Friday , November 22 2024
Breaking News
Home / Sports / ডমিঙ্গোকে আর পাত্তা দেওয়া হচ্ছে না বিসিবির তরফ থেকে

ডমিঙ্গোকে আর পাত্তা দেওয়া হচ্ছে না বিসিবির তরফ থেকে

মাঠে হাজির হয়ে নিয়মিত খেলা দেখছেন, বাংলাদেশের ধারাবাহিক পরাজয়ে কিছুটা হলেও ব্যথিত না হতে পারার কোনো কারণ নেই। আর বাকি আছে দুটি ম্যাচ সেগুলোও না দেখে দেশে ফিরতে পারছেন না বাংলাদেশ ক্রিকেটের বোর্ড পরিচালক নাঈমুর রহমান দূর্জয়। খেলার বিরতির সময়টা তিনি এদিক ওদিক ঘুরে ফিরে বেড়ান কিন্তু সেটা সত্ত্বেও, বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট অধিনায়ক খেলার বিষয়ে কেমন যেন প্রতিক্রিয়া জানাতে ভুলে গেছেন এবং তিনি বোর্ডের যারা অন্য সহকর্মী তাদের মতোই আশ্চ’র্যজনকভাবে নীরব। তাদের কোনো বক্তব্য পাওয়া যাচ্ছে না ম্যাচের বিষয়ে, করছেন না কোনো ধরনের মন্তব্য। মুখে কুলুপ এঁটে রয়েছেন এই বোর্ড পরিচালক সেটা তার নিকট হুঁশিয়ারি হলেও তার প্রচ্ছন্ন ঔদ্ধত্য স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, ‘আমাকে দিয়ে কথা বলে আমাকে অপমানিত হওয়াতে চাও কেন? আমাকে গালম’ন্দ শুনতে হয় কেন?

খারাপ কথা না শুনলেও, গত কয়েকদিনে যা শুনেছেন, তাতে অভিমানের বরফ এত জমে গেছে যে এখন আর গলছে না। আবার নতুন কিছু না শোনার জন্য ক্রিকেটার থেকে প্রশাসক হওয়া নাইমুর আর কোনো প্রসঙ্গ তুলছেন না। এমনকি জাতীয় দলের তত্ত্বাবধায়ক কমিটির প্রধান আকরাম খানও নীরব হয়ে বসে রয়েছেন।

ওমানের মাসকাটে স্কটল্যান্ডের কাছে বাছাই পর্বের ম্যাচ হারার পরদিনই বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান সংবাদমাধ্যমের সামনে সিনিয়র ক্রিকেটারদের নিয়ে যে তী’ব্র সমালোচনায় মেতেছিলেন, সেটিই আসলে খুলে দেয় বোর্ড-ক্রিকেটার মুখোমুখি অবস্থান নেওয়ার পথ। ওমানকে হারানোর পর থেকেই এর জের টানা শুরু। সেদিন ম্যাচের পর সাকিব আল হাসানের সংবাদ সম্মেলনে প্রায় প্রতিটা প্রশ্নের জবাবেই ছিল উষ্ণতা। তখনই কারণ বোঝা না গেলেও প্রশাসকদের ওপর ক্রিকেটারদের চটে থাকার ব্যাপারটি বোঝা যায় পাপুয়া নিউ গিনিকে হারানোর পর। মুখ খোলেন অধিনায়ক মাহমুদ উল্লাহ। আর সুপার টুয়েলভ পর্বে নিজেদের প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার কাছে হারের পর সমালোচকদের আয়নায় মুখ দেখার পরামর্শ দিয়ে পাল্টা আ’ঘা’/ত হানেন মুশফিকুর রহিমও।

তাঁর কথার লক্ষ্যবস্তু কারা ছিলেন, প্রশাসকদের এই সময়ের নীরবতাই সেটি আরো স্পষ্ট করে তুলেছে। তাঁরাও নতুন কোনো বিতর্ক উসকে না দিয়ে বরং বিশ্বকাপের বাকি দুই ম্যাচ শেষে ঘরে ফেরার অপেক্ষায়। তবে অভাবের সংসারে যেমন নিত্য টানাপড়েন লেগেই থাকে, তেমনই অবস্থা যেন বাংলাদেশ দলেরও। বোর্ড-ক্রিকেটার মুখোমুখি অবস্থানের আ’গু/নে ঘি ঢালতে যে এবার যোগ দিয়েছেন রাসেল ডমিঙ্গোও। বিশ্বকাপ শেষে দেশে ফেরার কিছুদিনের মধ্যেই পাকিস্তানের বিপক্ষে হোম সিরিজ। সেই সিরিজ সামনে রেখে অনুশীলনের সূচি নির্ধারণ করা নিয়েই ভেতরে ভেতরে লেগে গেছে ক্রিকেট অপারেশনস কমিটির প্রধান আকরাম আর জাতীয় দলের হেড কোচের মধ্যে। ১২ নভেম্বর থেকে অনুশীলন শিবির করার তারিখ ঘোষণা করে দিয়েছেন আকরাম। এটা আবার ভালোভাবে নিতে পারেননি ডমিঙ্গো। এর প্রতিক্রিয়ায় এই প্রোটিয়া কোচ পাল্টা যা করেছেন, তা-ও বোর্ডের অনেকের চোখে ‘ঘোড়া ডিঙিয়ে’ যাওয়ার মতো ব্যাপারই। আকরামের সঙ্গে নয়, ডমিঙ্গো সরাসরি যোগাযোগ করেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন চৌধুরীর সঙ্গে। হেড কোচের কথায় জবাবদি’হি চাওয়ার সুরই ছিল বলে জানা গেছে নির্ভরযোগ্য সূত্রে। প্রধান নির্বাহীর কাছে ডমিঙ্গোর প্রশ্ন এ রকম হয়ে থাকলে তো উত্তাপ ছড়ানোরই কথা, ‘কার অনুমতি নিয়ে অনুশীলন শিবিরের সূচি ঠিক করা হলো?’

এমনিতে জাতীয় দলের জন্য যেকোনো পরিকল্পনা ঠিক করার আগে হেড কোচের সঙ্গে আলাপ করে নেওয়ার রেওয়াজ আছে। তাঁর পরামর্শকে গুরুত্বও দেওয়া হয়। দলের টানা হারে এবার সেই গুরুত্ব হারানো ডমিঙ্গো দুবাইতেই অবস্থান করা আকরামের সঙ্গে কথা না বলে শর’ণা’পন্ন হন দেশে থাকা প্রধান নির্বাহীর, যা নিয়ে দলের বাজে সময়ের মধ্যেও আরেক দফা বিষবাষ্প ছড়ানো স্বাভাবিক। সময় প্রতিকূল বলেই হয়তো এ বিষয়ে ঝাঁজালো প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেল না আকরামের। তবে অনুশীলন সূচি নিয়ে প্রধান নির্বাহীর সঙ্গে ডমিঙ্গোর সরাসরি যোগাযোগের বিষয়টি স্বীকার করলেন তিনি, ‘আমি জেনেছি যে উনি (ডমিঙ্গো) নাকি প্রধান নির্বাহীকে ই-মেইল করেছেন।’

তবে সেই ই-মেইলেও যে অনুশীলনের সূচি বদলাচ্ছে না, সেটির নিশ্চয়তাও দিয়ে রাখলেন আকরাম, ‘এমন নয় যে আমরা ওনার সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলিনি। কিন্তু তিনি অনুশীলন শিবির শুরু করতে চেয়েছেন ১৬ নভেম্বর থেকে। আর খেলা শুরু ১৯ নভেম্বর। মাত্র তিন দিনের প্রস্তুতিতে পাকিস্তানের মতো দলের বিপক্ষে আপনি খেলতে নামবেন, এটা হয় নাকি?’ ডমিঙ্গোর দাবি যৌক্তিক মনে হয়নি বলেই যে নিজেরা অনুশীলন শিবির শুরুর দিন-তারিখ ঘোষণা করে দিয়েছেন, সেটিও জানাতে ভুললেন না আকরাম, ‘পাকিস্তান যে ছন্দে আছে, তাতে ওরা এই বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল তো অন্তত খেলবেই। এ রকম দলের বিপক্ষে অনুশীলন শিবিরের যে পরিকল্পনা দিয়েছিলেন ডমিঙ্গো, সেটি আমার কাছেই শুধু নয়, বোর্ডে আমার অন্য সহকর্মীদের কাছেও যুক্তিসংগত মনে হয়নি।’

বিশ্বকাপে আসার আগেই বোর্ডের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ আর বেতন, দুটিই বাড়ানোর কথা পাকা করে আসা ডমিঙ্গোর পায়ের নিচের শক্ত মাটিও তাতে এখন অনেকটা নরম হয়ে গেল। দলের পারফরম্যান্সের সঙ্গে যে ওঠা-নামা করে তাঁর গুরুত্বও!

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ দলকে জানুয়ারি থেকে তাদের সীমিত ওভারের ক্রিকেটে পুনরায় শুরু করতে দেখা যায় এবং একই সময়ে খুব ভালো পারফরম্যান্স করার সময় ইতিমধ্যে চারটি দ্বিপাক্ষিক সিরিজের জন্য যোগ দিয়েছিল। বাংলাদেশ ক্রিকেট দল এশিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং বড় ধরনের ক্রিকেট দলের দেশ হিসেবে আবির্ভূত হওয়ার জন্য বছরের পর বছর ধরে যথেষ্ট কাজ করেছে। তারা স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে তাদের ২০২১ বিশ্বকাপ অভি’যান শুরু করেছে। বাংলাদেশের টাইগাররা কোয়ালিফাইং রাউন্ডে বি গ্রুপে রাখা সবচেয়ে অভিজ্ঞ দলগুলোর মধ্যে একটি।

বাংলাদেশ এই বছরের শুরু থেকে কিছু ভাল মানের টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট খেলছে এবং এখন পর্যন্ত ১৮টি আন্তর্জাতিক খেলার মধ্যে তারা ৫৫-এর বেশি জয়ের শতাংশ সহ দশটিতে জিততে সক্ষম হয়েছে। গত রোববার স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে মাত্র ৬ রানের ব্যবধানে হারের মুখে পড়ে বাংলাদেশ। এটি একটি পরাজয় ছিল এবং এর পরে, টাইগাররা ওমানের বিপক্ষে জয় নিয়ে বাউন্স ব্যাক করেছিল।

 

 

 

 

 

 

About

Check Also

সাকিব ইস্যুতে বাংলাদেশকে ‘নিষিদ্ধ’ করতে পারে আইসিসি

সাকিব আল হাসানকে দেশের মাটিতে শেষ টেস্ট খেলার সুযোগ দেওয়ার দাবিতে তার ভক্তরা নানা কর্মসূচি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *