েছে গড়ে ১১৭ টাকা ৯০ পয়সা দরে। দিন শেষে তা বিক্রি হয়েছে ১১৮ টাকায়।
গত ১ আগস্ট থেকে ব্যাংকগুলোতে নগদ ডলারের দাম গড়ে এক টাকা বেড়েছে। বেশিরভাগ ব্যাংকই নগদ ডলার বিক্রি করছে ১১০ টাকা থেকে ১১২ টাকায়। ফলে ব্যাংকের কাছে কার্ব মার্কেটের শেয়ার ৬ থেকে ৮ টাকা।
এদিকে ব্যাংকগুলো কিনছে ১০৯ থেকে ১১১ টাকায়। খোলা বাজারে ডলার কেনা হচ্ছে ১১৬ টাকা ৭০ পয়সা থেকে ১১৭ টাকা ১০ পয়সা দরে। ব্যাংকের তুলনায় খোলা বাজারে ডলারের দাম বেশি হওয়ায় দেশে আসা নগদ ডলারের বড় অংশই যাচ্ছে খোরা বাজার বা কারবারি বাজারে।
এদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সার্কুলার অনুযায়ী ব্যক্তি পর্যায়ে কোটার অতিরিক্ত ডলার রাখলে শাস্তির বিধান রয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী, একজন প্রবাসী বা বিদেশ থেকে ফেরত ব্যক্তি সর্বোচ্চ ১০ হাজার ডলার রাখতে পারবেন। এর চেয়ে বেশি ডলার থাকলে তা বিদেশ থেকে আসার এক মাসের মধ্যে ব্যাংক বা মানি চেঞ্জারদের কাছে বিক্রি করতে হবে। বন্দরে রক্ষিত শুল্ক ফর্মে ওই ডলারগুলো ধরে রাখার বিষয়ে একটি ঘোষণা দিতে হবে।
কিন্তু এ ধরনের ঘোষণা ছাড়াই বা ব্যাংক বা কার্ব মার্কেট থেকে কিনে অনেকেই নিজের কাছে ডলার রাখছেন। সাম্প্রতিক সময়ে বিদেশ ভ্রমণ বা চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। কিন্তু উল্টো ব্যাংক থেকে ডলার পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে কার্বোহাইড্রেটের বাজারে চাপ বেড়েছে।
২০২২ সালের এপ্রিল থেকে দেশে ডলার সংকট শুরু হয়। এটি মে মাসে একটি বিশিষ্ট আকার ধারণ করে। এরপর থেকে ক্রমান্বয়ে বাড়ছে এই সংকট। এতে ডলারের দামও বেড়ে যায়।