সারা দেশে বিভিন্ন সময় যাত্রীরা দুর্ঘটনার শিকার হয়ে থাকেন সড়ক পথের পাশাপাশি রেল পথেও দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। সম্প্রতি দেখে গিয়েছে ট্রেন এবং মাইক্রোবাসের সংঘর্ষতে না ফেরার দেশে চলে গিয়েছে অনেকে। সিগনাল না মেনে গাড়ি চালানো এবং চালকের অদক্ষতা সহ নানা কারনে দেশে এই ধরনের ঘটনা ঘটছে প্রতিনিয়ত।
সাম্প্রতিক রেল দুর্ঘটনা প্রসঙ্গে রেলমন্ত্রী মো. নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, ট্রেন কখনো কাউকে ধাক্কা দেয় না। অন্যরা (বিভিন্ন যানবাহন) এসে ট্রেনকে ধাক্কা দেয়। ট্রেন ঠেলে কেউ দুর্ঘটনা ঘটালে তার দায় কি রেলের? কারণ ট্রেন তার নিজস্ব পথে চলে। একটি ট্রেন কখনো অন্যের পথে চলে না। অন্যরা পরিবর্তে রেলপথের উপর দিয়ে রাস্তা তৈরি করে। তাই তাদের দায়িত্ব জনগণকে নিরাপত্তা দেওয়া।
সোমবার (১ আগস্ট) সকাল ১১টায় গোপালগঞ্জ রেলস্টেশনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ভ্রমণ রেলওয়ে জাদুঘর দেশব্যাপী প্রদর্শনীর উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
এদিকে চট্টগ্রামের মিরসরাই, হাটহাজারীতে ট্রেন-মাইক্রোবাস দুর্ঘটনায় ১১ যুবকের মৃত্যুতে তিনি শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন। এরপর তিনি ফিতা কেটে জাদুঘরটি খুলে ঘুরে দেখেন। গোপালগঞ্জ রেলস্টেশনে এই জাদুঘরটি আগামী ৫ আগস্ট পর্যন্ত সাধারণ জনগণ ও শিক্ষার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
মন্ত্রী বলেন, রেলওয়েতে ব্যারিকেড বা গেট দেওয়া হয় অন্যদের নিরাপত্তা না দিতে, কেউ যাতে রেলকে অনিরাপদ করতে না পারে, শুধু রেলওয়ের নিরাপত্তার জন্যই এসব গেট দেওয়া হয়। যারা রেললাইনে যাতায়াত করেন তাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে। কারণ ট্রেন চলার সময় ১৪৪ ধারা বলবৎ থাকে। ১৪৪ ধারা লঙ্ঘন করে কেউ লাইনে উঠলে অপরাধ তার, ট্রেনের নয়। ট্রেন একটি বড় বাহন। তাই অনেকে না বুঝে রেলকে দায়ী করেন। ট্রেন যদি নিজের লাইন ছেড়ে অন্যের বাড়িতে পড়ে, তাহলে ট্রেন দুর্ঘটনা হবে। এর দায়ভার রেলওয়ে নেবে। তাই রেল দুর্ঘটনা রোধে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। রেলওয়েকে অযথা দোষারোপ করে সমস্যার সমাধান হবে না বলে জানান মন্ত্রী।
রেলমন্ত্রী আরও বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে রেলের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। বঙ্গবন্ধু রেলওয়ে সংস্কারের উদ্যোগ নেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর রেলপথ সংকুচিত হয়। সুষম যোগাযোগ ব্যবস্থা ছাড়া দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। যে দেশ যত উন্নত, সে দেশের রেলপথ তত উন্নত। তাই বঙ্গবন্ধুর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রেলওয়ে পুনর্গঠনে আলাদা মন্ত্রণালয় গঠন করেন। রেলপথের উন্নয়নে নতুন পথ তৈরি করেছে রেলপথ মন্ত্রণালয়।
জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানার সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন রেলওয়ের মহাপরিচালক ধীরেন্দ্রনাথ মজুমদার, পুলিশ সুপার আয়েশা সুলতানা, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব আলী খান প্রমুখ। এসময় রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি চট্টগ্রামে ঘটে গেছে দুঃখজনক একটি ঘটনা, সারা দেশে এই ঘটনা নিয়ে ব্যপকভাবে চলছে আলোচনা এবং এই ঘটনার জন্য কে বা কারা প্রতক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে দায়ি তাদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছেন অনেকে। ট্রেন এবং মাইক্রোর এই দুর্ঘটনায় ঝরে গেছে ১১ জনের প্রান।