কোচিং থেকে শিক্ষকদের উদ্যেগে আয়োজিত শিক্ষার্থীদের নিয়ে ভ্রমনে গিয়ে জীবনের ইতি টানলেন ১১ শিক্ষার্থী। প্রয়াত ১১ জনই একি এলাকার বাসিন্দা। এই ঘটনায় উল্লেখিত স্থানে দায়িত্বরত গেটকিপারকে ঘটনার জন্য প্রাথমিকভাবে দায়ী করা হচ্ছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে অভিযুক্ত গেটকিপারকে আটক করেছে পুলিশ।
চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে লেভেল ক্রসিংয়ে একটি পর্যটক মিনিবাস ট্রেনের ধাক্কায় ১১ যাত্রী প্রয়াত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত আরও কয়েক জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে উপজেলার খৈয়াছড়া ঝর্ণা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনার কবলে পড়া মিনিবাসে ছিলেন হাটহাজারীর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র তানভীর হাসান হৃদয়। তিনি বেঁচে গেলেও আহত হয়ে বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তবে এই দুর্ঘটনায় তিনি তার ১১ সহযাত্রীর সবাইকে হারিয়েছেন। হাসপাতালের তানভীর হাসান হৃদয় জানান, তিনি আমানবাজারে আরএন্ডজে প্রাইভেট কেয়ার নামের একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে পড়াশোনা করতেন। সেখান থেকে শুক্রবার সকালে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নিয়ে মিনিবাসে করে খৈয়াছড়া ঝর্ণার দিকে রওনা হয়। ফেরার পথে দুপুর দেড়টার দিকে মিরসরাই বার টাকিয়া রেলস্টেশন এলাকায় দুর্ঘটনার কবলে পড়েন তারা। হৃদয় আরও বলেন, গাড়িতে চালকসহ আমরা ১৫ জন ছিলাম।
তাদের মধ্যে আমাদের কোচিং শিক্ষক জিসান, রিদওয়ান, রাকিব এবং সজিব স্যার ছিলেন। আমি গাড়িতে ঘুমালাম। কখন বা কিভাবে দুর্ঘটনা ঘটেছে আমার মনে নেই। ঘটনার পর তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন। মিরসরাই থানার এসআই সৈয়দ আহমেদ জানান, ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া মহানগর প্রভাতীর ধাক্কায় ১১ মিনিবাসের যাত্রী প্রয়াত হয়েছেন। চট্টগ্রাম রেলওয়ে পুলিশের পুলিশ সুপার হাসান চৌধুরী গনমাধ্যকে বলেন, ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী একটি ট্রেন ও মিনিবাসের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। ১১ জন প্রয়াত হওয়ার খবর শুনেছি। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, খৈয়াছড়া ঝর্ণা রিসোর্ট থেকে ফেরার পথে বার টাকিয়া রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় ট্রেনটি ধাক্কা দেয়। মিনিবাসে ১৫ জন যাত্রী ছিল। তাদের মধ্যে ১১ জন ঘটনাস্থলেই মারা যান। তিনজন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আরেকজন সুস্থ, ট্রেনের ধাক্কায় লাফ দিয়ে মাটিতে পড়ে যায়। রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের পরিবহন কর্মকর্তা আনসার আলী জানান, ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী পর্যটকবাহী একটি মিনিবাস লেভেল ক্রসিং পার হওয়ার আগেই লাইনে উঠে যায়। সংঘর্ষের পরে, মিনিবাসটি ট্রেনের ইঞ্জিনের সাথে আটকে যায়, এই অবস্থায় ট্রেনটি মিনিবাসটিকে প্রায় ১ কিলোমিটার টেনে থামিয়ে দেয়।
উল্লেখ্য, ট্রেনের সাথে মাইক্রোবাসের ধাক্কা লাগার ঘটনায় বেঁচে যাওয়া যাত্রীদের ভিতরে একজন ঘটনার বিস্তারিত জানালেন। ঘটনার সময়ে উক্তস্থানের কর্তব্যরত গেইটকিপার সেখানে ঘটনার সময়ে উপস্থিত ছিলেন না। এমনকি সেখানে তেমন কোন সতর্ক করার মতোও কিছু ছিল না। থাকলে হয়তো এমন একটা দুর্ঘটনার হাত থেকে এতগুলো প্রাণ বেঁচে যেত বলে জানিয়েছেন স্থানীয় প্রতক্ষ্যদর্শীরা।